Advertisement
E-Paper

ইউনেস্কোর স্বীকৃতিতে উজ্জ্বল শারদোৎসব, প্রতিমাশিল্পীরা থেকে গেলেন আঁধারেই

দুর্গাপুজোর অনুদান হিসেবে রাজ্য সরকার ক্লাবগুলিকে ৬০ হাজার টাকা অনুদানের কথা ঘোষণা করেছে। ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানেও আড়ম্বরে খামতি রাখা হয়নি।

নবেন্দু ঘোষ 

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৯:৩৩
প্রস্তুতি: প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পী। হিঙ্গলগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

প্রস্তুতি: প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত শিল্পী। হিঙ্গলগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র

তাঁদের ভূমিকা ছাড়া দুর্গাপুজো সম্ভবই নয়। এ বছর আবার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে এই উৎসব। অথচ, মৃৎশিল্পীদের পরিস্থিতি বিশেষ পরিবর্তন হল না।

দুর্গাপুজোর অনুদান হিসেবে রাজ্য সরকার ক্লাবগুলিকে ৬০ হাজার টাকা অনুদানের কথা ঘোষণা করেছে। ইউনেস্কোকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানেও আড়ম্বরে খামতি রাখা হয়নি। সে সব দেখে সুদিনের অপেক্ষায় দিন গুনছেন প্রতিমাশিল্পীরা। তাঁদের ব্যবসার হাল করোনাকালে বেশ খারাপ পর্যায় চলে গিয়েছে মাটি ও কাঁচামালের দাম বাড়ায়। কিন্তু তুলনায় প্রতিমার দাম বাড়েনি। শিল্পীদের প্রশ্ন, তাঁরা কি কখনও সরকারি সাহায্য পাবেন?

হাসনাবাদ ও হিঙ্গলগঞ্জ এলাকার প্রায় ৫৫ জন প্রতিমাশিল্পীকে নিয়ে গড়ে উঠেছে রাধাকৃষ্ণ শিল্পী সংগঠন। সংগঠনের তরফে সুনীল মণ্ডল বলেন, “পুজোর অনুদান ঘোষণার পরে অনেক ক্লাব প্রতিমার বরাত দিয়েছে। কিন্তু তাঁদের পুজো ছোট আকারের। তাঁরা প্রতিমাও চাইছেন ১৪-১৬ হাজারের মধ্যে।”

সুনীল জানান, প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের দাম এ বছর অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু প্রতিমার দাম সে ভাবে বাড়ানো যাচ্ছে না। স্থানীয় বিধায়ক দেবেশ মণ্ডলের সঙ্গে দেখা করে সরকারি অনুদান পাওয়ার দাবি জানাতে গিয়েছিলেন সুনীলেরা। তবে দেখা মেলেনি।

হিঙ্গলগঞ্জের দক্ষিণ বিশপুরের প্রতিমাশিল্পী সুজয় মণ্ডল বলেন, “গত দু’ বছরে মাত্র ৪টি দুর্গাপ্রতিমা বিক্রি হয়েছে। এ বার ৭টি প্রতিমার বায়না হল। তবে প্রতিমার তৈরির খরচ এখন অনেকটাই বেড়েছে।”

হাসনাবাদের বরুণহাটের শিল্পী রমেন দাসের কথায়, এ বার ৯টি প্রতিমা করছি। তবে ক্লাবগুলি কম দামের প্রতিমা চাওয়ায় ১০ হাজার টাকার প্রতিমাও করতে হচ্ছে। বেশিরভাগ প্রতিমার দামই রাখতে হচ্ছে ১৫ হাজারের মধ্যে। সব মিলিয়ে হয় তো ৪০ হাজার মতো লাভ থাকবে। আক্ষেপের সুরে রমেন বলেন, “দুর্গাপুজো আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেও মূর্তি গড়ে আমাদের সারা বছর সংসার চলে না। এই এলাকায় কালীপুজোর চল বেশি। তাই কালীমূর্তি গড়েই কোনও রকমে বেঁচে আছি।”

হিঙ্গলগঞ্জ, হাসনাবাদ এলাকার অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী ৯ নম্বর সান্ডেলেরবিল এলাকার সুশান্ত বিশ্বাস এ বার ১০টি প্রতিমার বায়না পেয়েছেন। শেষলগ্নে যদি কেউ প্রতিমা নিতে আসেন, সেই আশায় ১৬টি প্রতিমা গড়েছেন। তিনি বলেন, “করোনার আগে প্রতিমা ৩০-৩২ হাজারেও বিক্রি করেছি। এখন সর্বোচ্চ দাম ২০-২৫ হাজার। লাভ কমে যাওয়ায় সংসার টানতে কেটারিংয়ের ব্যবসা করি।”

শিল্পীদের জন্য কোনও আশার কথা শোনাতে পারেননি বিধায়ক দেবেশ। তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য তো আর পুজোর সংখ্যা বেড়ে যায়নি যে প্রতিমা বেশি বিক্রি হবে। শিল্পীদের ভাবতে হবে, তাঁরা যে দুর্গাপ্রতিমা তৈরি করেন, তা ঘিরে কত আনন্দ ও উদ্‌যাপন। শিল্পীরা কতটা অর্থ পেলেন, তা নিয়ে না ভেবে দুর্গাপুজো যে আমাদের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দিল, এ জন্য তাঁদের গর্ব বোধ করা দরকার।”

durga puja UNESCO Idol Makers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy