বিমান থামল। আর ঠিক তখনই শুরু হয়ে গেল নামার তাড়া। নামবেন সকলেই। কিন্তু কিছু মানুষ রয়েছেন, যাঁদের কিছুতেই তর সয় না। সামনের যাত্রীকে গুঁতো দিয়ে, অভব্য আচরণ করে যেনতেনপ্রকারেন আগে নেমে যাওয়াটাই যেন একমাত্র লক্ষ্য।
এমন যাত্রীদের জন্য এ বার কড়া ‘দাওয়াই’-এর ব্যবস্থা করল তুরস্ক। এই দেশের ডিজিসিএ-র (ডিরেক্টর জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন) তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, সহবতের ধার ধারবেন না যে সব যাত্রী, তাঁদের নামে অভিযোগ এলেই জরিমানা ধার্য হবে। জরিমানার অঙ্ক আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো না হলেও তুরস্কের একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ২,৬০৩ লিরা ব্যক্তি পিছু ধার্য হবে। ভারতীয় মুদ্রায় যার অঙ্ক ৫৭০০ টাকা।
উল্লেখ্য, বিমানের অন্য যাত্রীদের গুঁতো দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করে দ্রুত নেমে যাওয়ার মানসিকতা সম্পন্ন মানুষদের নিয়ে নিন্দা, চর্চা আগেও হয়েছে। এই ধরনের অভব্য আচরণ যাঁরা করেন, ভ্রমণের পরিভাষায় তাঁরা ‘আইল লাইস’ বলে চিহ্নিত। এই ধরনের যাত্রীদের মানসিকতা, আচরণ নিয়ে সমাজমাধ্যমে যতই নিন্দা হোক না কেন, তার পরেও এ নিয়ে উদাসীন অনেকেই।
আরও পড়ুন:
তুরস্কের সিভিল অ্যাভিয়েশনের ডিরেক্টর জেনারেল কেমাল ইয়ুকসেক জানাচ্ছেন, যাত্রীদের সুরক্ষা সংক্রান্ত বিধিভঙ্গের ঘটনা উল্লেখযোগ্য ভাবে বাড়ছে। এক দিকে যাত্রীদের সুরক্ষা এবং একই সঙ্গে মালপত্রের নিরাপত্তা রক্ষা সমীচীন হয়ে পড়ছে। সে কারণেই এমন পদক্ষেপ। বিমানের কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, নিয়মভঙ্গকারী যাত্রীদের সতর্ক করতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।
কাদের ক্ষেত্রে জরিমানা ধার্য হতে পারে?
বিমান অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে তড়িঘড়ি কেউ সিট বেল্ট খুলে উঠে পড়লে, আসনের উপরের লকার থেকে তাড়াহুড়োয় মালপত্র বার করতে গিয়ে সামনের যাত্রীদের আগে বেরোতে না দিলে, বিমান থেকে নামার সময় সহবত না মানলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। নির্দেশিকা অমান্য করার অপরাধে এমন যাত্রীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারেন কর্তৃপক্ষ।
কেন সমস্যা?
পিছনের যাত্রীদের কেউ অতিরিক্ত তাড়াহুড়ো করলে নামার সময় সমস্যায় পড়েন সামনের যাত্রীরা। ‘আইল লাইস’ বলে চিহ্নিতেরা অন্য যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার পরোয়া করেন না। এ নিয়ে প্রায়শই বিমানে যাত্রীদের মধ্যে ঝামেলা লেগে যায়। বিমানযাত্রীদের সুরক্ষার কথা ভেবে এবং অভব্য যাত্রীদের সহবত শেখাতেই এমন ভাবনা তুরস্কের।
বিমানে ওঠানামার সময় কোন নিয়ম মেনে চলা দরকার?
বিমানের দরজার সামনে যে আসন রয়েছে, তার যাত্রীদের আগে বেরোতে দিন। খুব প্রয়োজন বা অতিরিক্ত তাড়া না থাকলে ধৈর্য ধরে একটু অপেক্ষা করলেই সকলের পক্ষে নামা সহজ হবে।