ঘড়ির কাঁটা ধরে জীবনে কেবল ‘দাসত্ব’ই করে গেলেন! জীবনটাকে আর জীবনের মতো বাঁচা হল না। ১১ বছর ধরে বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করে এই বোধই জন্মেছিল তরুণের। মাস শেষে মোটা মাইনে পাচ্ছিলেন। কিন্তু জীবনে শান্তি খুঁজে পাচ্ছিলেন না তিনি। বহমান এই জীবনে সব কিছুই বড় অনর্থক মনে হচ্ছিল তাঁর। তাই চাকরি ছেড়ে সমুদ্রের বুকে বহমান এই জীবন আক্ষরিক অর্থেই বইয়ে দিলেন তিনি। চাকরি ছেড়ে পোষ্য বিড়ালকে বগলদাবা করে সমুদ্রপাড়ি দিয়েছেন তরুণ। মনুষ্যহীন এই নির্জনতায় মুক্তির স্বাদ পেয়েছেন তিনি। সমাজমাধ্যমে এমনই একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
আরও পড়ুন:
‘সেইলিং_উইথ_ফিনিক্স’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ইনস্টাগ্রামের পাতায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। সেই ভিডিয়ো থেকে জানা যায় যে, ২৯ বছর বয়সি এক তরুণ চাকরি ছেড়ে প্রশান্ত মহাসাগরে পাড়ি দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, ওই তরুণের নাম অলিভার উইজার। আমেরিকার ওরেগন শহরে এক বেসরকারি সংস্থায় টানা ১১ বছর কাজ করতেন তিনি। কিন্তু এক বছর আগে গলায় আঘাত পান অলিভার।
আরও পড়ুন:
স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর পর তিনি জানতে পারেন যে, তাঁর এমন রোগ হয়েছে যেখান থেকে প্যারালাইসিসের ঝুঁকি হতে পারে। পেশাগত জীবন নিয়ে বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এক ভিডিয়োয় অলিভার বলেন, ‘‘আমায় রোজ স্যুট-বুট পরে, দাড়ি কামিয়ে ফিট হয়ে অফিসে যেতে হত। মনের ভিতর যাই চলুক, বাইরে সব সময় নিজেকে পালিশ করে রাখতে হবে। এমন জীবন বাঁচার কোনও অর্থ হয় না।’’ মাথায় ঋণের বোঝা নিয়ে চাকরি ছেড়ে দেন তিনি।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা ঋণ ছিল অলিভারের। অবসরের জন্য যা টাকাপয়সা জমিয়েছিলেন, তা খরচ করতে শুরু করেন তিনি। ঋণ মিটিয়ে ৫০ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪২ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা) খরচ করে একটি জাহাজ কেনেন অলিভার। তার পর প্রয়োজনমতো মেরামত করে সমুদ্রে পাড়ি দিয়েছেন তিনি। অলিভারকে সঙ্গ দিচ্ছে তাঁর পোষ্য বিড়াল ফিনিক্স।
ইনস্টাগ্রামের পাতায় একটি অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছেন তরুণ। প্রতি দিনের কিছু টুকরো মুহূর্ত সেই ভিডিয়ো করে সেই অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করেন তিনি। ইতিমধ্যেই তাঁর অনুগামীর সংখ্যা ১৫ লক্ষের গণ্ডি পার করে ফেলেছে। মাঝসমুদ্রে জনমানবহীন নির্জন পরিবেশে সূর্যাস্ত দেখতে দেখতে হয় তো অলিভার মাঝেমধ্যেই বলে ওঠেন, ‘‘এই তো জীবন, কালীদা!’’