Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

শতবর্ষে টাকি গ্রন্থাগার, বই পড়েছেন নেতাজিও

বহু ইতিহাসের সাক্ষী ৭৪ হাজার বই। যার কোনওটির হয় তো পাতা উল্টে দেখেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, রসরাজ অমৃতলাল বসুরা।

নির্মল বসু 
হাসনাবাদ শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০২
Share: Save:

বহু ইতিহাসের সাক্ষী ৭৪ হাজার বই। যার কোনওটির হয় তো পাতা উল্টে দেখেছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়, রসরাজ অমৃতলাল বসুরা।

সে সব মোবাইল, ল্যাপটপের বহু যুগ আগের কথা। এখন প্রায় আড়াইশো জন পাঠক প্রতি দিন আসেন টাকি রাষ্ট্রীয় জেলা গ্রন্থাগারে। দিনে অন্তত ৩০টি বই নিয়ে যান পাঠক। কিন্তু বছর বছর সংখ্যাটা যে কমতির দিকে, তা মানছেন অনেকেই। একশো বছরে পা রাখা এই গ্রন্থাগারে খাতা-কলমে পাঠক ৩ হাজার ৭৪৮ জন। কিন্তু বই পড়ার আগ্রহ কমছে বলে মনে করেন সকলেই।

সম্প্রতি গ্রন্থাগারের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বিজ্ঞান মেলা এবং বাংলার লোক উৎসবের আয়োজন হয়েছিল। ২৩ জানুয়ারি যার উদ্বোধন করেন সহিদুল্লা কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ নারায়ণচন্দ্র দাস, ছিলেন গ্রন্থাগারের প্রবীণ ও নবীন সদস্যেরা। অনুষ্ঠানের চতুর্থ দিনে এসেছিলেন গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লাহ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘মোবাইল-ইন্টারনেটের যুগে বই পড়ার অভ্যাস অনেকটাই কমেছে। সরকার থেকে পাঠকদের চাহিদা বাড়ানোর জন্য কম্পিটার দেওয়া হচ্ছে।’’

স্থানীয় ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, বসিরহাট মহকুমার টাকিতে ১৯১৮ সালে রামনবমীতে টাকির বিদ্যোৎসাহী মানুষজন রায়চৌধুরী জমিদারের পশ্চিম বাড়িতে গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। টাকি রাষ্ট্রীয় জেলা গ্রন্থাগার ছিল এক সময়ে সংযুক্ত ২৪ পরগনার একমাত্র সরকারি জেলা গ্রন্থাগার। জেলার গ্রন্থপ্রেমী বহু মানুষ, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং গবেষকেরা দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থের সন্ধানে আসতেন টাকিতে। বহু দুর্মূল্য পুঁথি, পুরনো পত্রপত্রিকা সংরক্ষিত আছে এই গ্রন্থাগারে। ১৯৬১ সাল থেকে বাংলা ও ইংরাজিতে প্রকাশিত প্রতিষ্ঠিত দৈনিক পত্রিকাগুলিও রক্ষিত আছে। তবে ইদানীং বই ঘেঁটে দেখার লোক যে হারে কমছে, বহু বইয়ের উপরে পুরু ধুলোর আস্তরণ। চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছেন, এমন তরুণ-তরুণীদেরই ইদানীং আনাগোনা বেশি। গ্রন্থাগারের শতবর্ষ উপলক্ষে পাঠকদের গড়ে তোলা শতবর্ষ উদযাপন কমিটির পক্ষে দীপক বসু, শ্যামল দে, বিশ্বপতি দাস বলেন, ‘‘বর্তমানে একতলার ৮টি ঘর নিয়ে লাইব্রেরি। দোতলা রিডিং রুম এখনও শুরু হয়নি। তিনতলায় সেমিনার হল করা যায় কিনা, তা নিয়ে পরিকল্পনা চলছে।’’ কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক অধীর পাল, মনীষা মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নতুন প্রজন্মকে গ্রন্থাগারমুখী করতে নানা পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Library Netaji Subhash Chandra Bose
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE