মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে খুন হন স্বামী। নিখোঁজ হন নববিবাহিতা। তরুণীর খোঁজে যখন তোলপাড় করছে পুলিশ, তখন উত্তরপ্রদেশে আত্মসমপর্ণ করলেন তিনি। মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশীকে খুনের ঘটনায় স্ত্রী সোনমের পাশাপাশি আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারির পরেই সমাজমাধ্যমের পাতায় একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে (যদিও সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
আরও পড়ুন:
‘ইনকগনিটো’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলের পাতায় একটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। সেই ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে যে, এক তরুণ হাসিমুখে সিঁদুরদান করছেন। কিন্তু নববধূর মুখ গম্ভীর। চোখেমুখে বিরক্তি ফুটে উঠেছে তাঁর। অধিকাংশ নেটাগরিকদের দাবি, এই ভিডিয়োটি রাজা এবং সোনম রঘুবংশীর বিয়ের। সিঁদুরদানের সময় সোনম হাসছেন না বলে তাঁকে ঘিরে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে নেটপাড়ায়।
কেউ বলছেন, ‘‘সোনমের চোখমুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে যে, তিনি এই বিয়েতে খুশি নন।’’ আবার কারও মন্তব্য, ‘‘সোনম তো বিয়েতে রাজি না হলেই পারতেন। প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েও যেতে পারতেন। তা হলে তরুণের প্রাণ বেঁচে যেত।’’ অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগেই সোনমকে ‘খুনি’ বলে সম্বোধন করতে শুরু করে দিয়েছেন নেটাগরিকদের একাংশ।
রবিবার গভীর রাতে উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরের নন্দগঞ্জ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন সোনম। পুলিশ সূত্রে দাবি, স্বামীকে খুন করানোর জন্য ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেছিলেন সোনম। ইনদওরের বাসিন্দা রাজা এবং সোনমের বিয়ে হয়েছিল গত ১৯ মে। বিয়ের পরের দিনই মেঘালয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন নবদম্পতি।
২৩ মে সোহরার একটি হোমস্টেতে শেষ বার তাঁদের দু’জনকে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল। ১১ দিন পর খাদ থেকে উদ্ধার হয়েছিল রাজার দেহ। দেহ উদ্ধারের সময় সেখানে রক্তমাখা দা এবং বর্ষাতিও পাওয়া গিয়েছিল। রাজার মৃতদেহ পাওয়া গেলেও তাঁর স্ত্রী সোনমকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
আরও পড়ুন:
পুলিশ জানিয়েছিল, গত ২৩ মে দুপুর সওয়া ১টায় আত্মীয়দের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল সোনমের। মনে করা হচ্ছিল, দুষ্কৃতীদের কবলে পড়েছেন তিনিও। এমনকি, তাঁকে অপহরণ করে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। যে জায়গা থেকে সোনম এবং রাজা নিখোঁজ হয়েছিলেন, সেখান থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত খুব দূরে নয়। রাজা-সোনমের পরিবারের তরফেও অপহরণের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। এমনকি, তদন্ত নিয়ে পরিবারের সদস্যেরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।
অবশেষে ১৬ দিন পর সোনমের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। স্বামীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। মেঘালয়ে নবদম্পতির উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনার তদন্ত যে পথে এগোচ্ছিল, তার মোড় ঘুরিয়ে দিল সোনমের আত্মসমর্পণ।