Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
জ্বর নিয়ে জেরবার উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা

স্বাস্থ্য শিবিরে রক্তের নমুনা সংগ্রহ শুরু

সেই ক্ষোভ সামাল দিতেই শনিবার নড়েচড়ে বসেছেন ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। হাবরা ১ বিডিও শুভ্র নন্দী ও অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রাহুল মজুমদার এ দিন সকালে ওই দু’টি শিবিরে যান।

উপচে পড়ছে ভিড়। নিজস্ব চিত্র

উপচে পড়ছে ভিড়। নিজস্ব চিত্র

সীমান্ত মৈত্র
হাবরা শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০১৭ ০২:৫৬
Share: Save:

ঘণ্টা দু’য়েক রক্ত পরীক্ষার লাইনে মেয়ে রিফাকে নিয়ে ফিরতে হয়েছিল বাবা মসিউল মণ্ডলকে। শনিবার অবশ্য হাবরা ১ ব্লকের মারাকপুর উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শিবিরে রক্ত পরীক্ষা হয়েছে পাঁচ বছরের মেয়ের।

মসিউলের মতো বহু মানুষ রক্তপরীক্ষা করাতে না পেরে ফিরেছিলেন শুক্রবার। তাঁদের অনেকের পরীক্ষা হয়েছে এ দিন। মারাকপুর ও কুমড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে জ্বরে আক্রান্তদের জন্য স্বাস্থ্য শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রশাসনের ঘোষণার পরেও শুক্রবার শিবিরগুলি থেকে কার্যত কোনও রক্তের নমুনা নেওয়া হয়নি।

সেই ক্ষোভ সামাল দিতেই শনিবার নড়েচড়ে বসেছেন ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। হাবরা ১ বিডিও শুভ্র নন্দী ও অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) রাহুল মজুমদার এ দিন সকালে ওই দু’টি শিবিরে যান। বিডিও বলেন, ‘‘দু’টি শিবিরে ২০০টি করে রক্ত পরীক্ষার কিট পাঠানো হয়েছিল। সোমবার রিপোর্ট পাওয়া যাবে। যাঁদের রক্তে ডেঙ্গি পজেটিভ মিলবে, তাঁদের শনাক্ত করে উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’’ তিনি জানান, প্রত্যেকের যোগাযোগের নম্বর রেখে দেওয়া হচ্ছে। শুক্রবার দু’টি স্বাস্থ্য শিবিরে একজন চিকিৎসকই অর্ধেক বেলা করে রোগী দেখেছেন। এ দিন দু’টি শিবিরের জন্য আলাদা আলাদা দু’জন চিকিৎসকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

তবে জ্বরে আক্রান্তেরা এ দিন প্রশ্ন তুলেছেন, সোমবার রিপোর্ট পাওয়ার আগে যদি ভাল-মন্দ কিছু একটা ঘটে যায়, তার দায়িত্ব কি স্বাস্থ্য দফতর নেবে?

মারাকপুরে স্বাস্থ্য শিবির চলাকালীন এ দিন গোলমাল বাধে। কিছু মানুষ দাবি করেন, শুধু ডেঙ্গির জন্য রক্তের নমুনা নিলেই চলবে না। সুগার, লিপিড প্রোফাইল-সহ বিভিন্ন রোগের জন্যও পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। পরে অবশ্য স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা গিয়ে বাসিন্দাদের বুঝিয়ে শান্ত করেন।

শুক্রবার স্থানীয় জিওলডাঙা থেকে ৬ জন জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে নিয়ে স্বাস্থ্য শিবিরে গিয়েছিলেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্য তানিয়া মণ্ডল। তাঁদের রক্ত পরীক্ষা না হওয়ায় তিনি ক্ষোভ উগড়ে দেন। এ দিন ১২ জন রোগী নিয়ে শিবিরে গিয়েছিলেন তানিয়াদেবী। সকলের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করায় স্বস্তিতে তিনি।

ব্লকের সাতটি পঞ্চায়েতের মধ্যে পৃথিবা, মছলন্দপুর ২, বেড়গুম ১, কুমড়া এলাকায় জ্বরের প্রকোপ ছড়িয়েছে। ইতিমধ্যে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ব্লকে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। দু’জনের মৃত্যুর শংসাপত্রে ‘ডেঙ্গি’ লেখা আছে।

সর্বত্র ক্ষোভ, জঙ্গল সাফাই হচ্ছে না। মশা মারার তেল ছড়ানো হচ্ছে না। শনিবার থেকে অবশ্য একশো দিনের কাজ প্রকল্পে শ্রমিক লাগিয়ে জঙ্গল সাফাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে প্রশাসনের পক্ষে।

কুমড়া পঞ্চায়েতের কুমড়া, রুদ্রপুর, কাশীপুর এলাকায় জ্বর ছড়িয়েছে বেশি। ওই এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, জ্বরে হলেই মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। প্রথম দিতে তারা দোকানে ওষুধ বা হাতুড়ের ওষুধ খেলেও এখন জ্বর হলে স্বাস্থ্য শিবিরে যাচ্ছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE