Advertisement
E-Paper

ভিলেন খুচরো, মেনু থেকে বাদ গেল দই

ছেলের বিয়ের জন্য হাবরার একটি মিষ্টির দোকানে দইয়ের অর্ডার দিয়েছিলেন গাইঘাটার বাসিন্দা জগদীশ বিশ্বাস। নোট বাতিলের খবর শুনে তড়িঘড়ি ছুটে গেলে মিষ্টির দোকানের মালিক জানিয়ে দেন, পুরনো নোট চলবে না। শেষে বিয়ের মেনু থেকে বাদ পড়েছে দই।

সীমান্ত মৈত্র

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৫

ছেলের বিয়ের জন্য হাবরার একটি মিষ্টির দোকানে দইয়ের অর্ডার দিয়েছিলেন গাইঘাটার বাসিন্দা জগদীশ বিশ্বাস। নোট বাতিলের খবর শুনে তড়িঘড়ি ছুটে গেলে মিষ্টির দোকানের মালিক জানিয়ে দেন, পুরনো নোট চলবে না। শেষে বিয়ের মেনু থেকে বাদ পড়েছে দই।

ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের এক বধূর বাপের বাড়ি বনগাঁর খয়রামারি এলাকায়। বাপের বাড়ি থেকে ফেরার সময়ে তিনি নিয়ম করে রসগোল্লা এবং কাঁচাগোল্লা নিয়ে যেতেন। কিন্তু খুচরোর অভাবে এই প্রথম তাতে ছেদ পড়েছে। বনগাঁ এবং হাবরার মিষ্টির খ্যাতি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা ছাড়িয়ে এখন বৃহত্তর কলকাতাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এই দুই শহরের বিভিন্ন মিষ্টির দোকান থেকে জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বিয়েবাড়ির মিষ্টি যায়। বনগাঁর কাঁচাগোল্লা, রসগোল্লা এবং হাবরার দই কেনার জন্যও মিষ্টির দোকানগুলিতে ভিড় লেগেই থাকে। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিল করার পরে সেই মিষ্টির দোকানগুলি মাছি তাড়াচ্ছে বললেই চলে। নগদ টাকার অভাবে বেশ কয়েকটি বিয়ে বাড়ির অর্ডার বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

হাবরা শহরের মিষ্টি ব্যবসায়ী ভক্ত ঘোষ জানালেন, অন্যান্য বছর শীতের মরসুমে নলেন গুড়ের কাঁচাগোল্লার প্রচুর চাহিদা থাকে। কিন্তু এ বার পুরো অন্য ছবি। ভক্তবাবুর ছেলে শঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের দোকানে এক কিলো দইয়ের দাম ১৫০ টাকা এবং এক কিলো কাঁচাগোল্লার দাম ২৫০ টাকা। বেশিরভাগ ক্রেতা এসে ৫০০ এবং ১০০০ টাকা দিতে চাইছেন। খুচরো না থাকায় বাধ্য হয়ে তাঁদের ফিরিয়ে দিতে হচ্ছে।’’ ভক্তবাবু এবং শঙ্করবাবু জানান, বিয়ে বাড়ির অর্ডারের ক্ষেত্রে কয়েক জন পরিচিত মানুষের টাকা বাকি রাখা হচ্ছে। কিন্তু বাকি সব অর্ডার বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। গোপালনগরের মিষ্টি ব্যবসায়ী শিবু চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘২৫ বছর ব্যবসা করছি। এ রকম অবস্থায় আগে কখনও পড়িনি। ক্রেতা অনেক কমে গিয়েছে।’’ শিবুবাবু জানান, বেশির ভাগ ক্রেতা পুরনো ৫০০ টাকার নোট দিতে চাইছেন। নগদের সমস্যার জন্য কয়েকটি বিয়েবাড়ির অর্ডার বাতিল করা হয়েছে। একই সমস্যার কথা জানিয়েছেন বনগাঁ শহরের মিষ্টি ব্যবসায়ী দিলীপ দত্ত-সহ কয়েক জন মিষ্টি ব্যবসায়ী। তাঁদের আক্ষেপ, খুচরো না থাকায় দৈনিক বিকিকিনি অনেক কমে গিয়েছে। কয়েক জন মিষ্টি ব্যবসায়ী আবার জানিয়েছেন, নগদের অভাবে গরু, মোষের দেখভালেও সমস্যা হচ্ছে।

তবে এর মধ্যেই অবশ্য বাড়ির অন্দরে বসে মুচকি হাসছেন অনেক গৃহবধূ। কারণ, তাঁদের স্বামীরা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তাঁদের কথায়, ‘‘এত দিন বাড়িতে কড়া পাহারায় রাখলেও বাইরে গিয়ে দোকানে ঠিক মিষ্টি খেয়ে নিত। আপাতত কিছু দিনের শান্তি।’’

wedding season Demonetization
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy