গঙ্গাসাগর মেলা থেকে সংগ্রহ করা বর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে পুতুল, বোতল, ঘর সাজানোর নানা জিনিস। কয়েক বছর ধরেই মেলার বর্জ্যকে এ ভাবেই পুনরায় ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে এক বেসরকারি সংস্থা। এ বার ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে বলে সংস্থা সূত্রের খবর। শীঘ্রই বর্জ্য থেকে তৈরি সেই সব জিনিস বিভিন্ন মেলায় বিক্রি করা হবে।
গঙ্গাসাগরে পুণ্যস্নান শেষ হয়েছে দিন কয়েক আগে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীও ফিরে গিয়েছেন। তীর্থে এসে তাঁদের ফেলা যাওয়া প্লাস্টিকের প্যাকেট ও পলিথিন সাফ করে দিয়েছে সাগর ব্লক প্রশাসন।
সরকারি ভাবে মেলা শেষ হয়েছে ১৬ জানুয়ারি। তারপরে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ভাঙা মেলা চলে। মেলা শেষে কপিলমুনি মন্দিরের উল্টো দিকের ক্যাম্প এলাকাটি প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্যে ভরে ছিল। ব্লক প্রশাসন জানুয়ারি মাসের শেষ থেকে প্রায় চার দিন ধরে সমুদ্রতট সাফাই অভিযানে নামে। অভিযানে যোগদান করেন প্রায় ৭০০ কর্মী। প্রশাসন সূত্রের খবর, গঙ্গাসাগর মেলা শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত ১১১১ মেট্রিক টন বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ করা হয়েছে, যার মধ্যে প্লাস্টিক ২২২ মেট্রিক টন।
প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সেই বর্জ্যকেই পরিবেশ বান্ধব পণ্যে রূপান্তরের কাজ করছে ওই সংস্থা। আবর্জনার বাক্সে ফেলে দেওয়া কাপড়, প্লাস্টিক, খাবারের প্যাকেট, জলের বোতল এবং অন্যান্য জিনিসপত্র সংগ্রহ করে প্রাত্যহিক জীবনে ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিস বানানোর চেষ্টা চলছে। সংস্থা সূত্রের খবর, বর্জ্য থেকে তৈরি হবে রাস্তা তৈরির কাজেও ব্যবহৃত জিনিসও।
পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “গত বছরের থেকে এই বছর মেলা শেষে সাফাই ভাল হয়েছে। বর্জ্যকে ফের ব্যবহারযোগ্য করে গড়ে তুলতে পারলে তো ভালই। তবে বাবুঘাট এলাকায় এখনও আবর্জনা জমে রয়েছে।”
সাগরের বিডিও কানাইয়াকুমার রায় বলেন, “মেলা চত্বর সাফ করে চুন, ব্লিচিং ছড়ানো হয়েছে। সামনে মাঘী পূর্ণিমা। সেই উপলক্ষে সুন্দর করে সাজানো হবে। এ ছাড়া, সাগরে কেউ যাতে প্লাস্টিক নিয়ে প্রবেশ না করতে পারে, সেই ব্যবস্থা করা হবে খুব তাড়াতাড়ি।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)