ছোট থেকেই দারিদ্রের মধ্যে বড় হয়েছেন। তাই সুযোগ পেলেই টাকা জমিয়ে ফেলার স্বভাব রয়েছে তরুণীর। বর্তমানে পাকা চাকরি, সংসার রয়েছে তাঁর। সাড়ে তিন বছরের মধ্যে ৩৯ লক্ষ টাকা জমিয়ে ফেলেছেন তিনি। প্রচুর অর্থ সঞ্চয় করে ফেললেও বিলাসিতার জন্য টাকা খরচ করতে রাজি নন তরুণী। অর্থাভাবে দিন কাটিয়েছেন বলেই এই স্বভাব তাঁর রন্ধ্রে রন্ধ্রে বইছে বলে দাবি তাঁর।
আরও পড়ুন:
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ১৮ বছর বয়স থেকে ফ্লোরিডায় থাকতেন রেজ়কা এলে। ১৮ বছর পার হওয়ার পর থেকেই রোজগার করতে শুরু করেছিলেন তিনি। প্রথমে দোকানে চাকরি করতেন তিনি। কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মতো অবস্থা ছিল তাঁর। পেট্রল পাম্পে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করা হত।
অধিকাংশ সময় সেখান থেকে খেতেন রেজ়কা। আবার কখনও কখনও খাবারের জন্য রক্তদানও করতেন তিনি। এক বার রক্তদান করতে দাতাকে ৫০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় সাড়ে ৪ হাজার টাকা) করে দেওয়া হত। সেই টাকার অধিকাংশ জমিয়ে রাখতেন রেজ়কা। ন্যূনতম খরচ করে খাবার কিনতেন তিনি। বাসস্থানের অভাব ছিল, তাই বন্ধুবান্ধবের বাড়িতে সোফায় ঘুমিয়ে রাত কাটাতেন তরুণী।
আরও পড়ুন:
বন্ধুদের বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠান হলে ফেলে দেওয়া খাবারও খেতে হয়েছে তাঁকে। পরে কম খরচে এক বন্ধুর বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেন রেজ়কা। কিন্তু বিদ্যুতের খরচ মেটানোর মতো সামর্থ্য ছিল না তরুণীর। তাই বাড়িতে যত ক্ষণ থাকতেন, তত ক্ষণ মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখতেন রেজ়কা। ২৬ বছর বয়সে এক মনোবিদের সহকারী হিসাবে কাজ করা শুরু করেন তিনি। তাঁর রোজগারও একলাফে অনেকটা বেড়ে যায়। ২০১৯ সালে এক তরুণের সঙ্গে আলাপ হয় তাঁর। কয়েক মাস সম্পর্কে থাকার পর তাঁকে বিয়ে করেন রেজ়কা।
স্বামীর কাছে আর্থিক সহায়তা পেয়ে মনোবিদ্যা নিয়ে অনলাইনে পড়াশোনা করে ২০২১ সালে স্নাতক হন তিনি। তিন বছরের এক সন্তানও রয়েছে রেজ়কার। গত সাড়ে তিন বছরে ৪৪ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৯ লক্ষ টাকা) টাকা জমিয়ে ফেলেছেন তরুণী। রেজ়কার দাবি, পারিশ্রমিক পাওয়ার পর সমস্ত বিল মিটিয়ে ফেলেন তিনি। প্রতি মাসে ৪০০ থেকে ৫০০ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৩৫-৪৪ হাজার টাকা) আমোদ-আহ্লাদের জন্য খরচ করেন রেজ়কা। বাকি টাকা জমিয়ে রাখেন।
বর্তমানে নরওয়ের মান্ডেলে থাকেন তরুণী। লেখালিখির কাজের সঙ্গে যুক্ত তিনি। প্রতি মাসে ৪ হাজার ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় সাড়ে তিন লক্ষের বেশি) উপার্জন করেন রেজ়কা। বাড়িতে বসেই কাজকর্ম সারেন তিনি। তাই শহর থেকে দূরে কম খরচে ভাড়াবাড়িতে থাকেন। যাতায়াত বাবদ বিশেষ খরচ নেই। উপরন্তু তিনি এবং তাঁর স্বামী এমন প্রকল্পে বিনিয়োগ করেন, যেখান থেকে বেশি রিটার্ন পাওয়া যায়। জামাকাপড়, প্রসাধনীর জন্য খরচ করতে রাজি নন রেজ়কা। এই সমস্ত খরচ তাঁর কাছে অপ্রয়োজনীয় বলে মনে হয়। রেজ়কার দাবি, শৈশব থেকে দারিদ্রের মধ্যে দিন কাটিয়েছেন বলে এখনও সুযোগ পেলেই টাকা জমান তিনি।