Advertisement
E-Paper

ঢোলাহাটে ব্যবসায়ী খুন, দেহ আটকে বিক্ষোভ

সকালবেলা পুকুরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন স্থানীয় কয়েকজন। জলে ভেসে ওঠে একটি দেহ। ডান চোখটি উপড়ানো। ঠোঁট ও কান দুটি খুবলে নেওয়া হয়েছে। সোমবার সকালে দেহ উদ্ধারের পর ঢোলাহাটের লক্ষ্মীনারায়ণপুরে উত্তেজনা ছড়ায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০২
পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। ইনসেটে, নিহত রউফ লস্কর।

পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ। ইনসেটে, নিহত রউফ লস্কর।

সকালবেলা পুকুরে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন স্থানীয় কয়েকজন। জলে ভেসে ওঠে একটি দেহ। ডান চোখটি উপড়ানো। ঠোঁট ও কান দুটি খুবলে নেওয়া হয়েছে।

সোমবার সকালে দেহ উদ্ধারের পর ঢোলাহাটের লক্ষ্মীনারায়ণপুরে উত্তেজনা ছড়ায়। দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে এলাকাবাসী দেহ আটকে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশ অবরোধ তুলতে এলে ক্ষিপ্ত জনতা ইট পাটকেলও ছোড়েন। প্রায় ছ’ঘণ্টা পর দোষীদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতের নাম রউফ লস্কর (২৮)। বাড়ি ওই এলাকায়। তিনি গরু-ছাগল বেচাকেনার ব্যবসা করতেন। তা ছাড়া একটি চায়ের দোকানেও কাজ করতেন।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, মারধর করে খুঁচিয়ে খুন করা হয়েছে ওই ব্যবসায়ীকে। দেহের অনেক জায়গাতেই আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, ‘‘আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীরা দ্রুত গ্রেফতার হবে।’’

কী ঘটেছিল?

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সকালে হাটে গিয়েছিলেন রউফ। দুপুরে বাড়ি ফেরার পর একটি ফোন আসে তাঁর কাছে। তখনই তিনি বেরিয়ে যান। সন্ধ্যার পর থেকে তাঁর স্ত্রী রৌশনারা খোঁজ শুরু করেন। রাত হয়ে যাওয়ায় থানায় যেতে পারেননি তিনি। এরপরেই এ দিন বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ভাজনার কাছে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। রৌশনারা বলেন, ‘‘ফোনে আমার স্বামীকে কেউ বলে, সস্তায় অনেক গরু পাওয়া যাবে টাকা নিয়ে তাড়াতাড়ি চলে এস। তাই শুনে প্রায় ৭০ হাজার টাকা নিয়ে তিনি বেরিয়ে যান।’’ বিকেলের পর থেকে ফোনও বন্ধ ছিল। তবে ঘটনাস্থল থেকে কোনও ফোন পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ছেলে কোলে নিয়ে রৌশনারা বিবি।

এরপরেই ঢোলাহাট থানার ওসি দেহ উদ্ধার করে নিয়ে আসার সময় লক্ষ্ণীনারায়ণ হাইস্কুলের কাছে দেহ আটকে বিক্ষোভ শুরু হয়। স্কুল মোড় থেকে শুরু করে ঢোলারহাটের দিকে প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তায় ৫টি জায়গায় গাছের গুঁড়ি ফেলে পথ অবরোধ করা হয়। আটকে পড়ে পুলিশের দুটি প্রিজন ভ্যান। ওই রুটে যান চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়। ঘটনাস্থলে যান ডায়মন্ড হারবার এবং কাকদ্বীপের এসডিপিওরা। কিন্তু দেহ তুলতে দেননি জনতা। পরে স্থানীয় তৃণমূল নেতারা পুলিশের সঙ্গে আলোচনায় বসে। কিন্তু সেখানেই পুলিশকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভকারীরা ইট-পাটকেল ছোড়েন। আলোচনা ভেস্তে যায়। যদিও সকলেই স্কুলের ভিতরে থাকায় কেউ আহত হয়নি। পরে সেখানে দুই মহকুমার ১০টি থানার পুলিশ জেলার দুই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, র‌্যাফ নিয়ে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।

স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে থাকতেন রউফ। বড় মেয়ের বয়স দশ বছর। মেজ ছেলে ছ’বছরের আর ছোট ছেলের বয়স দেড় বছর। রৌশনারা বলেন, ‘‘এই তিন সন্তানকে নিয়ে কী ভাবে সংসার চালাব বুঝতে পারছি না।’’ তবে তাঁর সঙ্গে কারও কোনও শত্রুতা ছিল না বলেই দাবি করেছে পরিবার। তা হলে কী কারণে এই খুন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

স্থানীয় তৃণমূল নেতা সহিদুল্লা কয়াল বলেন, ‘‘বার বার এলাকায় কেউ না কেউ খুন হচ্ছেন। কেবলমাত্র ডাকাতির উদ্দেশ্যে এটা করা হয়নি। আমরা তারই বিহিত চেয়েছি পুলিশের কাছে।’’ পরে এলাকায় যান কুলপির বিধায়ক যোগরঞ্জন হালদার। এলাকায় পুলিশ পিকেট রয়েছে।

ছবি: শান্তশ্রী মজুমদার।

Businessman Murder Agitation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy