অর্জুন সিং।
ডেকেও হল না বৈঠক। সব ব্যবস্থা করেও বাজেট পেশ হল না ভাটপাড়া পুরসভায়।
ভাটপাড়ার বিধায়ক তথা পুরপ্রধান অর্জুন সিংহ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই ভাটপাড়ার পুরসভায় সিঁদুরে মেঘ। বুধবার পুরসভার ভোট অন অ্যাকাউন্টের (বাজেট) সভা ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেই বৈঠকে না গেলেন পুরপ্রধান, না গেলেন কোনও কাউন্সিলর। এর পরেই ছিল বোর্ড অফ কাউন্সিলরস-এর বৈঠক। কিন্তু সেই বৈঠকেও কাউন্সিলরদের উপস্থিতি শূন্য। পুরপ্রধান অর্জুন নির্বাচনী আচরণবিধির উপরে দায় চাপাচ্ছেন। আর তৃণমূলপন্থী কাউন্সিলরেরা বলছেন, তাঁর সঙ্গে কাউন্সিলর নেই বলে লজ্জায় পুরসভার বাজেট এবং বৈঠক এড়িয়েছেন ব্যারাকপুরের বিজেপি প্রার্থী অর্জুন। কারণ অর্জুনের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছেন তৃণমূলের ২১ কাউন্সিলর। বাজেট না হওয়ায় পুরসভার দৈনন্দিন কাজে তার প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন কাউন্সিলরেরা।
ভাটপাড়া পুরসভার মোট কাউন্সিলর ৩৩ জন। একজন নির্দল প্রার্থী জিতলেও পরে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। ফলে সব আসনই তৃণমূলের দখলে। দিন পনেরো আগেও অর্জুনই ছিলেন পুরসভার শেষ কথা। কিন্তু তিনি বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরেই পটপরিবর্তন ঘটে। তিনি নিজে দাবি করেছিলেন, ২২ জন কাউন্সিলর তাঁর সঙ্গে রয়েছেন। ফলে পুরসভা তাঁর হাতেই রয়েছে। কিন্তু দু’দিন পরেই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা পড়ে।
বুধবার বাজেট-সভার জন্য সব কাউন্সিলরদের কাছে আগেই চিঠি বিলি করা হয়েছিল। বাজেটের পরেই ছিল কাউন্সিলরদের বৈঠক। ভাটপাড়ার উপ-পুরপ্রধান সোমনাথ তালুকদার বলেন, ‘‘আমরা পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছি। কাউন্সিলরদের আর ওঁর বিরুদ্ধে আস্থা নেই। সেই অবস্থায় উনি বাজেট করবেন কী করে?’’ অর্জুনের প্রতি তাঁর কটাক্ষ, ‘‘পুরপ্রধান আগে অনাস্থা বৈঠকের মুখোমুখি হন। তার আগে বাজেট পেশের নৈতিক এবং আইনি অধিকার তাঁর নেই।’’
অর্জুন অবশ্য বলেন, ‘‘নির্বাচনী আচরণবিধি চালু হয়ে গিয়েছে। সেই জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চেয়েছিলাম বাজেট পেশ করা যাবে কিনা।’’ তাঁর দাবি, ‘‘কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, এখন বাজেট পেশ করা যাবে না। সেই জন্য বাজেট হল না।’’
কিন্তু, তার পরের কাউন্সিলরদের বৈঠক হল না কেন? সেই প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দেননি তিনি। তবে সোমনাথের দাবি, ‘‘কাউন্সিলরেরা যে যাবেন না, তা জেনেই আর মুখ পোড়াতে পুরসভায় আসেননি উনি।’’
কিন্তু এতে পুরসভা চালাতে অসুবিধা হবে না? সোমনাথ জানান, পুরসভার দৈনন্দিন খরচ এবং ছোট প্রকল্পে টাকা জোগানে অসুবিধা হতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘সেই জন্য আমরা পুর ও নগরোন্নয় দফতর, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক এবং ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসকের কাছে আর্জি জানিয়েছি যাতে তাড়াতাড়ি অনাস্থা প্রস্তাবের ভোটাভুটি করা যায়। প্রকল্প চালাতে যাতে অসুবিধা না হয়, সেই আর্জিও জানিয়েছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy