কাশীপুরের স্বস্ত্যয়নগাছির মজুমদার বাড়ির এই নাটমন্দিরেই হয় পুজো। নিজস্ব চিত্র
জমিদারি কবেই চলে গিয়েছে। তবে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে ভগ্নপ্রায় পেল্লায় বাড়িটি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব কিছু বদলে গেলেও কাশীপুরের স্বস্ত্যয়নগাছির শতাব্দী প্রাচীন মজুমদার বাড়িতে এখনও প্রতি বছর আয়োজন হয় দুর্গাপুজোর। এলাকার হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ মিলেমিশে যান পুজোর আয়োজনে।
মজুমদারেরা এক সময়ে এই এলাকার প্রভাবশালী জমিদার ছিলেন। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তাঁদের তিনমহলা বাড়িটি এখন ভগ্নপ্রায়। এক সময়ে দুর্গোৎসব উপলক্ষে আত্মীয় পরিজন ও প্রতিবেশীদের ভিড়ে গমগম করত বাড়ি। আজ সে সবও অতীত। মজুমদার বাড়ির অধিকাংশ সদস্য কর্মসূত্রে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে রয়েছেন। তবে বাড়ির নাটমন্দিরে দুর্গাপূজার জন্য একজন পুরোহিত রাখা রয়েছে। বাড়িতে একজন কেয়ারটেকারও থাকেন।
স্বাভাবিক ভাবেই দুর্গাপুজো ঘিরে আগের মতো চাকচিক্য আর নেই। বন্ধ হয়ে গিয়েছে পশুবলি প্রথা। এলাকার লোকজন মিলেই পুজোর আয়োজন করেন। হিন্দুদের সঙ্গেই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পুজোর যাবতীয় আয়োজনে মেতে ওঠেন এলাকার মুসলিম বাসিন্দারা।
মোসলেম মোল্লা, রাহান ইসলাম, আমিনা বিবিদের ব্যস্ততা থাকে তুঙ্গে। বাজার করা থেকে শুরু করে পুজোর ফুল-প্রসাদের আয়োজন করার সমস্ত দায়িত্ব থাকে তাঁদের উপরে। পুজো উপলক্ষে বাড়ির নাটমন্দির সংস্কারের কাজও করেছেন এলাকারই এক মুসলিম যুবক।
জন্মাষ্টমীতে কাঠামো পুজোর পরে বাড়িতেই মূর্তি গড়ার কাজ হয়। অষ্টমীর দিন সকলে মিলেমিশে পাত পেড়ে খাওয়ার দৃশ্য দেখে পুরনো দিনের স্মৃতিচারণ করেন মজুমদার বাড়ির প্রবীণ সদস্যেরা।
মজুমদার বাড়ির প্রবীণ সদস্য তাপস মজুমদার বলেন, “পুজো উপলক্ষে আগের মতো জাঁকজমক না থাকলেও এলাকার উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির সৃষ্টি করেছে।”
ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর কথায়, “আমার বিধানসভা এলাকার মানুষ যে কোনও উৎসবে এক সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে যান। শুধু মজুমদার বাড়ির পুজো নয়, ভাঙড়ের প্রতিটি পুজো মণ্ডপে হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভাঙড়ের বদনাম থাকলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে এই এলাকা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy