Advertisement
E-Paper

‘শরীর তো ভালই, তাই চলে এলাম আনাজ বেচতে’ 

সোমবার পর্যন্ত মহকুমায় আক্রান্তের সংখ্যা ২, ৭৮৪ জন।

সীমান্ত মৈত্র 

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০৪:২৮
বেপরোয়া: বনগাঁর মতিগঞ্জের হাটে ভিড়। মাস্ক নেই কারও কারও। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

বেপরোয়া: বনগাঁর মতিগঞ্জের হাটে ভিড়। মাস্ক নেই কারও কারও। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক

করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসায় বাড়িতেই থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু বাজারে গিয়ে আনাজ বিক্রি শুরু করে দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। গাইঘাটার ঘটনাটি জানতে পারেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। ধরে-বেঁধে ওই ব্যক্তিকে ফের বাড়িতে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। ওই ব্যক্তির যুক্তি ছিল, ‘‘শরীরে সমস্যা তো কিছু নেই। তাই ভাবলাম, কাজে বেরিয়ে পড়ি!’’

বনগাঁর বাসিন্দা এক পুলিশ কর্মী করোনা পরীক্ষার জন্য লালারস দিয়েছিলেন হাসপাতালে। এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, রিপোর্ট আসার আগেই তিনি বাড়িতে থেকে বেরিয়ে পড়েছেন। বাইক নিয়ে শহরের রাস্তায় ঘুরছেন।

পানীয় জলের কল থেকে জল আনতে বেরিয়েছেন। পাড়ায় ঝামেলা মেটাতে হম্বিতম্বিও করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরে রিপোর্ট এলে দেখা যায়, করোনা পজ়িটিভ। কতজনের মধ্যে যে সংক্রমণ ছড়িয়েছে তাঁর মাধ্যমে, তা ভেবে উদ্বিগ্ন পড়শিরা।

বাগদা ব্লকের এক বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হয়েও এলাকায় ঘুরেছেন বলে শোনা গেল। ১৪ দিন পর তিনি সুস্থ হয়ে বুক বাজিয়ে বলে বেড়াচ্ছেন, ‘‘কাউকে বুঝতেই দিইনি, করোনা হয়েছিল।’’

অসচেতনতার এই নমুনাগুলি যে বিচ্ছিন্ন নয়, তা মানছেন স্বাস্থ্য কর্তারাও। আক্রান্ত ব্যক্তি বাড়িতে থাকলেও তাঁর বাড়ির লোক পথেঘাটে বেরিয়েছেন বলে আরও ঘটনা শোনা গিয়েছে। সংক্রমণ যে হারে ছড়াচ্ছে, এই ধরনের ঘটনা তার পিছনে বড় ভূমিকা পালন করছে বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিমত। মাস্ক না পরা, শারীরিক দূরত্ববিধি না মানার প্রবণতা তো আছেই।

বাগদার বিএমওএইচ প্রণব মল্লিক বলেন, ‘‘রিপোর্ট আসার আগে বাইরে বেরোতে পইপই করে নিষেধ করা হচ্ছে। পরিবারের লোকজনকেও রিপোর্ট আসার আগে কোয়রান্টিনে থাকতে বলা হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবারের লোকজন পরীক্ষা করাতে চাইছেন না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা তো কাউকে ধরে-বেঁধে পরীক্ষা করাতে পারি না। কিন্তু মানুষকে বুঝতে হবে, এই ধরনের মনোভাব রোগ ছড়াতে সাহায্য করছে।’’

বনগাঁর পুরপ্রশাসক শঙ্কর আঢ্য বলেন, ‘‘মানুষের মধ্যে কোনও সচেতনতা নেই। নিজের ভালটাও অনেকে বুঝতে চাইছেন না। পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা চেষ্টা করছেন। সচেতন করতে প্রচার কর্মসূচি চলছে।’’

এ দিকে, বনগাঁ মহকুমা জুড়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা। সোমবার পর্যন্ত মহকুমায় আক্রান্তের সংখ্যা ২, ৭৮৪ জন। অ্যাক্টিভ রোগী ৪৭২ জন। মারা গিয়েছেন ২১ জন। অভিযোগ, লালারস পরীক্ষার রিপোর্ট আসতে ৩-৪ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। সে সময়কালে অনেকেই ধৈর্য না ধরে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। তা ছা়ড়া, মহকুমা হাসপাতালে লালারস পরীক্ষা করাতে একাধিক দিন যেতে হচ্ছে। এর ফলে অনেকেই যেতে চাইছেন না। হাসপাতাল সুপার শঙ্করপ্রসাদ মাহাতো বলেন, ‘‘দৈনিক আমাদের ৬০ জনের বেশি লালারস নেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। ফলে তার বেশি রোগী এলে দিনের দিন লালারস নেওয়া সম্ভব হয় না। পর দিন আসতে বলা হয়। আমরা লালারস সংগ্রহ করে এনআরএস হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। সেখান থেকে রিপোর্ট আসতে দেরি হয় কখনও কখনও।’’

Bangaon Coronavirus COVID-19 market
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy