আর ৫জি নয়। এ বার ৬জি প্রযুক্তির ইন্টারনেট পরিষেবাকে ভারতের বাজারে ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগী হচ্ছে জিয়ো। এ দেশের ধনকুবের শিল্পপতি মুকেশ অম্বানীর এই সংস্থাটি বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম ডেটা অপারেটর হিসাবে স্বীকৃত। প্রতি মাসে ১৭ এক্সাবাইটের বেশি ডেটা ট্রাফিক বহন করে থাকে জিয়ো, যেটা ভারতের ওয়্যারলেস ডেটা ট্রাফিকের ৬০ শতাংশ।
সম্প্রতি গত আর্থিক বছরের (পড়ুন ২০২৪-’২৫) বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশ করে মুকেশের মূল সংস্থা রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ় লিমিটেড। সেখানেই জিয়ো ৬জি পরিষেবার ইন্টারনেট চালু করতে চলেছে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। বার্ষিক রিপোর্টে রিলায়্যান্স জানিয়েছে, ভবিষ্যতের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে জিয়ো। ৬জি প্রযুক্তির গবেষণা এবং তাকে তৈরি করার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। এর মাধ্যমে ইন্টারনেট পরিষেবার ক্ষেত্রে ‘বিশ্বনেতা’ হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে রিলায়্যান্স জিয়োর।
অম্বানীদের টেলি পরিষেবা সংস্থাটির দাবি, গত এক দশকের কম সময়ের মধ্যে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে এসেছে বড় বদল। ২০১৬ সালের আগে ৪জি নেটওয়ার্ক এনেছিল তারা। ২০১৮ সালে ফাইবার-টু-দ্য-হোম, ২০২২ সালে স্বতন্ত্র ৫জি এবং ২০২৪ সালে ফিক্সড ওয়্যারলেস অ্যাক্সেস প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারতের ইন্টারনেট পরিষেবায় বড় বদল আনে জিয়ো। সেখানে এ বার ৬জি প্রযুক্তি আনার তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছে তারা।
সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জিয়োর প্রযুক্তিগত দিকটিকে আরও শক্তিশালী করতে টেরেস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক তৈরির দিকে জোর দেওয়া হয়েছে। একটি নিজস্ব কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক প্ল্যাটফর্মও তৈরি করছে তারা। এ ছাড়া ধনকুবের মার্কিন শিল্পপতি ইলন মাস্কের সংস্থা স্টারলিঙ্কের সঙ্গে চুক্তি করেছে অম্বানীদের টেলিকম সংস্থা। সংশ্লিষ্ট কোম্পানিটি কিছু দিনের মধ্যেই এ দেশে দ্রুত গতির ব্রড ব্যান্ড পরিষেবা চালু করবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত জিয়োর ৫জি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১৯ কোটি ১০ লক্ষ। যেটা অম্বানীদের টেলিকম সংস্থাটির ওয়্যারলেস ডেটা ট্রাফিকের প্রায় ৪৫ শতাংশ বলে জানা গিয়েছে। এ বছরের মার্চ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ বাড়িতে ইন্টারনেট পরিষেবা দিতে সক্ষম হয়েছে জিয়ো। এই সংখ্যা তাদের নতুন সংযোজনের ৮৫ শতাংশ।
গত অর্থবর্ষের রিপোর্টে রিলায়্যান্স জানিয়েছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে তাঁদের। ২০২৯-’৩০ সালের মধ্যে ১০০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। আর ২০৩৫ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষ হওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে মুকেশের সংস্থা।
এর পাশাপাশি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের (আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স) বাস্তুতন্ত্র ভারতের মাটিতে গড়ে তুলতে একটি সরকারি প্রকল্পে সক্রিয় ভাবে কাজ করছে রিলায়্যান্স জিয়ো। এর নাম ‘ইন্ডিয়াএআই মিশন’। এতে ডেটা বা তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য বিপুল শক্তির ব্যবহার হবে বলে জানা গিয়েছে।