Advertisement
E-Paper

বাঁকুড়া-পুরুলিয়া ঘুরে নিয়েছেন? পলাশের টানে ঢুঁ মারতে পারেন তিন পড়শি রাজ্যেও

দিগন্তে ফুলের ‘আগুন’ দেখতে চান? ফুটন্ত শিমুল, পলাশের ডালি সাজিয়ে অপেক্ষমাণ প্রকৃতি। শুধু এ রাজ্যেই নয়, বসন্তের রূপ উপভোগে পাড়ি দিতে পারেন বঙ্গের তিন পড়শি রাজ্যে।

ছবি: সংগৃহীত।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৫ ০৯:৫৭
Share
Save

পিচঢালা পথের দু’ধারে ফুটে থাকা ‘আগুন’ রঙা ফুল। প্রকৃতির এমন রূপের সাক্ষী হতে গেলে অপেক্ষা করতে হয় সারাটা বছর। শীত ফুরোলে প্রাণ পায় প্রকৃতি। ধীরে ধীরে গজিয়ে ওঠে নতুন পাতা। বসন্তের আগমনে ফোটে ফুল। বছরভর যে গাছের দিকে ফিরেও চান না কেউ, রাতারাতি সেই গাছের শাখা-প্রশাখাও ফুলের ভারে নুইয়ে যায়, রঙিন হয়ে চারপাশ।

শিমুল, পলাশের রূপ উপভোগ করা যায় ক’টা মাত্র মাসই। সেই রূপ এমনই, যার টানে বেরিয়ে পড়া যায়। ছুটে যাওয়া যায় প্রকৃতির কাছে।

দোলে পলাশের টানে অনেকেই বেছে নিয়েছেন পুরুলিয়া, বাঁকুড়ার বিভিন্ন পর্যটনস্থল। ফুটন্ত পলাশের ‘আগুন’ রূপ সবচেয়ে বেশি উপভোগ্য সেখানেই। তবে শিমুল, পলাশের দেখা মেলে তিন পড়শি রাজ্যেও। পাহাড়, অরণ্য, জলাধার— উপভোগের পাশাপাশি বসন্তের ফুলের দেখা পেতে চাইলে ঘুরে নেবেন কোন কোন জায়গা?

ঝাড়খণ্ড

শিমুল ফোটে ঝাড়খণ্ডের নানা প্রান্তেও। দোলের সময় তাই চলে যেতে পারেন টাটানগর। ঘুরে নিতে পারেন জামশেদপুরের আশপাশ। জামশেদপুর ইস্পাতনগরীর খুবই কাছে র‍য়েছে দলমা পাহাড় এবং অভয়ারণ্য। প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এ যেন এক স্বর্গ। মনোরম পরিবেশ, ঝর্না, বনভূমি এবং বৈচিত্রময় প্রাণীজগৎ এই পাহাড়কে করে তুলেছে ভ্রমণপ্রেমীদের জন্য এক আকর্ষণীয় স্থান। বসন্তে দলমা পাহাড়ের অরণ্যে চাক্ষুষ করতে পারেন পলাশের রূপ।

টাটানগর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরেই কান্দরা। টাটা থেকে ট্রেনও রয়েছে কান্দরা জংশনে পৌঁছোনোর। স্টেশন থেকে ২ কিলোমিটার দূরে বিশ্রামপুর। প্রকৃত অর্থেই এই জায়গা বিশ্রামের জন্য। স্টেশন থেকে বেরিয়ে আদিবাসী গ্রামের মধ্যে দিয়ে পথ এগিয়েছে। নির্ভেজাল প্রকৃতি, গ্রামীণ রূপ ধরা দেবে সে পথে হাঁটলেই। খানিক এগোলে বাড়িঘর ফুরিয়ে গেলে, দোসর হবে পাহাড়। চওড়া রাস্তার দু’পাশে সারি দেওয়া পলাশ গাছ। অযত্নে বেড়ে ওঠা গাছেই বিশ্রামপুর বসন্তে রঙিন হয়ে থাকে।

ঘুরে নিতে পারেন দলমা, মধুপুর-সহ ঝাড়খণ্ডের অনেক জায়গাই।

ঘুরে নিতে পারেন দলমা, মধুপুর-সহ ঝাড়খণ্ডের অনেক জায়গাই। ছবি: সংগৃহীত।

ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য এই সময়ে বেছে নিতে পারেন মধুপুর, গিরিডি, দেওঘরও। এক সময়ে বাঙালির হাওয়াবদলের ঠিকানা ছিল এই জায়গাগুলি। প্রকৃতি যেন এখানে উদারহস্ত। মধুপুরের বু়ড়াই পাহাড়, গিরিডির খান্ডোলি জলাধারের আশপাশে উপভোগ করতে পারেন পলাশের রূপ।

ওড়িশা

শুধু বন্যপ্রাণ নয়, বসন্তের প্রাকৃতিক শোভা দেখতে যেতে পারেন সিমলিপালে।

শুধু বন্যপ্রাণ নয়, বসন্তের প্রাকৃতিক শোভা দেখতে যেতে পারেন সিমলিপালে। ছবি: সংগৃহীত।

সিমলিপালের অরণ্যও ঘুরে নিতে পারেন দোলের ছুটিতে। শোনা যায় ওড়িশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমলিপালের নামকরণ হয়েছিল শিমুল গাছের আধিক্যের জন্য। ১৯৭৯ সালে জাতীয় উদ্যানের তকমা পেলেও ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র হিসাবে পরিচিতি লাভ করে ১৯৮০ সালে। এই জঙ্গলে দেখা মেলে বুনো হাতি, চিতল হরিণ, বুনো খরগোশ, বনবিড়াল, সম্বর, বুনো কাঠবিড়ালি, বুনো শুয়োর, হনুমান এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখির। বরহিপানি এবং ঝারান্দা এই দু’টি ঝর্না ঘুরে নেওয়া যায়। বসন্তে খুব বেশি জলের স্রোত না থাকলেও বর্ষায় এর রূপ হয় দেখার মতো। ওড়িশা অরণ্যাঞ্চলে দেখা মেলে কুসুম নামে এক গাছের। যার সব পাতাই হয় লালচে।

সিমলিপাল ছাড়াও শিমুল, পলাশ, কুসুম গাছ দেখতে ঘুরে নিতে পারেন পঞ্চলিঙ্গেশ্বরের কাছে কুলডিহা অভয়ারণ্যেও। অজস্র পাখি, বন্যপ্রাণী, বুনো হাতির আশ্রয়স্থল এই বনভূমি।

বিহার

বিহারের মুঙ্গের জেলার উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে ভীমবাঁধ অভয়ারণ্য। ঘুরে নেওয়া যায়  সংলগ্ন জলাধারেও।

বিহারের মুঙ্গের জেলার উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে ভীমবাঁধ অভয়ারণ্য। ঘুরে নেওয়া যায় সংলগ্ন জলাধারেও। ছবি: সংগৃহীত।

‘দাদার কীর্তি’, ‘নীহারিকা’–সহ একাধিক ছবির শুটিং হয়েছিল বিহারের শিমুলতলায়। এক সময়ে স্বাস্থ্য ফেরাতে গিরিডি, মধুপুর, শিমুলতলার কদর ছিল বাঙালি মহলে। এখন অবশ্য শিমুলতলা নিয়ে আর বিশেষ উন্মাদনা দেখা যায় না। তবে বসন্তের ছোঁয়ায় এই জনপদ হয়ে ওঠে রঙিন। ফুটে ওঠা শিমুল, পলাশ বদলে দেয় তার রূপ।

বিহারের মুঙ্গের জেলার উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে ভীমবাঁধ অভয়ারণ্য। পাহাড় ঘিরে বেড়ে ওঠা বিস্তীর্ণ বনভূমির মাঝে আগুনরঙা ফুলের সৌন্দর্য মন ভরিয়ে দেবে। জামুই রেলস্টেশন থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে ভীমবাঁধ অগুনতি বন্যপ্রাণী এবং পাখির আশ্রয়স্থল। বনভূমির আশপাশে রয়েছে ছোট ছোট উষ্ণ প্রস্রবণ সীতাকুণ্ড, ঋষিকুণ্ড, রামেশ্বরকুণ্ড। এ ছাড়া রয়েছে খড়্গপুর জলাধার।

Travel Destinations Holi 2025 Palash Flower

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}