উচ্ছ্বাস: বাড়িতে উমা
তিন ও চার বছরের দুই শিশু ফিরল করোনা-মুক্ত হয়ে।
সন্দেশখালি ১ ব্লকের কালীনগর গ্রামের বাসিন্দা পিঙ্কি বরের তিন বছরের মেয়ে উমার ৫ অগস্ট জ্বর আসে। উমার বাবা সনৎ ওষুধের দোকান থেকে ওষুধ এনে খাওয়ান। পর দিন সকালে ঠিকও হয়ে যায় উমা। তবে পাশের গ্রামে করোনা পরীক্ষার ক্যাম্পে ৭ তারিখ সনৎরা সপরিবার করোনা পরীক্ষা করান। ১১ তারিখ জানা যায়, উমার করোনা হয়েছে।
স্বাস্থ্যকর্মীদের পরামর্শ মতো বর পরিবারের সকলে বাড়ি থেকে বাইরে বেরোতেন না। এ বিষয়ে উমার মা পিঙ্কি বলেন, “উমা সময়ের আগে জন্মেছিল (প্রিম্যাচিওর)। ওকে নিয়ে খুব সতর্ক থাকতাম। করোনা আক্রান্ত শুনে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তবে ওর কোনও উপসর্গ ছিল না ৬ তারিখের পর থেকে। প্রথম ১৪ দিন পর্যন্ত খুব উৎকণ্ঠায় কেটেছে। এইটুকু বাচ্চাকে তো আলাদা রাখা যায় না। তাই আমি মেয়েকে নিয়ে একটা ঘরে ছিলাম। আর ওর বাবা ছেলেকে নিয়ে আর একটা ঘরে ছিলেন।”
সনৎ জানান, ১১-২৩ তারিখ পর্যন্ত বাড়ির বাইরে বেরোনো সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এমনকী, তিনি বাড়িতে যে কাঠের কাজ করতেন ৪ জন শ্রমিককে নিয়ে, তা-ও বন্ধ রেখেছিলেন। তাঁর কাছে কাজ করা রশিদ গাজি, শিবুরুই দাসরা সনৎদের প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে যেতেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে। ২৪ তারিখ থেকে বর পরিবারের সকলে সুস্থ।
মার্চ মাসে সন্দেশখালি ১ ব্লকের দক্ষিণ আখড়াতলার বাসিন্দা শাহানুর গাজি, তাঁর স্ত্রী ও চার বছরের মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে অজমেঢ়শরিফ থেকে বাড়ি ফেরেন। করোনা পরীক্ষায় জানা যায়, আক্রান্ত হয়েছেন শাহানুর। তাঁকে বারাসাতের কোভিড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
স্ত্রী ও মেয়ের করোনা পরীক্ষা করানো হলে চার বছরের মেয়ের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তবে সুমাইয়ার কোনও উপসর্গ ছিল না। স্বাস্থ্য দফতরের গাইড লাইন অনুযায়ী তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে বাচ্চা একা মাকে ছেড়ে থাকতে পারবে না বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর তৎপর হয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মা-মেয়ের থাকার বিশেষ ব্যবস্থা করে। দশ দিন হাসপাতালে থাকার পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে সুমাইয়া।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই দুই বাচ্চার করোনা-জয় খুবই আনন্দের। কারও কোনও উপসর্গ ছিল না। যা বেশ চমকপ্রদ বিষয়। উমাকে তো কোনও চিকিৎসাই করতে হয়নি।’’ এই উদাহরণ অন্যদের মনে সাহস জোগাবে বলে মনে করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy