জলবায়ু পরিবর্তন এবং বায়ুদূষণের কথা মাথায় রেখে ধীরে ধীরে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমাচ্ছে সরকার। এই অবস্থায় ঘোর সঙ্কটে পড়েছেন ডিজ়েল গাড়ির মালিকেরা। এখনই সেটা বিক্রি করে বৈদ্যুতিন গাড়ি বা ইভি (ইলেকট্রিক ভেহিকেল) কিনে ফেলা ভাল? না কি আরও কয়েক বছর দিব্যি ডিজ়েল গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন তাঁরা? আনন্দবাজার ডট কমের প্রতিবেদনে রইল এই প্রশ্নের উত্তর।
বিশেষজ্ঞদের দাবি, ডিজ়েল গাড়ি পুরোপুরি বাতিলের সময় এখনও আসেনি। কারণ, এর বেশ কিছু বিশেষ সুবিধা রয়েছে। প্রথমত, লম্বা দূরত্ব পাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে পেট্রল, কমপ্রেসড ন্যাচরাল গ্যাস বা সিএনজ়ি বা ব্যাটারিচালিত গাড়ির তুলনায় ডিজ়েল ইঞ্জিনের চার চাকা অনেক বেশি কার্যকর। হাইওয়েতে এর জুড়ি মেলা ভার। শুধু তা-ই নয়, বাকি গাড়িগুলির তুলনায় ডিজ়েল গাড়ির মাইলেজ সব সময়েই বেশি।
দ্বিতীয়ত, পাহাড়ি রাস্তায় সর্বাধিক সক্ষমতা দেখিয়ে থাকে ডিজ়েল গাড়ি। যাত্রীবোঝাই অবস্থায় ওজন বেড়ে গেলেও অনায়াসেই এর ইঞ্জিন খাড়াই রাস্তা বেয়ে উপরের দিকে উঠতে পারে। কারণ, কোনও কিছুকে টেনে তোলার ক্ষমতা পেট্রলচালিত ইঞ্জিনের তুলনায় ডিজ়েলচালিত ইঞ্জিনের কয়েক গুণ বেশি থাকে।
তৃতীয়ত, দামের দিক থেকে পেট্রলের তুলনায় ডিজ়েল সব সময় সস্তা। এর ফলে জ্বালানির পিছনে ডিজ়েল গাড়ির মালিককে অনেক কম খরচ করতে হয়। তবে ইঞ্জিনের আওয়াজ পেট্রলচালিত গাড়ির তুলনায় এতে বেশি। এর জন্য চালক এবং গাড়ির ভিতরে থাকা যাত্রীদের প্রবল অস্বস্তি হতে পারে।
অনেকে মনে করেন ডিজ়েল গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ অনেকটা বেশি। সেটা কিন্তু একেবারেই নয়। বর্তমানে প্রযুক্তিগত উন্নতির জেরে এই দুই ধরনের গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের খরচ প্রায় সমান হয়ে গিয়েছে। ডিজ়েল গাড়ির দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি। তবে বিশ্লেষকদের দাবি, বর্তমানে পেট্রল এবং ডিজ়েল— দু’টি গাড়িতেই সমান বায়ুদূষণ হয়ে থাকে। তাই সরকারি পুরোপুরি বাতিল ঘোষণা না করা পর্যন্ত ডিজ়েল গাড়ি যে স্বমহিমায় বাজারে থেকে যাবে, তা বলাই বাহুল্য।