প্রতীকী চিত্র।
নিজের চায়ের দোকান বন্ধ করে রাতের দিকে বাড়ি ফিরছিলেন বছর পঁয়ত্রিশের মহিলা। সঙ্গে ছিলেন শ্বশুর-শাশুড়ি। অভিযোগ, হঠাৎই সেখানে হাজির হন স্থানীয় পঞ্চায়েতের মহিলা প্রধান-সহ কয়েক জন। মহিলাকে ধরে ফেলে পেটাতে থাকে সকলে। মহিলার অভিযোগ, তাঁর যৌনাঙ্গে লাঠি ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়িকেও রেয়াত করেনি হামলাকারীরা। মারধরে জখম হন তাঁরাও।
বৃহস্পতিবার কুলতলির মৈপীঠ কোস্টাল থানার বিনোদপুর গ্রামের এই ঘটনায় অভিযোগ উঠেছে যুব তৃণমূলের কয়েক জনের দিকে। প্রধানও শাসক দলের। তাঁর মদতেই হামলা চলেছে বলে অভিযোগ। মহিলার পরিবার এসইউসি-র সক্রিয় কর্মী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এসইউসি করি বলেই ওরা হামলা করেছে। হামলাকারীদের মধ্যে প্রধান-সহ কয়েক জন মহিলা ছিল। কয়েক জনের মুখ ঢাকা ছিল বলে চিনতে পারিনি। যে ক’জনকে চিনতে পেরেছি, তাদের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’’
ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ এসে উদ্ধার করে তিন জনকে। তাঁদের চিকিৎসা হয়েছে জয়নগর গ্রামীণ হাসপাতালে। ঘটনার তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: অমিত খুনের রায়ের কপি নিল সিআইডি
এ দিকে, অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে শুক্রবার সকালে মৈপীঠ কোস্টাল থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান এসইউসি কর্মীরা। অভিযুক্তদের নামে পোস্টার ছাপিয়ে সাঁটানো হয়েছে এলাকায়।
হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে মৈপীঠ-বৈকুণ্ঠপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান নমিতা জানার দাবি, ‘‘এটা কোনও রাজনৈতিক ঘটনাই নয়। আমাদের দলের কেউ জড়িতও নয়। ওই মহিলা অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট। সেখানে টাকা রেখে ফেরত না পেয়ে গ্রামের কিছু মহিলা হামলা চালিয়ে থাকতে পারেন।’’ হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে যুব তৃণমূলের কুলতলি ব্লক সভাপতি গণেশ মণ্ডলের আবার অভিযোগ, এসইউসি-র মারে এ দিন তাঁদের কয়েক জন জখম হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভারতী ঘনিষ্ঠ পুলিশ কর্তার বাড়িতে সিআইডি তল্লাশি
আক্রান্ত মহিলার বক্তব্য, তিনি অর্থলগ্নি সংস্থার এজেন্ট ছিলেন ঠিকই। কিন্তু টাকা ফেরত চেয়ে কেউ হামলা করেনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের এলাকায় বিরোধী দলের বেশির ভাগই এখন যুব তৃণমূলে নাম লিখিয়েছে। আমাদের পরিবার এসইউসি করে। সে জন্যই হামলা হয়েছে।’’
এলাকায় এসইউসি-র প্রভাব ভালই। গ্রাম পঞ্চায়েতে ১৯টি আসনের মধ্যে এ বার ১১টিতেই জয়ী হয়েছিল তারা। একটি মাত্র আসন পেয়েছিল তৃণমূল। ৭টি আসনে জয়ী হয় সিপিএম। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোটের পরে এসইউসি-র ২ জন এবং সিপিএমের সব পঞ্চায়েত সদস্য যোগ দেন তৃণমূলে। এ ভাবেই বোর্ড গড়ে তৃণমূল।
২০ তারিখ ছিল পঞ্চায়েতের উপসমিতির ভোট। সেখানে অবশ্য ৪টি আসনের সব ক’টি আসন ধরে রেখেছে এসইউসি।
এর পর থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বাড়ছিল। স্থানীয় এসইউসি নেতা সুদর্শন মান্নার অভিযোগ, বুধবার রাতে তাঁর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা-গুলি ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। সুদর্শনের কথায়, ‘‘উপসমিতির নির্বাচনে হেরে গিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকেই এসইউসি কর্মীদের উপরে অত্যাচার শুরু করেছে ওরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy