বাবা-মায়ের সঙ্গে মেলিসা। ছবি: সংগৃহীত।
মেয়ের বয়স যখন সবে ২২ মাস তখনই মায়ের কোলছাড়া হয়েছিল সে। তার পর থেকে পুলিশের তদন্ত চলেছে। থেমেও গিয়েছে। কিন্তু মেয়ের খোঁজ বন্ধ করেননি বাবা-মা। ৫১ বছর পর তাঁদের ইচ্ছেপূরণ হল। হারিয়ে যাওয়া মেয়েকে অর্ধ শতকের চেষ্টার পর খুঁজে পেলেন বাবা-মা। হারিয়ে পাওয়া কন্যাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘‘চোখের জল আটকাতেই পারছি না।’’
টেক্সাসের এই ঘটনার শুরু ১৯৭১ সালে। চার সন্তানকে নিয়ে হাইস্মিথদের সুখী পরিবারে হঠাৎই নেমে আসে বিপর্যয়ের অন্ধকার। বাড়ির কনিষ্ঠতম সদস্য ২২ মাসের মেলিসা হাইস্মিথ নিখোঁজ হয়ে যায় আচমকাই। অনেক খুঁজেও তার সন্ধান পায় না পরিবারটি। উল্টে একটা সময় তদন্তকারীদের সন্দেহ গিয়ে পড়ে মেলিসার মায়ের উপরেই। তারা বলেন, মেলিসার মা আল্টা আপানটেনসো মেয়েকে খুন করে তা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। যদিও পরিবারটি প্রথম দিন থেকেই বলে এসেছে মেলিসার সঙ্গে তাঁর পরিচারিকার খোঁজও পাচ্ছেন না তাঁরা। তাঁরা নিশ্চিত ছিলেন তিনিই এই কাণ্ডটি ঘটিয়েছেন। তবে এসবের তথ্য জানার পরেও খোঁজ মেলেনি মেলিসার। একটা সময় হাল ছেড়ে দেন তদন্তকারীরাও। কিন্তু মেলিসার পরিবার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল।
ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মেয়ের সম্পর্কে তথ্য তলাশ করতে শুরু করেছিল তারা। একজন জিন বিশারদের সাহায্যও নিয়েছিল এ ব্যাপারে। শেষে মেলিসার সন্তানের ডিএনএর সঙ্গে পাওয়া যায় মিল। তাঁরা জানতে পারেন যে সন্তানকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। সেই মেলিসা নিজেই এখন দুই সন্তানের মা। মেলিসার সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁদের। সম্প্রতি একটি চার্চে তিন বোন এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে মুখোমুখি দেখা হয় মেলিসা। এখন অবশ্য তিনি মেলিয়া। ওই নামেই বড় হয়েছেন। মাথার সোনালি চুল কালো হয়েছে। গোলগাল গড়নও নেই আর। তবে বাবা-মায়ের কাছে আসতেই তিনি জড়িয়ে ধরেন তাঁদের দু’হাতে। গির্জায় তৈরি হয় এক অদ্ভুত মিলন মুহূর্ত। দেখা যায় মেলিসাকে পাশ থেকে জড়িয়ে ধরেছেন তাঁর বোনেরাও। তাঁরাই বলেন, এখনও ভাবতে পারছি না ওকে আবার খুঁজে পেয়েছি আমরা। চোখের জল থামতেই চাইছে না এখনও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy