রাজ্যের আরও কয়েকটি পুরসভার পাশাপাশি এ বার বনগাঁতেও বাড়ি বাড়ি বর্জ্য সংগ্রহে প্রতিদিন ১ টাকা করে জঞ্জাল-কর নেওয়া শুরু হয়েছে চলতি মাসের গোড়া থেকে। প্রতিটি বাড়িতে পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য ফেলার জন্য দু’টি করে বালতিও দেওয়া হয়েছে। কর নেওয়ার পুর-পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে বিরোধী দলগুলি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন মোতাবেক এবং কেন্দ্র-রাজ্য সরকার ও জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে পুর এলাকার বাড়ি বাড়ি থেকে নিয়মিত আবর্জনা সংগ্রহের কাজ শুরু হয়েছে। আবর্জনা রাস্তার পাশে, নিকাশি নালায় বা যত্রতত্র ফেলা চলবে না বলে নির্দেশও জারি করা হয়েছে। শহরকে দূষণমুক্ত ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে এই পদক্ষেপ। সেই কারণেই প্রতি বাড়ি থেকে প্রতিদিন এক টাকা করে নেওয়া হচ্ছে।
পুরপ্রধান গোপাল শেঠ বলেন, ‘‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য প্রত্যেক পরিবারপিছু দৈনিক ১ টাকা হিসেবে মাসে ৩০ টাকা করে জঞ্জাল-কর নেওয়া হচ্ছে মার্চ মাসের গোড়া থেকে। ‘‘নির্মলসাথী-র মহিলারা ওই আবর্জনা সংগ্রহের জন্য দিনে ২০০ টাকা করে পান। পরিষেবা-কর থেকে যে টাকা উঠবে, তা থেকে অতিরিক্ত ১০ শতাংশ ওই মহিলাদের দেওয়া হবে। বাকি টাকা শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে ব্যবহার করা হবে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা সংগ্রহের জন্য ই-পজ় যন্ত্র কেনা হয়েছে। পুরসভার নির্মলসাথী-র মহিলারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে রসিদ দিয়ে ওই যন্ত্রের মাধ্যমে টাকা সংগ্রহ করবেন। পুরবাসী এটিএম কার্ড, ফোন পে, গুগুল পে’র মাধ্যমে বা নগদেও কর দিতে পারবেন। এ নিয়ে লিফলেটে প্রচারও চলছে। আদালত ও সরকারি নির্দেশ মতো যত্রতত্র আবর্জনা ফেললে জরিমানা করা হবে বলেও শহরবাসীকে সতর্ক করা চলছে।
জঞ্জাল-কর প্রত্যাহারের দাবিতে ইতিমধ্যেই সিপিএমের পক্ষ থেকে পুরসভায় স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়। দলের বনগাঁ শহর এরিয়া কমিটির সদস্য সম্পাদক পীযূষকান্তি সাহা বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছি। আমরা পুরসভাকে কর দিই। তারপরেও অতিরিক্ত জঞ্জাল-কর কেন চাপানো হচ্ছে? পুরবাসীর দুর্দশা আরও বাড়বে।’’
পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর দেবদাস মণ্ডল বলেন, ‘‘মানুষ তো এমনিতেই পুর-পরিষেবার জন্য কর দেন। তা হলে আবার নতুন করে কেন আবর্জনা নেওয়ার জন্য অতিরিক্ত কর দিতে হবে? এমনিতেই মূল্যবৃদ্ধির কারণে মানুষের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)