Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

মশা মারতে নড়ে বসছে না কেউ, অভিযোগ বয়রায়

বাগদার বয়রা উত্তরপাড়া গ্রামে গত বছর জ্বরে মারা গিয়েছিলেন চারজন। পাশের কুলনন্দপুর, পাঁচবেড়িয়া-সহ আরও কয়েকটি গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন জ্বরে।

 সতর্কতা: দিনের বেলাতেও টাঙানো হচ্ছে মশারি। নিজস্ব চিত্র

সতর্কতা: দিনের বেলাতেও টাঙানো হচ্ছে মশারি। নিজস্ব চিত্র

নির্মাল্য প্রামাণিক
বাগদা শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৮ ০১:১৭
Share: Save:

গ্রামের রাস্তার দু’পাশে ঘন আগাছার জঙ্গল, কচুবন গজিয়েছে। পুকুর, ডোবাগুলিতে পচানো হচ্ছে পাট। বিভিন্ন বাড়ির মধ্যে জমে আছে বৃষ্টির জল। রাস্তার পাশে নয়ানজুলি বর্ষার জল জমে রয়েছে। সেখানে থিকথিক করছে মশার ডিম। কোথাও দাঁড়িয়ে থাকলে দিনের বেলাতেই ছেঁকে ধরছে মশা।

বাগদার বয়রা উত্তরপাড়া গ্রামে গত বছর জ্বরে মারা গিয়েছিলেন চারজন। পাশের কুলনন্দপুর, পাঁচবেড়িয়া-সহ আরও কয়েকটি গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই মানুষ আক্রান্ত হয়েছিলেন জ্বরে। এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল জ্বর ও ডেঙ্গির আতঙ্ক। বয়রা উত্তরপাড়ার হরিতলায় বসাতে হয়েছিল বিশেষ স্বাস্থ্যশিবির। গ্রামে সারা দিন দাঁড়িয়ে থাকত দু’তিনটি অ্যাম্বুল্যান্স। তা সত্ত্বেও এ বছর এলাকা পরিষ্কার করার তাগিদ নেই পঞ্চায়েতের বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। বাগদার বিডিও ইরফান হাসমি অবশ্য বলেন, ‘‘শুধু বয়রা নয়, বাগদার সব ক’টি পঞ্চায়েতেই ব্লক থেকে বিভিন্ন দল গঠন করে বাড়ি বাড়ি লোক পাঠানো হচ্ছে। যে এলাকায় ডেঙ্গি দেখা গিয়েছিল সেখানে পঞ্চাশটি বাড়ি চিহ্নিত করে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কাজ ও প্রচার চালানো হচ্ছে। র‌্যাপিড অ্যাকশন টিমও তৈরি রাখা হয়েছে।’’

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ বছর বর্ষা আসতেই আবার শুরু হয়েছে মশার উৎপাত। আর তাতেই আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন এলাকার মানুষ। ঘরের মধ্যে দিনের বেলাতেই মশারি টাঙিয়ে রাখছেন অনেকে।

গত বছর জ্বরে মারা গিয়েছেন এই গ্রামেরই অভিজিৎ প্রামাণিক। তাঁর দাদা ইন্দ্রজিৎ প্রামাণিক বলেন, ‘‘এ বছর মশার উৎপাত আরও বেশি। দিনের বেলাতেই ঘরে মশারি টাঙিয়ে রাখছি। মেয়ে সবে জ্বর থেকে উঠল। সে মশারির মধ্যে বসেই পড়াশোনা করছে। পঞ্চায়েত থেকে এখনই ব্যবস্থা না নিলে গত বছরের আতঙ্ক আবার ফিরে আসবে।’’ গ্রামের বাসিন্দা স্বপন মণ্ডল জানান, বর্ষা আসতেই গ্রামে জ্বর শুরু হয়েছে। তিনি ৭-৮ দিন জ্বরে ভুগেছেন। এখনও তাঁর পরিবারের তিনজন জ্বরে ভুগছেন। দিনের বেলাতেও মশারির মধ্যে শুতে হয়। কুড়ি দিন ধরে জ্বরে ভুগছেন সাজেদা বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘গত বছর গ্রামে শিবির করে বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছিল। এ বছর সেই ব্যবস্থা নেই বলে পয়সার অভাবে রক্ত পরীক্ষা করাতে পারিনি।’’

গ্রামের ঝোপ-জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করার ব্যাপারে পঞ্চায়েতের কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি বলেই অভিযোগ গ্রামবাসীদের। ছড়ানো হয়নি ব্লিচিং বা মশা মারার তেলও।

তবে সপ্তাহখানেক আগে ব্লক অফিস থেকে দু’জন কর্মী এলাকায় এসে খোঁজখবর করে গিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ। ব্যক্তিগত উদ্যোগেও নিজেদের বাড়ির জঙ্গল পরিষ্কার করছেন অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Health Disease
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE