বধূকে শ্বাসরোধ করে খুনের পরে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দেহ ফেলে পালানোর অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযুক্ত ফারুক মণ্ডলকে কাছাকাছি এলাকা থেকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। শুক্রবার তাকে বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, মৃতার নাম সাবিনা ইয়াসমিন (২৫)। বাড়ি বসিরহাটের খিদিরপুর গ্রামে। বসিরহাটের পশ্চিম দণ্ডিরহাটের ফারুকের সঙ্গে বছর পাঁচেক আগে বিয়ে হয়েছিল সাবিনার। সাবিনার এটি দ্বিতীয় বিবাহ। দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়ে দক্ষিণ বাগুন্ডি গ্রামের এক যুবকের সঙ্গে সাবিনার বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের এক সন্তানও হয়। পরে ওই তরুণী গাড়ি চালক ফারুকের প্রেমে পড়েন। তাঁদের এক কন্যাসন্তান।
সাবিনার পরিবারের দাবি, পুরনো বিয়ের কথা তুলে সাবিনাকে মারধর করত ফারুক। বিয়েতে যৌতুক বাবদ নগদ টাকা এবং জিনিসপত্র দেওয়া সত্ত্বেও বাড়ি থেকে আরও টাকা আনতে বলত। এই ঘটনা নিয়ে গ্রাম্য ভাবে একাধিকবার সালিশি হলেও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। বরং মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে স্ত্রীর উপরে অত্যাচারের মাত্রা বাড়ায় ফারুক।
পুলিশ জানায়, ফারুক দাবি করেছে, বৃহস্পতিবার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে বচসা বাধায় দু’জন আলাদা ঘরে শুয়েছিলেন। রাত ২টো নাগাদ শব্দ শুনে ফারুক উঠে দেখেন, পাশের ঘরে গলায় গামছা দিয়ে ঝুলছেন স্ত্রী। দ্রুত তাঁকে নামিয়ে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা সাবিনাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। দেহটি জরুরি বিভাগের সামনে ফেলে ফারুক, তার মা ফরিদা বেওয়া এবং ভাই সাজিদ মণ্ডল পালায়। ফারুক দাবি করেছে, স্ত্রীর দেহ ফেলে সে পালায়নি। লোকজন ডাকতে গিয়েছিল।
বসিরহাট থানা চত্বরে দাঁড়িয়ে ফারুক বলে, ‘‘ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম। আজও ভালবাসি। আসলে মেয়েটা জেদি। কাজ থেকে ফিরতে প্রায়ই রাত হতো। তা নিয়ে ঝামেলা করত। আমাদের হাতাহাতি হলেও খুন করেনি। ও আত্মহত্যাই করেছে।’’ মৃতের দাদা কামারুজ্জমান গাজি বলেন, ‘‘শুক্রবার ভোরে ফারুক ফোনে জানায়, বোন নাকি গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি, গলা-সহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নখের দাগ। সন্দেহ হওয়ায় ফারুককে ধরা হয়। তার মুখে ও পিঠেও একই রকম দাগ ছিল। আমাদের সন্দেহ, বোনকে শ্বাসরোধ করে খুন করার সময়ে বাঁচার জন্য চেষ্টা করলে বোনের নখে ফারুকের মুখ, পিঠে কেটে যায়।’’
পুলিশ জানায়, ফারুকের মা এবং ভাইয়ের খোঁজে তল্লাশি চলছে। তবে ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা তা নিশ্চিত করে বলার জন্য ময়না-তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy