লকডাউনের মেয়াদ দফায় দফায় বাড়ছে। কিন্তু লোকজনের রাস্তায় নামা ঠেকানো যাচ্ছে না কিছুতেই। দুই জেলাতেই করোনার সংক্রমণ বাড়ছে রোজই। তার ফলে নতুন নতুন এলাকা সিল হচ্ছে।
মঙ্গলবারেও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার শহর এবং গ্রামীণ এলাকায় দু’জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। এলাকা সিল করে দেওয়ার পাশাপাশি আক্রান্তদের পরিজন এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য দফতর। অশোকনগরের আক্রান্ত যুবকের পরিবারের সদস্যদেরও লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। অন্যদিকে ভিড় ঠেকাতে না পেরে গোপালনগরের বাজার এবং হাট আগামী সাত দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
মগরাহাটের নৈনান পঞ্চায়েতের ব্যাসপুর এলাকার করোনার আক্রান্তের সংস্পর্শে আসা ৫১ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মগরাহাট গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ মহম্মদ গওসুল আলম। বছর বত্রিশের ওই যুবক কলকাতায় কাজ করতেন। ১১ এপ্রিল খেলতে গিয়ে পায়ের হাড় ভেঙে যায়। তার পর থেকে বাড়িতেই ছিলেন। বৃহস্পতিবার জ্বর ও শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে রবিবার বিকেলে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর আগে চিকিৎসক তাঁর লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। সেই রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ওই যুবকের বাড়ির এলাকায় পুলিশি টহলদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে ঢোকা-বেরোনো নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়মন্ড হারবারের পারুলিয়া কোস্টাল থানার জয়দেবপুর এলাকার এক যুবকের করোনা-পরীক্ষার রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। বছর আঠাশের ওই যুবক দিন কয়েক আগে জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ডায়মন্ড হারবার স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস রায় জানান, ওই যুবকের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে। তাঁকে এমআর বাঙুর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর সংস্পর্সে আসা ব্যক্তিদের নিভৃতবাসে রাখার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
ভাঙড়ের বামনঘাটা এলাকার বাসিন্দা এক মহিলার করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। ভাঙড়ের ঘটকপুকুর এলাকার একটি ডায়াগনাস্টিক সেন্টারে ইউএসজি করিয়েছিলেন তিনি। ঝুঁকি এড়াতে সেই সেন্টারের পাঁচ জন কর্মীর লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ওই ডায়াগনাস্টিক সেন্টারটি।
বনগাঁ মহকুমার দুই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হওয়ায় পুলিশি ধরপাকড় বেড়েছে। সোম ও মঙ্গলবার বনগাঁ-গোপালনগর এবং গাইঘাটা থানার পুলিশ ১০৮ জনকে গ্রেফতার করেছে। মহকুমার অন্যতম বড় বাজার এবং হাট বসে গোপালনগরে। মঙ্গলবার পুলিশ-প্রশাসন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠক করেন। সিদ্ধান্ত হয় আগামী সাত দিন গোপালনগর বাজার ও হাট সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে। খোলা থাকবে কেবলমাত্র ওষুধের দোকান। এলাকার আক্রান্ত পুলিশ কর্মী যাঁদের সংস্পর্শে এসেছিলেন তেমন ৭৯ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছে স্বাস্থ্য দফতর।