ডায়মন্ড হারবার শহরে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমাতে কঠোর পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে পুরসভা ও প্রশাসন। পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডে জনসংখ্যা প্রায় ৪৫ হাজার। ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজার ছাড়াও আরও কয়েকটি ছোট বাজার বসে। সেখানে প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করতে পুরসভা ও প্রশাসন থেকে প্রচার চালানোর পাশাপাশি দোকানিদের উপরে নজরদারি চালানো হত আগে। লিফলেট বিলি, মাইকে প্রচার চলত। জরিমানাও করা হত। কয়েক মাস ধরে সেই কাজে ঢিলেমি দেখা যাচ্ছিল বলে জানালেন পুরবাসী। এই পরিস্থিতিতে প্লাস্টিকের ব্যবহার ফের বেড়েছে। পথঘাট, নিকাশি নালা ভরে যাচ্ছে প্লাস্টিকের স্তূপে। প্লাস্টিক উড়ে পড়ছে নদীর জলেও। তাতে দূষণ ছড়াচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে প্লাস্টিক, থার্মোকলের ব্যবহার কমাতে জোরকদমে নেমেছে পুরসভা। তবে দোকানিরা জানালেন, বেশ কিছু খদ্দের ব্যাগ ছাড়াই বাজারে আসেন। বাধ্য হয়ে তাঁদের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ দিতে হয়। সকালে বহু মানুষ নদীর পাড়ে প্রাতর্ভ্রমণ সেরে ফেরার পথে প্লাস্টিকের ব্যাগে বাজার নিয়ে বাড়িতে ঢোকেন। প্লাস্টিকের ক্যারিবাগের দাম কম হওয়ায় দোকানিরাও তা সহজে দিয়ে দেন। তবে ইদানীং অনেক ব্যবসায়ী জানালেন, পুরসভার নিষেধাজ্ঞার জেরে তাঁরা প্লাস্টিক ব্যবহার করছেন না।
ডায়মন্ড হারবার স্টেশন বাজারের দোকানি বিমল দাসের কথায়, ‘‘আমরাও চাই, ক্রেতারা ব্যাগ নিয়ে বাজার করতে আসুন। কিন্ত কিছু ক্রেতা খালি হাতে এলে তাঁদের ফেরাতে পারি না। এঁদের জন্যই বাধ্য হয়ে প্লাস্টিকের ক্যারিবাগ ব্যবহার করতে হয়।’’
পুরপ্রধান প্রণব দাস বলেন, ‘‘পলিথিন ব্যবহারের বিষয়ে সাধারণ মানুষের একটু সচেতন হওয়া উচিত। তাঁরা ব্যাগ নিয়ে বাজারে গেলে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসবে। আগে নজরদারি চালিয়ে অনেক কমে গিয়েছিল এর ব্যবহার। এ বার ফের এই কাজে জোর দেওয়া হচ্ছে। দোকানিদের বলা হয়েছে, ১২০ মাইক্রোনের নীচে পলিথিন ব্যবহার করলে জরিমানা করা হবে।’’ তিনি জানান, সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে পলিথিনের ব্যাগ, প্লাস্টিকের গ্লাস, কাপ ও থালা বাজেয়াপ্ত
করা হয়েছে। লাগাতার অভিযান চালানো হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরের মানুষ যেমন পলিথিন ব্যবহার করছেন, তেমনই গ্রামীণ এলাকা থেকে সারা দিনে হাজার হাজার মানুষ ডায়মন্ড হারবার শহরে এসে পলিথিন ফেলে যাচ্ছেন। পুরসভার কর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা প্লাস্টিক সাফাই অভিযানে যোগ দিচ্ছেন। এ ছাড়াও, মাইকে প্রচার করা হচ্ছে, লিফলেট বিলি করা হচ্ছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)