Advertisement
E-Paper

গারুলিয়ায় পরপর মৃত্যু, ডেঙ্গি-আতঙ্ক

গারুলিয়া পুরসভা সূত্রের খবর, ওই এলাকার দু’টি ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্তদের বেশ কয়েক জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৫৮
শিবানী ঘটক ও গীতা রায়

শিবানী ঘটক ও গীতা রায়

শুরু হয়েছিল সাধারণ জ্বর দিয়ে। ক্রমে রক্তের প্লেটলেট কমতে থাকে। মাঝবয়সি মহিলাকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে আর এক হাসপাতালে ছুটে বেড়ান পরিবারের লোকেরা। তবু শেষ রক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয়েছিল গারুলিয়ার শিবানী ঘটকের (৪৬)। ‘ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোম’ই তাঁর মৃত্যুর কারণ বলে ডেথ সার্টিফিকেটে লেখা হয়েছে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে।

শুধু শিবানীই নন, গত দেড় সপ্তাহে গারুলিয়া পুর এলাকায় জ্বরে ভুগে মৃত্যু ঘটেছে পরপর। গীতা রায় (৭২) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যুর কারণ হৃদ্‌রোগ লেখা হলেও পরিবারের দাবি, ডেঙ্গিতেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। তাঁর রক্তের প্লেটলেট ২০ হাজারে নেমে গিয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। স্থানীয় সূত্রে খবর, জগদ্দলের উচ্ছেগড়ে জ্বরে মৃত্যু হয়েছে সালমা খাতুন (৫৫) নামে আর এক মহিলার।

গারুলিয়া পুরসভা সূত্রের খবর, ওই এলাকার দু’টি ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্তদের বেশ কয়েক জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গৌতম বসুর স্ত্রী সুলগ্না বসু এবং ছেলে শুভার্থী বসুরও ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁরা চিকিৎসাধীন। পুর কর্তৃপক্ষও স্বীকার করেছেন, ওই এলাকায় ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে। যদিও তাঁদের দাবি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

পুরসভা সূত্রে খবর, গারুলিয়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বাড়ি শিবানীদেবীর। অগস্টের মাঝামাঝি জ্বর শুরু হয় তাঁর। শিবানীদেবীর মেয়ে সঙ্গীতা জানান, রক্ত পরীক্ষায় এনএস-১ পজিটিভ মেলে। ১৭ অগস্ট তাঁকে সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পরিবার সূত্রে খবর, প্লেটলেট বেশি থাকায় তাঁকে বাড়ি ফেরত পাঠানো হয়। ফিরেই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন শিবানীদেবী। তাঁর মেয়ে সঙ্গীতা জানান, এর পরে ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল। এক দিন পরে তাঁর জন্ডিস ধরা পড়ে। তখন সাগর দত্তে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। ২২ অগস্ট রাতে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। সঙ্গীতা বলেন, ‘‘এখন আমরা সকলেই বাড়ি থেকে বেরোতে ভয় পাচ্ছি। দরজা-জানলা বন্ধ করে বসে আছি।’’

গীতা রায় গারুলিয়ার চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিলেন। তাঁর ভাইপো সুব্রত রায় জানান, ২২ অগস্ট জ্বর শুরু হয় ওই বৃদ্ধার। সঙ্গে ছিল মাথা যন্ত্রণা। বমি শুরু হওয়ায় তাঁকে ব্যারাকপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্লেটলেট ২০ হাজারের নীচে নেমে গেলে সাগর দত্তে স্থানান্তরিত করা হয় তাঁকে। পরিবার সূত্রে খবর, চার ইউনিট প্লেটলেট দেওয়ার পরেও তাঁর অবস্থার বিশেষ উন্নতি হয়নি। দিন দুই পরে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। এর পরেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন সুব্রতবাবুর স্ত্রী দীপিকাদেবী। দিন ছয়েক হাসপাতালে চিকিৎসার পরে শনিবার বাড়ি ফিরেছেন তিনি।

ওই এলাকার কংগ্রেস কাউন্সিলর গৌতম বসু বলেন, ‘‘প্রথমে আমার স্ত্রী, তার এক দিন পরেই ছেলেরও জ্বর শুরু হয়। রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গির জীবাণু মেলে। দু’জনেই হাসপাতালে ভর্তি।’’ তিনি জানান তাঁর ওয়ার্ড ও পাশের ওয়ার্ডে অনেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। গারুলিয়ার পুর প্রধান সুনীল সিংহ বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৫ জন আক্রান্ত। পুরসভা যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে অনেকেই বাড়িতে জল জমিয়ে রাখছেন। এটা বন্ধ না হলে ডেঙ্গি দমন করা পুরসভার পক্ষে কঠিন।’’

Death Mosquito Fever Dengue
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy