প্রকৃতিকে তুষ্ট রাখতে গাছ ঘিরে যজ্ঞ গ্রামবাসীদের। নিজস্ব চিত্র
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মোকাবিলায় প্রস্তুত হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন শুরু করে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। কিন্তু এক বছর আগেকার আমপান ঝড়ের সেই আতঙ্ক কাটেনি দেগঙ্গা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষালের আবাদের পাড়ুই জনগোষ্ঠীর। বিদ্যাধরী নদীর পাড়ে বসবাসকারী এই মানুষগুলি ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়ার খবর শোনা ইস্তক আতঙ্কের প্রহর গুণছেন। বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় প্রকৃতিকে শান্ত রাখার জন্য বিদ্যাধরী নদীর পাড়ে যজ্ঞ শুরু করেছেন তাঁরা।
দেগঙ্গা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘোষালের আবাদের পাড়ুই সম্প্রদায়ের মহিলা-পুরুষরা সোমবার দলবদ্ধ হয়ে বিদ্যাধরী নদীর পাড়ে বটতলায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃতিকে শান্ত রাখার যজ্ঞ করলেন। তাঁদের বিশ্বাস, প্রকৃতিকে তুষ্ট করলে আমপান ঘূর্ণিঝড়ে যে ভাবে ক্ষতি হয়েছিল এলাকায়, তার পুনরাবৃত্তি হবে না। প্রকৃতি দেবতাকে শান্ত রাখতে বটবৃক্ষকে ঘিরে এই যজ্ঞের পুরোহিত সাগর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গত বছর এলাকায় যে ভাবে ক্ষতি হয়েছিল সেই আতঙ্ক আমরা আজও ভুলতে পারিনি। এ বারও সকাল হতেই বিদ্যাধরী নদীর জল ফুঁসতে শুরু করেছে। তাই প্রকৃতি যাতে শান্ত থাকে, যাতে আমাদের ক্ষতি না করতে পারে, সেই উদ্দেশ্যে এই যজ্ঞের আয়োজন।’’
তবে প্রকৃতিকে শান্ত রাখার যজ্ঞ, আরাধনাকে কুসংস্কার বলে কটাক্ষ করেছে বিজ্ঞান মঞ্চ। সংগঠনের কর্মী দেবাশিস বসু বলেন, ‘‘অনেক আগে যখন ঝড়ের পূর্বাভাস পাওয়া যেত না, হঠাৎ করে মানুষ বিপদের মুখোমুখি হতেন। তাই বৃক্ষকে পুজো করে শান্ত করার কথা তাঁদের মাথায় আসত। কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এগিয়ে গিয়েছে বলে এখন ঝড়ের এক সপ্তাহ আগে থেকে পূর্বাভাস পাওয়া যায়। মানুষ তাদের বিশ্বাস থেকে বৃক্ষকে পুজো করে থাকেন। কিন্তু এর মধ্যে কোনও বিজ্ঞান নেই । বরংআমরা বলব প্রশাসন যা সতর্কবার্তা দিয়েছে, সেগুলিতে সাধারণ মানুষ গুরুত্ব দিলে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটা রোধ করা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy