কায়াকিং করতে গিয়ে ‘নিখোঁজ’ হয়েছিলেন তরুণ। একটি উল্টে যাওয়া কায়াক এবং লাইফজ্যাকেট উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশ ও তাঁর পরিবারের ধারণা হয় জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তরুণের। আমেরিকার উইসকনসিনের বাসিন্দা রায়ান বোর্গওয়ার্ড নামের সেই তরুণ নিখোঁজ ছিলেন ৯০ দিন। তার পর জানা যায় আসলে তিনি মারা যাননি। কেবল মৃতের ভান করে ছিলেন মাত্র।
অনলাইনে আলাপ হওয়া প্রেমিকার সঙ্গে জীবন কাটানোর জন্য নিজেকে ‘মেরে ফেলা’র ফন্দি এঁটেছিলেন রায়ান। গত অগস্টে রায়ান স্ত্রীকে জানান যে তিনি গ্রিন লেকে কায়াকিং করতে যাচ্ছেন। সে দিনের পর তাঁর আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পুলিশ কোনও দেহও উদ্ধার করতে পারেনি। ধরে নেওয়া হয়েছিল রায়ান হ্রদের গভীর জলে ডুবে গিয়েছেন। পরিবারের লোকেরা তাঁকে মৃত বলে ধরে নিয়েছিলেন। প্রায় তিন মাস ধরে রায়ান অন্তর্ধান তদন্ত চালায় পুলিশ। সেই তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আরও পড়ুন:
অনুসন্ধানে পুলিশ জানতে পারে রায়ানের নামে একটি নতুন পাসপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার আগে জীবন বিমা কিনেছিলেন তিনি। কী ভাবে উধাও হওয়া যায় তা নিয়ে গবেষণাও করেন তিনি। ব্রাউজ়ারে সেই প্রমাণও মিলেছে। কী ভাবে বিদেশি ব্যাঙ্কে সঞ্চয় স্থানান্তর করা যায় সে নিয়েও ইন্টারনেটে অনুসন্ধান করেন রায়ান। প্রেমিকার সঙ্গে উজবেকিস্তানে পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।
পুলিশ যখন তাঁকে খুঁজে পায় তখন রায়ান পালিয়ে জর্জিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। পরে তাঁকে আমেরিকায় ফিরিয়ে আনা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়ে। আদালতে মামলা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত তাঁকে ৮৯ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। কারণ রায়ান ঠিক ৮৯ দিন ধরেই মৃতের ভান করে প্রতারণা করেছিলেন। ফিরে আসার পর রায়ানের স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদের মামলা শুরু করেন। রায়ানের জন্য অনুসন্ধান আট সপ্তাহ ধরে চলে। সেই কাজে কমপক্ষে ৫০ হাজার ডলার খরচ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই কারণে কারাদণ্ড ছাড়াও রায়ানকে ৩০ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। রায়ান আদালতে দাবি করেছেন, তিনি তাঁর প্রিয়জনদের কষ্ট দেওয়ার জন্য অনুতপ্ত।