E-Paper

শিশুকন্যা অপহরণে ধৃত কলেজশিক্ষিকা, মেয়ে ও ভাই

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই শিশুটির মা-বাবা থাকেন দমদম রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। তাঁদের আরও তিনটি সন্তান রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৭:৩২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

দমদম স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে পাঁচ বছরের শিশুকন্যাকে অপহরণের অভিযোগে এক কলেজ শিক্ষিকা, তাঁর মেয়ে এবং তাঁর ভাইকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে অপহৃত শিশুটিকেও। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অরুণিমা চন্দ, তাঁর মেয়ে অনুষ্কা চন্দ চৌধুরী এবং ভাই অনুপভ চন্দ। ৫২ বছরের অরুণিমা একটি কলেজের সহকারী অধ্যাপিকা। বছর কুড়ির অনুষ্কা একটি কলেজের ফাইনাল সিমেস্টারের ছাত্রী। তাঁদের বাড়ি সোনারপুরে। একটি বেসরকারি সংস্থায় উচ্চ পদে কর্মরত, ৪৪ বছরের অনুপভ কসবার বাসিন্দা। সোমবার ভোরে প্রথমে মা-মেয়েকে সোনারপুর থেকে গ্রেফতার করে সিঁথি থানার পুলিশ। তাঁদের জেরা করে কসবা থেকে গ্রেফতার করা হয় অনুপভকে। তাঁর কাছ থেকেই উদ্ধার করা হয় শিশুটিকে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, অনুপভ স্ত্রীর সঙ্গে থাকেন না। একাই থাকেন। তাঁর জন্যই দমদম স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে ওই শিশুকন্যাটিকে নিয়ে গিয়েছিলেন অনুষ্কা। পুলিশি জেরার মুখে ধৃতদের দাবি, একাকিত্বে ভোগা অনুপভের হাতে ওই শিশুটিকে লালনপালন করার ভার দিয়েছিলেন বোনঝি অনুষ্কা।

পুলিশ সূত্রের খবর, ওই শিশুটির মা-বাবা থাকেন দমদম রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায়। তাঁদের আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। পুলিশের কাছে ওই পরিবারের দাবি, গত ১৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে তাঁরা দমদম স্টেশনের চাতালে ছিলেন। সেই সময়ে তাঁর সন্তানেরা টিকিট কাউন্টারের সামনে খেলা করছিল। কিছু ক্ষণ পরে দুপুর দেড়টা নাগাদ তাঁরা খোঁজ করতে গিয়ে দেখেন, ছোট সন্তানের খোঁজ মিলছে না। এর পরেই সিঁথি থানার পুলিশের কাছে শিশুকন্যাকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করে ওই পরিবার। তদন্তে নামে সিঁথি থানার পুলিশ।

তদন্তকারীরা জানান, সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে অনুষ্কাকে প্রাথমিক ভাবে শনাক্ত করা হয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অনুষ্কা মাঝেমধ্যেই ওই এলাকার বাসিন্দাদের খাবার দিতে আসতেন। সেই সূত্রে ঘটনার দিনও তিনি সেখানে এসেছিলেন বলে পুলিশ জানতে পারে। এর পরেই তদন্তে নেমে অনুষ্কার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে সোমবার তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।

এক তদন্তকারী জানান, প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, অনুপভের স্ত্রী এবং সন্তান তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন। অনুষ্কার দাবি, সেই কারণেই মামার জন্য ওই শিশুটিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। জেরায় ধৃতেরা কখনও আবার দাবি করেছেন, নিজেদের কাছে রেখে দিতেই সে দিন শিশুটিকে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তাই অভিযুক্তদের বক্তব্যে বিভিন্ন অসঙ্গতি রয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। এর পিছনে শিশু বিক্রির কোনও চক্র রয়েছে কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

জানা গিয়েছে, অনুষ্কা এসএফআই করেন। তবে, বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত’ বলে এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাননি সিপিএম বা তাদের গণ-সংগঠনের নেতৃত্ব। তাঁদের দাবি, ঘটনার সঙ্গে দল বা সংগঠনের সম্পর্ক নেই। তাই তাঁরা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চান না।

সোমবার ধৃত তিন জনকে আদালতে তোলা হলে ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজতে পাঠিয়েছে শিয়ালদহের অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কোর্ট। উদ্ধার হওয়া শিশুকন্যার মায়ের গোপন জবানবন্দির আর্জি জানানো হয়েছে বলেও আদালত সূত্রের খবর।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

dumdum Dumdum Station

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy