সম্প্রতি দশম শ্রেণির এক পড়ুয়ার মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গুজরাতের অহমদাবাদের একটি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে। তার পরেই স্কুলগুলিতে কড়া নজরদারি এবং নিরাপত্তার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। পড়ুয়ারা স্কুলে কী নিয়ে আসে, তা-ও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই পড়ুয়াদের ব্যাগ খুলে খানাতল্লাশি করছে। আর সেই তদারকি চালানোর সময় পড়ুয়াদের ব্যাগ থেকে যে সব জিনিস বেরিয়ে আসছে, তা দেখে চোখ কপালে উঠেছে অনেকের। উঠতে শুরু করছে নানা প্রশ্ন।
আরও পড়ুন:
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি স্কুলে বই এবং টিফিন কৌটো ছাড়া পড়ুয়াদের ব্যাগ থেকে মোবাইল, সিগারেট, বৈদ্যুতিন সিগারেট, মদ, গর্ভনিরোধক বড়ি, ব্লেড, ছুরি, কাঁচি, অশ্লীল বই, এমনকি কন্ডোমও খুঁজে পেয়েছেন শিক্ষকেরা। বিষয়টি অভিভাবকদের জানানোও হয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, অভিভাবকদের একাংশ স্বীকার করেছেন যে সন্তানেরা তাঁদের কথা শোনে না। হাতের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে। আবার অনেক অভিভাবকের দাবি, সন্তানদের ব্যাগ থেকে যা বেরিয়েছে তাতে অন্যায়ের কিছু নেই। এটি তাদের ‘বড় হওয়ার প্রক্রিয়ার একটি অংশ’।
আরও পড়ুন:
গুজরাতের এক স্কুলের অধ্যক্ষ সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘‘এটি আশ্চর্যজনক এবং উদ্বেগজনক। ছাত্রজীবন তাদের স্কুলের গণ্ডির বাইরেও কতটা বিস্তৃত তা বোঝা যাচ্ছে। বই এবং টিফিন কৌটোর পাশাপাশি পড়ুয়াদের ব্যাগে মোবাইল, ট্যাবলেট, লাইটার, সিগারেট, মদ পাওয়া যাচ্ছে।’’ অন্য এক স্কুলের অধ্যক্ষের কথায়, ‘‘আমরা হোয়াইটনার, লিপস্টিক, কাজল, নেইল ফাইলার, ডিয়োডোরেন্ট, গর্ভনিরোধক, এমনকি কন্ডোমও পেয়েছি পড়ুয়াদের ব্যাগ থেকে।’’
একটি স্কুলের এক শিক্ষক জানিয়েছেন, স্কুলের লিখিত অনুমতি ছাড়া ছুরি, কাঁচির মতো জিনিসপত্র স্কুলে পাঠাতে অভিভাবকদের বারণ করা হয়েছে। ওই ধরনের কোনও ধারালো বস্তু ব্যাগ থেকে খুঁজে পাওয়া গেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এক অধ্যক্ষের কথায়, “সন্তানদের ব্যাগে উদ্বেগজনক কোনও বস্তু পাওয়া গেলে তা অভিভাবকদের সঙ্গে সঙ্গে জানানো হচ্ছে। অভিভাবক-শিক্ষক বৈঠক করেও সাবধান করা হচ্ছে। কিছু অভিভাবক স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তাঁদের সন্তানেরা কথা শোনে না। কিছু অভিভাবক আবার কোনও হেলদোল দেখাননি। এগুলিকে বড় হওয়ার অংশ হিসাবে দেখছেন।”
পুরো বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই হইচই পড়েছে নানা মহলে। আলোড়ন শুরু হয়েছে নেটপাড়াতেও। অনেক প্রশ্ন উঠতে শুরু করছে। পড়ুয়াদের বিপথে যাওয়া থেকে আটকাতে অভিভাবক এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও আলোচনা করেছেন অনেকে।