তেল ছাড়া মুচমুচে ভাজাভুজি রান্না করতে চান? তা হলে অবশ্যই রান্নাঘরে থাকতে হবে একটা এয়ার ফ্রায়ার। যদিও অনেকের অভিযোগ, এতে সুবিধার চেয়ে অসুবিধা অনেক বেশি। উদাহরণ হিসাবে প্রথমেই বিদ্যুতের বিলের কথা বলা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, এয়ার ফ্রায়ারের জন্য ১,২০০ থেকে দু’হাজার ওয়াট অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে। ফলে মাসের শেষে বিল দেখে আঁতকে ওঠার মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়া একেবারেই আশ্চর্যের নয়।
দ্বিতীয়ত, এয়ার ফ্রায়ারের ভিতরে থাকে একটি ননস্টিক কোটিং, যেটা আদপে তৈরি ট্যাফলন দিয়ে। এটার জন্যেই অনেক বেশি তাপ উৎপন্ন করতে পারে ওই যন্ত্র। কিন্তু, সমস্যা হল এই ট্যাফলন কোটিং ভাল না হলে কিছু দিন ব্যবহারের পর এয়ার ফ্রায়ারের গা থেকে ধীরে ধীরে তা খসে পড়তে থাকে। এর দ্বিমুখী বিপদ রয়েছে। ননস্টিক কোটিং যত খসে পড়বে, ততই দ্রুত খারাপ হতে থাকবে এয়ার ফ্রায়ার। তা ছাড়া খসে পড়া কোটিং খাবারে মিশে যাওয়া স্বাস্থ্যের জন্যে একেবারেই ভাল নয়।
এয়ার ফ্রায়ার দিয়ে বেশি ক্ষণ রান্না করলে যন্ত্রটির ‘ওভার হিট’ বা মাত্রাতিরিক্ত গরম হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে নিজের থেকেই কিছু ক্ষণের জন্য কাজ বন্ধ করে দেয় সেটি। অর্থাৎ, এর সাহায্যে একটানা রান্না করা অসম্ভব, যেটা বেশ বিরক্তিকর। তা ছাড়া বার বার থেমে থেমে রান্না করলে স্বাদের দিক থেকে যে একটা কৃত্রিমতা আসবে, তা বলাই বাহুল্য।
একটি উদাহরণের সাহায্যে বিষয়টি বুঝে নেওয়া যেতে পারে। ধরা যাক, কোনও ব্যক্তি এয়ার ফ্রায়ারে চিকেন উইংস বা পরোটা তৈরি করলেন। দু’টি ক্ষেত্রেই খাবারের ভিতরটা থাকবে শুকনো এবং বাইরেটা শক্ত। শুধু তা-ই নয়, কারও ক্ষেত্রে আবার সেটা আগের রাতে ফ্রিজ়ে রাখা খাবার বলে মনে হওয়াও আশ্চর্যের নয়।
এ ছাড়া এয়ার ফ্রায়ারে রান্না করলে সারা ঘরে মুরগির মাংস বা মাছের গন্ধ ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ, সংশ্লিষ্ট যন্ত্রটির ভিতরের চেম্বারে গরম বাতাসকে ফ্যান দিয়ে ঘোরানো হয়। সেটাই সারা ঘরে ছড়িয়ে দেয় খাবারের গন্ধ। এয়ার ফ্রায়ারের ফিল্টার পুরনো বা খারাপ হয়ে গিয়ে থাকলে তাতে রান্না করা একরকম অসম্ভব। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রটি থেকে বেরিয়ে আসা কটু গন্ধে বাড়িতে থাকা দায় হয়ে উঠতে পারে।
এয়ার ফ্রায়ারের আরও একটা অসুবিধা হল এতে খাবার রি-হিট বা গরম করা যায় না। দ্বিতীয় বার কোনও খাবার এই যন্ত্রের মাধ্যমে গরম করলে সেটা এতটাই শুষ্ক হয়ে ওঠে যে, কেউই সেটা মুখে তুলতে পারবেন না। আর তাই অনেকেই এয়ার ফ্রায়ারের চেয়ে ওটিজি মেশিনে রান্না করতে বেশি পছন্দ করেন।