বিপত্তি: পাথরপ্রতিমা কুয়েমুড়ি এলাকায় নদী বাঁধে ধস। নিজস্ব চিত্র।
নিম্নচাপের জেরে মঙ্গলবার ভোর থেকে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয়েছে। টানা বৃষ্টির জেরে কাকদ্বীপ মহকুমা এলাকায় বেশ কয়েক জায়গায় মাটির বাঁধে ধস নেমেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, এ ভাবে বৃষ্টি চললে বাঁধ ভেঙে ফের ভাসতে পারে এলাকা।
সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমা ও কাকদ্বীপ, এই চারটি ব্লক নিয়ে কাকদ্বীপ মহকুমা। ইয়াসে ওই চার ব্লকের বহু নদী বাঁধ তছনছ হয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে কিছু বাঁধ পাকাপাকি ভাবে তৈরি করেছে প্রশাসন। কিন্তু অনেক জায়গাতেই কোনও রকমে মাটি ফেলে জল আটকানোর মতো ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, টানা বৃষ্টির জেরে সেই সব বাঁধের মাটি নরম হয়ে গিয়েছে।
ইতিমধ্যে সাগর ব্লকের ঘোড়ামারা পঞ্চায়েতের বেশ কিছু এলাকায় বাঁধে ধসও নেমেছে। ওই এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, টানা বৃষ্টিতে কানায় কানায় ভরে গিয়েছে নদী। ৭-৮ জায়গায় মাটির বাঁধে ধস নেমেছে। পাথরপ্রতিমার জি প্লট পঞ্চায়েতেও একাধিক বাঁধ জল পড়ে নরম হয়ে রয়েছে বলে জানান স্থানীয় মানুষ। জল নেমে গেলেই ধস নামার আশঙ্কা রয়েছে।
জি প্লট পঞ্চায়েতর উপপ্রধান আশিসকুমার বর্মণ বলেন, “বাঁধ ভাঙার আশঙ্কা তো রয়েছেই। পাশাপাশি টানা বৃষ্টির জেরে চাষের জমি ডুবে গিয়েছে। এ ভাবে বৃষ্টি চললে চাষেরও ক্ষতি হবে।” নামখানা ব্লকের মৌসুনি দ্বীপেও একাধিক জায়গায় নদী বাঁধে ধস নেমেছে। এলাকার বাসিন্দা এজাবুল বক্স বলেন, “নারায়ণপল্লি ১৪ সোয়ালের কাছে প্রায় ১০০ ফুট বাঁধ ও ইন্দ্রপল্লির কাছে বেশ কিছুটা বাঁধ বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। দুই জায়গা থেকে মাঝে মধ্যে জলও ঢুকছে। এ ছাড়াও, ৮-১০ জায়গায় ধস নেমেছে। সামনেই ষাঁড়াষাড়ির কটাল। ওই কটালে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।” অভিযোগ, সেচ দফতরকে জানানো হলেও, কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পাথরপ্রতিমা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ রাজ্জাক বলেন, “টানা বৃষ্টিতে কয়েকটি জায়গায় ধস নেমেছে। তবে কোথাও জল ঢোকার খবর পাইনি। তা ছাড়া, সেচ দফতর ৬৯টি জায়গায় বাঁধ মেরামতির কাজ করছে। বাকি ছোট ভাঙনগুলি পঞ্চায়েত থেকে মেরামত করা হচ্ছে।” তবে তিনি বলেন, “বৃষ্টির জল কোনও রকমে আটকানো গেলেও ষাঁড়াষাড়ির কটালে কী হবে, জানি না।”
সুন্দরবন উন্নয়নমন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরার কথায়, “টানা বৃষ্টিতে জলস্তর বাড়ায় বাঁধের ক্ষতি হচ্ছে। বৃষ্টির মধ্যে ঠিকাদারেরা কাজ করতে পারছেন না। ইতিমধ্যে ঘোড়ামারা, মৌসুনি-সহ কিছু এলাকায় বাঁধ ভেঙে জল ঢুকেছে। ষাঁড়াষাড়ির কটালে একাধিক এলাকা নিয়ে আশঙ্কা রয়েছে। সমস্ত বিষয়ে সেচমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। বৃষ্টি কমে গেলে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হবে।” মঙ্গলবার সকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার নানা প্রান্তেও। মিনাখাঁর জয়গ্রাম, ধুতুরদহ এলাকা জলমগ্ন হয়ে গিয়েছে। সাড়ে পাঁচশো বিঘে আমন ধান জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রের খবর। হাড়োয়ার শালিপুর, ব্রাহ্মণচক-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় আনাজ খেত ডুবে রয়েছে জলের তলায়। হিঙ্গলগঞ্জের বিশপুর, মামুদপুর এলাকায় বেশ কিছু চিংড়ির ভেড়ি জলমগ্ন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy