ত্রিপল টাঙিয়ে এ ভাবেই চলে রান্না। নিজস্ব চিত্র Sourced by the ABP
এক উঠোন থেকে ঠাঁই বদলে হয়েছে অন্য উঠোন। তবু ঘর মেলেনি। বছরের পর বছর এ ভাবেই চলছে হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের কালীতলা পঞ্চায়েতের কালীতলা গ্রামের ২৫৩ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি। ঘর না থাকায় পড়াশোনাও কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শুধুই সময়মতো অভিভাবকদের সঙ্গে খাবার নিতেআসে খুদেরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, আনুমানিক ২০০৭ সাল নাগাদ এলাকার একটি বাড়ির উঠোনে অঙ্গনওয়াড়িটি শুরু হয়। বছর তিনেক সেখানে চলার পরে বাড়ির মালিক আর রাজি হননি। তখন কেন্দ্রটি অন্য এক বাসিন্দার উঠোনে স্থানাস্তরিত হয়। উঠোনটি ফাঁকা। মাথায় ছাউনি নেই। রোদ-জলে খোলা আকাশের নীচেই বসে শিশুরা। উঠোনে পাশেই রাস্তা। সেখানে সব সময়ে গাড়ি চলে। দুর্ঘটনার ঝুঁকিও আছে। এই পরিস্থিতিতে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের উপভোক্তা জনা পঁয়ত্রিশ শিশুর।
একটি ত্রিপল ঘিরে কোনও রকমে চলে রান্না। উনুনের পাশেই জ্বালানি রাখা থাকে। সহায়িকা লক্ষ্মীদয়াল রায় জানান, বৃষ্টি হলে উনুন জ্বালিয়ে রান্না করতে সমস্যা হয়। বেশি বৃষ্টিতে জল জমে যায় উঠোনে। জল ঢোকে উনুনের মধ্যে। জ্বালানিও ভিজে যায়। ফাঁকা জায়গা বলে কখনও আবার কুকুর ঢুকে উনুন ভেঙে দেয়। মিড ডে মিলের ডাল, চাল রাখা হয় মালিকের একটি ঘরে। আরও সমস্যা, এখানে কোনও শৌচাগার বা পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। প্রয়োজনে পড়শিদের বাড়ির শৌচাগার ব্যবহার করেন অঙ্গনওয়াড়ির কর্মীরা।
কর্মী মধুছন্দা মণ্ডল বলেন, ‘‘বাচ্চাদের পড়াতে চাই। কিন্তু এমন পরিবেশে ওদের এনে বসাবো কোথায়? রোদ-বৃষ্টি-শীতে বাচ্চাদের নিয়ে কেন্দ্র চালাতে বিড়ম্বনার শেষ নেই।’’ অভিভাবক লক্ষ্মী সর্দার, হাফিজা বিবি বলেন, “ঘর থাকলে ভাল হত। বাচ্চারা বসে পড়তে পারত।’’ মধুছন্দা জানান, সমস্যার বিষয়ে উপরমহলে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে বলা হয়েছে, কেউ যদি জমি দান করেন, তবে ঘর করে দেওয়া হবে। কিন্তু কেউই বিনামূল্যে জায়গা দিতে রাজি নন। তাঁদের দাবি জমির বিনিময়ে নগদ টাকা বা চাকরি দিতে হবে।
এ বিষয়ে সিডিপিও হিঙ্গলগঞ্জ রফিক আলি বৈদ্যকে ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। মেসেজের উত্তর দেননি। বিডিও শাশ্বতপ্রকাশ লাহিড়ী পরিস্থিতির কথা মেনে নিয়ে বলেন, “জমি পাওয়ার সমস্যা আছে। তা-ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির জন্য কী ব্যবস্থা করা যায় দেখছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy