বাড়িতে একাই থাকতেন তিনি। দিন দু’য়েক ধরে পাড়ায় দেখা মিলছিল না। বাড়ির গ্রিলের দরজাটি ভিতর দিয়ে তালা বন্ধ। সন্দেহ হওয়ায় এলাকার কয়েকজন বাড়িতে গিয়ে জানলা দিয়ে দেখেন, ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত দেহ!
সোমবার বসিরহাটের কলীপাড়ার এই ঘটনায় মৃতের নাম শুভ্রজিৎ সাধু (৪২)। তিনি গজ-ব্যান্ডেজের ব্যবসা করতেন। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
তবে এটি যে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু, তা মেনে নিতে নারাজ এলাকার বাসিন্দারা। দেড় বছরে কালীবাড়ি পাড়া ও তার সংলগ্ন এলাকায় এই নিয়ে দুই শিক্ষিকা-সহ পাঁচজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, পরিকল্পনা মাফিক তাঁদের খুন করেছে জমি মাফিয়াদের সঙ্গে জড়িত দুষ্কৃতীরা। পরে বেশ কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতারও করেছিল। শুভ্রজিতবাবুর মৃত্যু নিয়েও তাই শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। অনেকটা জায়গা নিয়ে একতলা বাড়ির একাই মালিক ছিলেন শুভ্রজিৎবাবু। দোতলা তৈরি হচ্ছিল। তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ব্যবসাও ভাল চলছিল। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কেন তিনি আত্মহত্যা করবেন? সঠিক তদন্তের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পাঁচ বছর আগে শুভ্রজিতবাবুর বাবা মারা যান। চার মাস আগে বাড়ির থেকে তাঁর মায়ের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর তিন বোনের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। শুভ্রজিতবাবু বিয়ে করেননি। প্রতিবেশীরা জানান, জমিজমা নিয়ে আলোচনা করতে মাসখানেক আগে তিনি বড়দির বাড়িতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে শুক্রবার দুপুরে বাড়ি ফেরেন। তারপর থেকে কেউ আর তাঁকে বাড়ি থেকে বেরোতে দেখেননি।
মৃতের দিদি বলেন, ‘‘সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে ভাইয়ের উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল। সে কারণেই কলকাতায় এসেছিলেন ভাই। আমাদের সঙ্গে কথাও হয়। তার পর কী হল বুঝতে পারছি না।’’
পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট না এলে এখনই কিছু বলা যাবে না। গ্রিলের দরজায় বাইরে থেকে তালা ঝুলছিল ঠিকই, কিন্তু বাড়ির ভিতরের দরজাগুলি খোলা ছিল বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। সব দিক খোলা রেখে তদন্ত এগোচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।