Advertisement
E-Paper

লকডাউনের পথে হাঁটল অশোকনগরও

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আংশিক লকডাউনের দিনগুলিতে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বাজার-দোকানপাট খোলা থাকবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জুলাই ২০২০ ০৫:১০
অসচেতন: বৃহস্পতিবারও এই ছবি চোখে পড়ল অশোকনগরে। ছবি সুজিত দুয়ারি

অসচেতন: বৃহস্পতিবারও এই ছবি চোখে পড়ল অশোকনগরে। ছবি সুজিত দুয়ারি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমাতে বৃহস্পতিবার থেকে অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকায় শুরু হল লকডাউন। পুরপ্রশাসক প্রবোধ সরকার বলেন, ‘‘৩১ অগস্ট পর্যন্ত শহরে লকডাউন চলবে। রাজ্য সরকারের ৭ দিন এবং আমাদের ৪ দিন, মোট ১১ দিন পূর্ণ লকডাউন থাকবে অগস্ট মাসে। বাকি দিনগুলিতে দুপুর ২টো থেকে লকডাউন চলবে পরের দিন সকাল পর্যন্ত। এই সময়ে কেবল মাত্র ওষুধের দোকান খোলা থাকবে।’’

পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, আংশিক লকডাউনের দিনগুলিতে সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত বাজার-দোকানপাট খোলা থাকবে। যদিও এ দিন দুপুর ২টোর পরেও কিছু দোকানপাট খোলা ছিল। সকালে বাজারে ভিড় হয়েছিল। অনেকেরই মাস্ক ছিল না।

অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভা এলাকায় লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। ইতিমধ্যেই আক্রান্তের সংখ্যা একশো পার হয়ে গিয়েছে। প্রবোধ বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পুরসভা এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১৪৫ জন। অ্যাক্টিভ রোগীর সংখ্যা ৮০ জন। ২ জন মারা গিয়েছেন। বাকিরা চিকিৎসাধীন।’’

সোমবার এলাকার ২১টি ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি, পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেখানে পূর্ণ এবং আংশিক লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পুরপ্রশাসক বলেন, ‘‘লকডাউনের সময়ে মাস্ক পরা এবং শারীরিক দূরত্ব বিধি বজায় রাখার উপরে কড়া নজর রাখা হবে। পুলিশ-প্রশাসনের পাশাপাশি পুরসভার কর্মীরাও প্রয়োজনে পথে নামবেন।’’

বিরোধীরা অবশ্য লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। অশোকনগরের প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক সত্যসেবী কর বলেন, ‘‘কোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে এই পদ্ধতিতে লকডাউন করা হল তা আমরা জানতে চাই। লকডাউনের ফলে মানুষ দুর্ভোগ সহ্য করবেন। এরপরেও মানুষের মনে সংশয় আছে লকডাউনের সাফল্য নিয়ে।’’

এ দিন বামেরা পুরপ্রশাসকের কাছে দাবি করেছেন, শহরে একটি সেফ হাউজ় তৈরির। পাশাপাশি হাসপাতালে লালারস পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানোরও দাবি করা হয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালুর দাবি করা হয়েছে। প্রবোধ বলেন, ‘‘আমরা জানতে পেরেছি, শীঘ্রই অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালটিকে কোভিড হাসপাতাল হিসাবে তৈরি করা হবে। ফলে সেফ হাউজ়ের প্রয়োজন হবে না। তবুও আমরা বিকল্প ব্যবস্থা ভেবে রেখেছি।’’

করোনা সংক্রমণ কমাতে শহর এলাকায় সম্প্রতি কয়েক দিনের লকডাউন করা হয়েছিল। কিন্তু লকডাউন উঠতেই বাজারে, সড়কে ভিড় উপচে পড়ে। অনেকেরই মাস্ক ছিল না। কেউ কেউ আবার গলায় মাস্ক ঝুলিয়ে রেখেছিলেন। ক্রেতা-ক্রেতাদের অনেকে মাস্ক ব্যবহার করছিলেন না। শারীরিক দূরত্ব বিধিও অনেকাংশে মানা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। সে কারণেই ফের লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, স্থানীয় ভাবে এখন করোনা সংক্রমণ হতে শুরু হয়েছে। উপসর্গ না থাকা মানুষজন করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন।

এ দিকে, হাবড়া শহরে বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ৮ দিনের পূর্ণ লকডাউন। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, কেবলমাত্র ওষুধ এবং দুধের দোকান খোলা থাকবে। ব্যাঙ্ক, পোস্টঅফিস, নার্সিংহোম সহ জরুরি পরিষেবা চালু থাকবে। তবে বাজার-হাট, দোকানপাট, স্থানীয় যানবাহন বন্ধ থাকবে। বৃহস্পতিবার সকালে দেখা গেল, শহরে কয়েকটি অস্থায়ী আনাজের দোকানপাট বসেছে। রাস্তার পাশে বসে বা ভ্যানে করে বিক্রেতারা আনাজ বিক্রি করছেন। লোকজন তা কিনছেন। পরে অবশ্য পুলিশ খবর পেয়ে সে সব বন্ধ করে দিয়েছে। পুরপ্রশাসক নীলিমেশ দাস বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শহরে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১১৪ জন। সংক্রমণ কমাতে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেউ লকডাউন ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ-প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ করছে।’’

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)

Coronavirus Lockdown Ashoknagar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy