শৈশব থেকেই কণ্ঠস্বরের জন্য প্রশংসা শুনে চলেছেন তরুণী। পড়াশোনা, চাকরি করে বর্তমানে তিন সন্তানের মা তিনি। বহু ভাবনাচিন্তা করে নিজের কণ্ঠ ‘বিক্রি’ করেই রোজগারের সিদ্ধান্ত নিলেন তরুণী। লাস্যময়ী স্বরে ‘শুভ সকাল’ এবং ‘শুভ রাত্রি’র শুভেচ্ছা জানানো কাজ তাঁর। মোটা টাকার বিনিময়ে সেই শুভেচ্ছাবার্তা শোনেন তাঁর গ্রাহকেরা। গ্রাহকদের মধ্যে সকলেই পুরুষ। পাকা চাকরি ছেড়ে দিয়ে এই পেশায় বেছে নিয়েছেন তরুণী। মাস গেলে কোটি কোটি টাকা উপার্জন হয় তাঁর।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, তরুণীর নাম হলি জেন। আমেরিকার টেক্সাসের বাসিন্দা তিনি। কলেজের পড়াশোনা শেষ করে নার্স নিয়োগকর্ত্রী হিসাবে কাজ শুরু করেন তিনি। কিন্তু সেই উপার্জন দিয়ে সংসার চলছিল না তিন সন্তানের মা হলির। তাই রোজগারের জন্য বিকল্প পথের সন্ধান করছিলেন তিনি। তখনই এক অদ্ভুত পরিকল্পনা মাথায় এল হলির। শৈশব থেকেই তাঁর কণ্ঠস্বর নিয়ে প্রশংসা শুনেছেন তিনি।
সেই কণ্ঠস্বরকেই কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেন হলি। লাস্যময়ী স্বরে গ্রাহকদের ‘শুভ সকাল’ এবং ‘শুভ রাত্রি’ বলে শুভেচ্ছাবার্তা রেকর্ড করতে শুরু করেন ৪২ বছর বয়সি তরুণী। প্রতি শুভেচ্ছাবার্তার বিনিময়ে ২০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১,৭৬৪ টাকা) ধার্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন:
হলির কণ্ঠস্বর শুনেই তাঁর অ্যাকাউন্টে ভিড় জমাতে শুরু করেন। গ্রাহকদের মধ্যে সকলেই পুরুষ। কয়েক দিনের মাথায় জনপ্রিয় হয়ে যায় হলির কণ্ঠস্বর। তাঁকে নানা ধরনের আবদারও করতে শুরু করেন গ্রাহকেরা। কখনও বন্ধুর স্ত্রী সেজে, কখনও বা সহকর্মী অথবা শ্যালিকা সেজে হলিকে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠাতে বলেন তাঁরা। গ্রাহকদের অনুরোধ ফেরান না হলি। লাস্যময়ী কণ্ঠে নির্দিষ্ট চরিত্র সেজে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠান তিনি। অবশ্য তাঁর জন্য গ্রাহকদের কাছ থেকে বেশি টাকাও ধার্য করেন তরুণী।
হলি জানান, বিশেষ শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়ে তিনি বার্তা প্রতি ১০০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৮,৮২২ টাকা) পর্যন্ত উপার্জন করেন। কোনও কোনও মাসে দু’কোটি টাকা পর্যন্ত রোজগারও করেন হলি। কণ্ঠস্বর বিক্রি করে এত উপার্জন করে ফেলবেন তা কল্পনাও করতে পারেননি তিনি। ২০২১ সালে পাকা চাকরি ছেড়ে দেন হলি। তার পর সম্পূর্ণ ভাবে এই পেশাই বেছে নিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
হলিকে নেটপাড়ার অনেকেই বাস্তবের ‘ড্রিম গার্ল’-এর সঙ্গে তুলনা করেন। ২০১৯ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছিল আয়ুষ্মান খুরানা অভিনীত ‘ড্রিম গার্ল’। পুরুষ হয়েও নারীর কণ্ঠে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে রোজগার করত এক তরুণ। সেই তরুণের প্রেমেও পড়ে যেত গ্রাহকেরা। ছবিতে আয়ুষ্মান সেই তরুণের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন। কণ্ঠস্বর ব্যবহার করেই হলি উপার্জন করছেন বলে এই সিনেমার সঙ্গে সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন নেটাগরিকদের একাংশ। তাই হলি হয়ে ওঠেন বাস্তবের ‘ড্রিম গার্ল’।