ইউনেস্কোর স্বীকৃতি মিলেছে, এমন জায়গায় ছুটি কাটাতে যাবেন না কি! ছবি: সংগৃহীত।
কলকাতা-সহ পশ্চিমবঙ্গ জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে প্রাকৃতিক ও ঐতিহাসিক স্থাপত্যের সমৃদ্ধশালী ঐতিহ্য। স্থান, কাল ও গুরুত্বের নিরিখে তারই মধ্যে তিনটি স্থান ঠাঁই পেয়েছে বিশ্ব হেরিটেজের মানচিত্রে। ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর তালিকায় স্থান করে নিয়েছে এ রাজ্যের টয় ট্রেন, জঙ্গল-সহ আরও একটি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র।
নিজের রাজ্যের গর্বের জায়গাগুলি সেগুলি ঘুরেছেন কি? এখনও ঘোরা না হলে বরং সময়-সুযোগ করে বেরিয়ে পড়ুন।
সুন্দরবন
সুন্দরবন বললেই মাথায় আসে বিশাল বপুল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। কী তার হুঙ্কার! বাঘের ডেরা সুন্দরবন রয়েছে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর তালিকায়। ১৯৮৭ সালে এই ম্যানগ্রোভ অরণ্য বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা পায়। এখানেই বাস অসংখ্য বন্যপ্রাণের। হরিণ, কুমীরেরও ঠিকানা এই বাদাবন। এই জঙ্গলের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদ। সুন্দরী গাছের নাম থেকেই এই জঙ্গলের নাম সুন্দরবন। বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত এই বিশাল বনভূমির সৌন্দর্য, বাঘের টানেই এখানে ছুটে আসেন পর্যটকরা। এখানে রয়েছে কুমীর প্রকল্পও।
বিস্তীর্ণ এই বনভূমিতে যাওয়ার একাধিক প্রবেশদ্বার রয়েছে। ক্যানিং দিয়ে সোনাখালি, ধামাখলি হয়ে যাওয়া যায়। এ ছাড়া নামখানা, রায়দিঘি, বাসন্তী হয়েও ঝড়খালি পৌঁছনো যায়।
কী কী দেখবেন?
সুন্দরবনের জঙ্গল পরিদর্শনের সবচেয়ে সহজ উপায় জলপথ। কাকদ্বীপ, ঝড়খালি-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নৌকো করে জঙ্গলের গভীরে প্রবেশ করা যায়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের পাশপাশি ঘুরে নেওয়া যায় ঝড়খালি ব্যাঘ্র পুনর্বাসন কেন্দ্র, সজনেখালি বার্ড অভয়ারণ্য। ঘুরে নেওয়া যায়, সুন্দরবনের বিভিন্ন সৈকত ও গ্রাম।
দার্জিলিঙের টয় ট্রেন
দার্জিলিং বললে তিনটি ছবি ভেসে ওঠে টয় ট্রেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা ও ধূমায়িত দার্জিলিং চা। দার্জিলিঙের টয় ট্রেন ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এ তকমা পেয়েছে। উনিশ শতকে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে টয় ট্রেনের জন্ম। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত তার যাত্রাপথ। ১৮৮১ সালে প্রথম দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন ছুটেছিল। সেই টয় ট্রেনের কদর এখনও কমেনি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাতে জুড়েছে ভিস্তা ডোম কোচ। আধুনিক হয়েছে ট্রেন। পাশাপাশি, টয় ট্রেন ছুটছে ভারতেরও আরও কয়েকটি পাহাড়ি পথে। ১৯৯৯-এর ২ ডিসেম্বর ইউনেস্কো দার্জিলিং থেকে ঘুম-এর মধ্যে চলা জয় রাইডকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’-এর তকমা দেয়।
কী কী দেখবেন?
ভিস্তা ডোম কোচের আকর্ষণে পর্যটকরা ফের টয় ট্রেন মুখী। শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন চলে। চাইলে এর মধ্যবর্তী কোনও গন্তব্য থেকেও ট্রেনে চাপতে পারেন। দার্জিলিং জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র। এখানে ঘোরার জন্য রয়েছে টাইগার হিল, ম্যাল, বাতাসিয়া লুপ, রক গার্ডেন, চিড়িয়াখানা-সহ অনেক কিছু।
শান্তিনিকেতন
২০২৩ সালে ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের তালিকায় স্থান পেয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন। এই স্থানের সঙ্গে নাম জড়িয়ে রেয়েছে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরেরও। রবীন্দ্র ভাবনা ও সাহিত্যের ছায়ায় শান্তিনিকেতনের স্থাপত্য, চিত্রকলা ঐতিহ্য স্মারক হিসাবে ইউনেস্কোর শর্ত পূরণ করছে। শান্তিনিকেতনেই রয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়।
কী কী দেখবেন?
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও ঘুরে নেওয়া যায় মিউজ়িয়াম, সোনাঝুরি হাট, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাড়ি, স্থানীয় গ্রাম।
ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসাবে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর ও উত্তরবঙ্গে নেওড়া ভ্যালি জাতীয় উদ্যানের নাম প্রস্তাব করা হলেও, এখনও তা গৃহীত হয়নি। তবে অদূর ভবিষ্যতে এই দু’টিও তালিকায় জুড়তে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy