Advertisement
E-Paper

কোমায় থাকা প্রেমিকার জন্য প্রাণপাত, খরচ করেন ২৫ লক্ষ, জ্ঞান ফিরতে সেই প্রেমিকের দিকেই আঙুল তুললেন তরুণী!

সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছর ৩০-এর ওই তরুণীর নাম লিন ইয়িংইং। তিনি লিয়াওনিং প্রদেশের বাসিন্দা। ২০১৩ সালে সমাজমাধ্যমে প্রেমিক লিউ ফেংয়ের সঙ্গে আলাপ হয় লিনের।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:৩৬
Chinese woman wakes from coma and reveals boyfriend is responsible for her condition

দীর্ঘ দিন কোমায় ছিলেন তরুণী। তাঁকে সুস্থ করতে প্রাণপাত করে ফেলেছিলেন প্রেমিক। খরচ করেছিলেন প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু জ্ঞান ফিরতে সেই প্রেমিকের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুললেন তরুণী! জানালেন, প্রেমিকই তাঁকে মারধর করে কোমায় পাঠিয়েছিলেন। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর-পূর্ব চিনে। সে দেশ জুড়ে হইচই ফেলেছে ঘটনাটি। সমাজমাধ্যমেও আলোড়ন পড়েছে।

সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বছর ৩০-এর ওই তরুণীর নাম লিন ইয়িংইং। তিনি লিয়াওনিং প্রদেশের বাসিন্দা। ২০১৩ সালে সমাজমাধ্যমে প্রেমিক লিউ ফেংয়ের সঙ্গে আলাপ হয় লিনের। অনলাইনে হওয়া বন্ধুত্ব শীঘ্রই প্রেমে পরিণত হয়। একসঙ্গে একটি বেকারির দোকান শুরু করারও সিদ্ধান্ত নেন যুগল। কিন্তু এর পরেই সব ওলটপালট হয়ে যায়। ২০১৩ সালের শেষের দিকে, লিনের বাবাকে ফোন করে লিউ জানান যে, দোকানে পড়ে গিয়ে মাথায় চোট পেয়েছে তাঁর মেয়ে।

মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় লিনকে। পরে কোমায় চলে যান তিনি। দু’মাস ধরে লিনের যত্ন নেন লিউ। প্রেমিকাকে খাওয়ানো থেকে অন্তর্বাস বদলানো, সবই নিজের হাতে করতেন তিনি। এমনকি, লিনের চিকিৎসার ব্যয়ভারও নিজের কাঁধে তুলে নেন লিউ। খরচ করেন প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা। চিকিৎসকদের আশঙ্কা ছিল, আর কখনও জ্ঞান ফিরবে না লিনের। অন্য দিকে, বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে লিন-লিউয়ের কাহিনি উঠে আসে। সমাজমাধ্যমে ‘সবচেয়ে নিবেদিতপ্রাণ প্রেমিক’-এর তকমাও পান লিউ।

অন্য দিকে, প্রায় ছ’মাস কোমায় থাকার পর জ্ঞান ফেরে লিনের। কিন্তু হাঁটাচলা বা কথাবার্তা বলার ক্ষমতা হারিয়েছিলেন তিনি। প্রেমিকাকে নিজের আবাসনে নিয়ে যান লিউ। কিন্তু লিনের বাবা-মাকে কিছুতেই মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিচ্ছিলেন না লিউ। অবশেষে প্রেমিকের বাড়ি থেকে লিনকে বা়ড়িতে নিয়ে যান তাঁর বাবা-মা।

২০১৫ সালের এপ্রিলে, লিন কথা বলতে সক্ষম হন। আর তার পরেই তিনি যা বলেন, তাতে চমকে যান তাঁর বাবা-মা। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, দুর্ঘটনা নয়, রুটি পুড়িয়ে ফেলার জন্য লিউই তাঁকে মারধর করেন। ভারী জিনিস দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। আর তার ফলেই কোমায় যান তিনি। জ্ঞান ফেরার পর লিউ তাঁকে এবং তাঁর পরিবারকে খুনের হুমকি দিয়েছিলেন বলেও দাবি লিনের।

লিন আরও দাবি করেন, কোমায় যাওয়ার দিন মারধরের আগেও একাধিক বার তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন লিউ। এক বার মোবাইল গেম নিয়ে তর্কের সময় লিউ তাঁর ফোন ভেঙে বুকে ঘুষি মেরেছিলেন বলেও অভিযোগ তোলেন লিন। মেয়ের কাছ থেকে সে সব শুনে আদালতের দ্বারস্থ হন লিনের বাবা-মা। গা ঢাকা দেন লিউ। এর পর ২০১৬ সালে লিউকে একটি প্রত্যন্ত শহর থেকে গ্রেফতার করা হয়। ইচ্ছাকৃত ভাবে মারধরের জন্য জেল হয় লিউয়ের। আদালতের তরফে তাঁকে লিনের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ৩১ লক্ষ টাকা দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে প্রকাশিত, লিন এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন অনেকটা। হাঁটাচলাও করতে পারছেন। লিনের খবর নতুন করে প্রকাশ্যে আসার পর নেটপাড়ায় হইচই পড়ে গিয়েছে। এক নেটাগরিক মন্তব্য করেছেন, “লিউ একজন দু’মুখো শয়তান ছিল। নারীদের অধিকার লঙ্ঘিত হলে কখনওই লুকোনো উচিত নয়। নিজেদের রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনে আইনের দ্বারস্থ হোন।’’

Bizarre Incident China Boyfriend abuse
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy