Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কাকদ্বীপের বাজারে ‘দাক্ষিণাত্যের ইলিশ’

কাকদ্বীপে ‘দাক্ষিণাত্যের ইলিশ’! কাকদ্বীপের ‘কেন্দ্রীয় নোনা জলজীব পালন ও অনুসন্ধান সংস্থা’র (সিবা) পরামর্শ মতো পরীক্ষামূলক ভাবে পুকুরে ‘মিল্ক ফিশ’ চাষ করেছিলেন দক্ষিণ গোবিন্দপুরের মৎস্যজীবী আশিস জানা।

দাক্ষিণাত্যের ইলিশ।—নিজস্ব চিত্র।

দাক্ষিণাত্যের ইলিশ।—নিজস্ব চিত্র।

শান্তশ্রী মজুমদার
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:২৩
Share: Save:

কাকদ্বীপে ‘দাক্ষিণাত্যের ইলিশ’!

কাকদ্বীপের ‘কেন্দ্রীয় নোনা জলজীব পালন ও অনুসন্ধান সংস্থা’র (সিবা) পরামর্শ মতো পরীক্ষামূলক ভাবে পুকুরে ‘মিল্ক ফিশ’ চাষ করেছিলেন দক্ষিণ গোবিন্দপুরের মৎস্যজীবী আশিস জানা। যে মাছ মৎস্যবিজ্ঞানীদের কাছে ‘ডেকান হিলশা’ বা ‘দাক্ষিণাত্যের ইলিশ’ হিসেবেই পরিচিত। শনিবার সেই মাছই কাকদ্বীপের পাইকারি বাজারে ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হল। ‘সিবা’র বিজ্ঞানীদের দাবি, এই মাছ মৎস্যজীবীদের লগ্নি দ্বিগুণ করার ক্ষমতা রাখে। সেই কারণে ‘পাইলট প্রকল্প’ হিসেবে ওই পুকুরে মাছ চাষ করা হয়েছে। মাছ নিয়ে নানা গবেষণা করে চলেছেন ‘সিবা’র বিজ্ঞানীরা।

মিল্ক ফিশ প্রকল্পের আধিকারিক তথা মৎস্যবিজ্ঞানী গৌরাঙ্গ বিশ্বাস জানান, মিল্কফিশ মূলত ফিলিপিন্সের মাছ। এ দেশের দক্ষিণ ভারতেও মেলে। সেখান থেকে মাছ এনে এখানকার পুকুরে চাষ করা হয়েছে। চারা জন্মানোর পর প্রায় ২ ইঞ্চি বড় করে তোলা হয়েছে ওই পুকুরেই। এতে প্রায় ৪০ দিন সময় লাগে। গৌরাঙ্গবাবুর দাবি, ‘‘দুই ২৪ পরগনায় নোনা জলের ভেড়িগুলিতে এই মাছ নিঃসন্দেহে লাভজনক হতে পারে।’’ বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র, কেরলের সমুদ্র উপকূলে ডিম পাড়ার পর একটু বড় হলেই বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ইলিশের মতোই মিল্ক ফিশ মোহনা থেকে উজানে রওনা হয়। ইলিশের মতো দীর্ঘ পথ পাড়ি না দিলেও নদী বেয়ে প্রায় ১০ কিলোমিটার পর্যন্ত উজানে আসে। ৫০০ গ্রাম পর্যন্ত বড় হতে পারে এই মাছ। মিঠে জলের দিকে আসে বলে এই মাছ মিষ্টি জলেও চাষ করা যায়। তবে সে ক্ষেত্রে এর আকার একটু ছোট হয়। আঁশ এবং কাঁটাযুক্ত এই মাছের খাদ্যগুণও অনেকটাই বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।

মৎস্যজীবী আশিসবাবু বছর দশেক মাছ চাষ করছেন। তিনি বলেন, ‘‘সিবা থেকে চারা দিয়েছিল। বড় করেছি। কেজিপ্রতি প্রায় ৭০ টাকা খরচ হয়েছে। পাইকারি বাজারে ১৫০ টাকা কিলো দরে বিক্রি হয়েছে।’’ আশিসবাবুর অভিজ্ঞতা বলছে, নোনাজলে লবণের পরিমাণ কমবেশি হলে তা সহজেই সহ্য করে নিতে পারে এই প্রজাতির মাছ। সেই কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশে এই মাছের বেঁচে থাকার হারও বেশি। বাজারে বিক্রি করার আগে দক্ষিণী ইলিশের দু’টি পদ রান্না করে পাড়া প্রতিবেশীদের খাইয়েছিলেন আশিসবাবু। তাঁর দাবি, ‘‘ইলিশের মতো না হলেও মাছ বেশ সুস্বাদু।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hilsa Fish
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE