E-Paper

ভোটের মুখে শিকেয় পুর পরিষেবা, ক্ষোভে ফুঁসছে পানিহাটি

লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণা হলেই উন্নয়নমূলক কাজের আর্থিক অনুমোদন দিতে পারবে না পুরসভা। অর্থাৎ, মে পর্যন্ত আর কাজ হবে না। নাগরিকদের প্রশ্ন, কেন রাজনীতির লড়াইয়ের শিকার হবেন তাঁরা?

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ মার্চ ২০২৪ ০৭:৩০
An image of Panihati Municipality

পানিহাটি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

রাজনীতির অভ্যন্তরীণ ‘কাঁটা’য় বিদ্ধ পানিহাটি। ফলে, ভোটের আগে নাগরিক পরিষেবা শূন্য রাজ্যের ‘এ গ্রেড’ ওই পুরসভায়। বিরোধী দল থেকে বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, উন্নয়নের কাজ থমকে প্রায় দু’মাস। যার প্রভাব ভোটে পড়ার আশঙ্কায় শাসকদলেরই পুরপ্রতিনিধিদের একাংশ।

লোকসভা ভোটের দিন ঘোষণা হলেই উন্নয়নমূলক কাজের আর্থিক অনুমোদন দিতে পারবে না পুরসভা। অর্থাৎ, মে পর্যন্ত আর কাজ হবে না। নাগরিকদের প্রশ্ন, কেন রাজনীতির লড়াইয়ের শিকার হবেন তাঁরা? রাস্তা ও নিকাশির সংস্কার থেকে পানীয় জল, পথের আলো— কোনও পরিষেবাই ঠিক মতো মিলছে না বলে অভিযোগ। স্থানীয় সিপিএম নেতা শুভব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পানিহাটিতে হবুচন্দ্র রাজা, গবুচন্দ্র মন্ত্রীদের রাজত্ব। এই বোর্ড চরম ব্যর্থ। সেই ব্যর্থতা অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা চলছে।’’

পুরপ্রধান মলয় রায়ের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রকাশ করে গত জানুয়ারিতে বোর্ড মিটিং বয়কট করেন তৃণমূল পুরপ্রতিনিধিরা। আজ পর্যন্ত আর বোর্ড মিটিং হয়নি। পুরপ্রতিনিধিদের কথায়, ‘‘উন্নয়ন সংক্রান্ত সব সিদ্ধান্তই গৃহীত হয় বোর্ড মিটিংয়ে। তা না হলে নাগরিক পরিষেবা ধাক্কা খাবেই।’’ ঠিক হয়েছিল, ভোটের আগে ৩৫টি ওয়ার্ডে দু’টি করে রাস্তার সংস্কার হবে। তা-ও আর হয়নি। রামচন্দ্রপুরের ভাগাড় নিয়েও সমস্যা মেটেনি। পানীয় জলের পাম্পের কর্মীরা দীর্ঘদিন বেতন না পাওয়ায় ওই পরিষেবাও অনিয়মিত। বেহাল অবস্থা বিদ্যুৎ দফতরেরও। টাকার অভাবে অধিকাংশ ওয়ার্ডে রাস্তার আলো সারানো যাচ্ছে না। দু’-এক জন পুরপ্রতিনিধি নিজেদের টাকায় আলো কিনে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছেন।

পুরপ্রতিনিধিদের একাংশের অভিযোগ, ডেঙ্গি-যুদ্ধও বন্ধ। চুন-ব্লিচিং কেনা হয়নি টাকার অভাবে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলি কার্যত বন্ধ। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা খরচ না হওয়ায় পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের তহবিলও এক মাসে ফেরত চলে যাবে। রাজকোষের এমন হাল যে, আগামী মাস থেকে তাঁদের বেতন কী ভাবে হবে, সংশয়ে চুক্তিভিত্তিক কর্মীরা। পেনশন তহবিলও শূন্য বলে খবর। অভিযোগ, মলয়কে সরিয়ে পুরপ্রধানের চেয়ারে নিজের পরিবারের এক জনকে বসাতে চান স্থানীয় এক শীর্ষ নেতা। আবার মলয়ও চেয়ার ছাড়তে নারাজ।

স্থানীয় বিজেপি নেতা কৌশিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পানিহাটির এক শীর্ষ নেতা নিজের স্বার্থে পুরপ্রতিনিধিদের একাংশকে দিয়ে এই অচলাবস্থা তৈরি করেছেন।’’ অভিযোগের আঙুল যাঁর দিকে, সেই বিধায়ক নির্মল ঘোষও স্বীকার করছেন, উন্নয়নের কাজ বন্ধ। এ নিয়ে পুরপ্রতিনিধিরাও প্রতিবাদ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘সবটাই বিরোধীদের মনগড়া গল্প। আমি পুরসভার বিষয়ে থাকি না। সবটাই সাংসদ দেখছেন।’’ সমস্যা দ্রুত মেটানোর আশ্বাস দিচ্ছেন উপ পুরপ্রধান সুভাষ চক্রবর্তী। কিন্তু সেটা কবে, প্রশ্ন বাসিন্দাদের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Panihati municipality Internal Conflict Panihati

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy