অফিসে বসে কাজের ফাঁকে বন্ধুর সঙ্গে চ্যাট করছিলেন তরুণী। অফিসের বস্ কেমন, তা নিয়ে চর্চা করছিলেন তাঁরা। সেই প্রসঙ্গে বসের একটি মেসেজের স্ক্রিনশট তুলে বন্ধুকে পাঠান তরুণী। কিন্তু বন্ধুর কাছ থেকে কোনও জবাব না পেয়ে অবাক হয়ে যান। বন্ধুর চ্যাটবক্সে চোখ বোলাতেই চমকে যান তরুণী।
তিনি তো বন্ধুকে এমন কোনও স্ক্রিনশটই পাঠাননি। বরং বসের নামে নিন্দা করে সেই মেসেজ পাঠিয়ে দিয়েছেন অফিসের গ্রুপে! তা দেখে মাথায় হাত পড়ে তরুণীর। সমাজমাধ্যমের পাতায় তিন পর্বের ভিডিয়ো পোস্ট করে পুরো ঘটনাটির উল্লেখ করেছেন তরুণী (যদিও সেই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম)।
আরও পড়ুন:
‘বোল্ডঅ্যান্ডপোস্টেড’ নামের অ্যাকাউন্ট থেকে ইনস্টাগ্রামের পাতায় কয়েকটি ভিডিয়ো পোস্ট করা হয়েছে। নাতিদীর্ঘ সেই ভিডিয়োগুলিতে এক তরুণী তাঁর কর্মজীবনের এক ভয়াবহ ঘটনার উল্লেখ করেছেন। বেসরকারি এক সংস্থায় চাকরি করেন তরুণী। অফিসে বসে বন্ধুর সঙ্গে চ্যাট করছিলেন তিনি। গল্পের মাঝে হঠাৎ তাঁর বন্ধু তরুণীর বসের ব্যাপারে প্রশ্ন করেন। তরুণীর বস্ কেমন সে বিষয়ে জানতে চান।
প্রমাণ দিতে বন্ধুকে একটি স্ক্রিনশট তুলে পাঠান তরুণী। তাঁর বস্ তাঁকে কিছু কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ঠিক কী বলতে চেয়েছেন তা বুঝতে পারছেন না বলে জানান তরুণী। বসের সেই মেসেজের স্ক্রিনশট তুলে বন্ধুকে সে কথাই জানান তিনি। কিন্তু বন্ধুর কাছ থেকে কোনও উত্তর না পাওয়ায় অবাক হয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে নিজের ভুল বুঝতে পেরে মাথায় হাত পড়ে তাঁর। বন্ধুকে না পাঠিয়ে সেই স্ক্রিনশটটি অফিসের গ্রুপে ভুল করে পাঠিয়ে ফেলেছেন! এমনকি, তাঁর বস্ মেসেজটি দেখেও ফেলেছেন।
আরও পড়ুন:
তরুণী হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছিলেন যে, তাঁর সহকর্মীরা সকলেই এই প্রসঙ্গে অবগত। কিন্তু তরুণীর কাছে কেউ সে কথা পাড়ছেন না। ভয় পেয়ে যান তরুণী। হঠাৎ সংস্থার মানবসম্পদ (এইচআর) বিভাগের তরফে একটি মেল পান তিনি। তরুণীর বস্ সেই স্ক্রিনশটটি এইচআর বিভাগে পাঠিয়েছেন এবং সেই বিষয়ে কর্মীর বক্তব্য জানতে চেয়েছেন অফিস কর্তৃপক্ষ। মানবসম্পদ বিভাগের এক ঊর্ধ্বতন কর্মী তরুণীর সঙ্গে বৈঠক করেন। তরুণী কেন গ্রুপে এমন স্ক্রিনশট পাঠালেন তা জানতেও চান।
তরুণী নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। সেই ঊর্ধ্বতনও তরুণীকে শাসন না করে সতর্ক হওয়ার অনুরোধ করে বৈঠক শেষ করেন। কিন্তু তার পর থেকেই শুরু হয় তরুণীর বসের ‘অত্যাচার’। তরুণীর দাবি, আগে তাঁর সঙ্গে ঠাট্টা-ইয়ার্কি করতেন তাঁর বস্। কিন্তু এই ঘটনার পর তরুণীর সঙ্গে কথা বলাই বন্ধ করে দিয়েছেন তিনি।
এমনকি, প্রয়োজনীয় কাজ থাকলেও সে কথা মিটিংয়ে তরুণীকে সরাসরি বলছেন না তাঁর বস্। তরুণী বলেন, ‘‘এই অফিসে কোডিংয়ের জটিল ভাষা বোঝার পাশাপাশি সহকর্মীদের জটিল কথাবার্তার অর্থ নিয়েও ভাবনাচিন্তা করতে হচ্ছে।’’ তবে অফিসের পরিবেশ ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়লেও তরুণী তা নিয়ে মনখারাপ করেননি।
তাঁর কথায়, ‘‘আমি এখন চুপচাপ অফিস যাই। নিজের কাজটুকু করি। মাঝেমধ্যে চা-কফি খাই। কাজ শেষ হলে আবার চুপচাপ বাড়ি ফিরে আসি।’’ এই ভিডিয়োগুলি দেখার পর সংস্থার পরিবেশ নিয়ে সমালোচনা করেছেন অধিকাংশ নেটব্যবহারকারী। এই প্রসঙ্গে এক জন নেটাগরিক লিখেছেন, ‘‘এমন ব্যবহার করা একদমই ঠিক নয়। আমি বস্ হলে অধস্তন কর্মীকে ডেকে জিজ্ঞাসা করতাম যে, আমার কোন কথা সে বুঝতে পারেনি। খোলামেলা আলোচনা করে তার সংশয় দূর করতাম।’’