Advertisement
E-Paper

বড় কোটাল নিয়ে দুশ্চিন্তা

১০ এপ্রিলের জলোচ্ছ্বাস হওয়ার কথা। সেই আশঙ্কায় ঘুম ছুটেছে কাকদ্বীপ মহকুমার ভাঙন কবলিত এলাকাগুলির। বছরের বড় কোটালগুলির মধ্যে এটি একটি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। অবিলম্বে নদীবাঁধ মেরামতির আশু প্রয়োজন থাকলেও তা অনেক জায়গাতেই এখনও শুরু হয়নি।

শান্তশ্রী মজুমদার

শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৭ ০১:৩৬

১০ এপ্রিলের জলোচ্ছ্বাস হওয়ার কথা। সেই আশঙ্কায় ঘুম ছুটেছে কাকদ্বীপ মহকুমার ভাঙন কবলিত এলাকাগুলির।

বছরের বড় কোটালগুলির মধ্যে এটি একটি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। অবিলম্বে নদীবাঁধ মেরামতির আশু প্রয়োজন থাকলেও তা অনেক জায়গাতেই এখনও শুরু হয়নি। সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অর্থবর্ষ শেষ হওয়ার ফলে পদ্ধতিগত কিছু সমস্যা ছিল। এই কোটালে অস্থায়ী বাঁধ মেরামতির কাজ হবে। তাঁর কথায়, ‘‘এপ্রিল থেকেই নামখানা-সহ কাকদ্বীপ মহকুমায় বিভিন্ন জায়গায় স্থায়ী বাঁধের নির্মাণ প্রক্রিয়া শুরু করে দেবে সেচ দফতর।’’

ভাঙন কবলিত ব্লকগুলির মধ্যে নামখানা, পাথরপ্রতিমা এবং কাকদ্বীপের বেশ কিছুটা অংশ রয়েছে। নামখানার মৌসুনি পঞ্চায়েতের চারটি মৌজায় প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে নদীবাঁধের কোনও অস্তিস্ত্বই নেই। মৌসুনির বিরোধী দলনেতা মহম্মদ ইলিয়াসের কথায়, ‘‘বালিয়াড়ার খুব খারাপ অবস্থা। কয়েকশো একর চাষের জমি জলের তলায়।’’ প্রায় ৭৫০ মিটার এলাকা কংক্রিট বাঁধ তৈরির কথা থাকলেও তাতে কাজ শুরু হয়নি।

নামখানায় ভাঙনের জন্য জমি চেয়েও পাচ্ছে না সরকার। সেচ দফতর থেকে জানা গিয়েছে, নামখানা পঞ্চায়েতের উত্তর নারায়ণগঞ্জে বাঁধের অবস্থা ভাল নয়। প্রায় দেড় হাজার মিটার এলাকায় বাঁধে জোড়াতালি দেওয়া কাজ হয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবি। গত কোটালে জল ঢুকেছিল। সামনের কোটালেও এই এলাকা ডোবার আশঙ্কা। রানিরঘেরি থেকে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নদী পর্যন্ত প্রায় ১১০০ মিটার এলাকায় কাজের টেন্ডার করেও জমি পাচ্ছে না সেচ দফতর।

স্থানীয় বাসিন্দা চিত্ত ধারার কথায়, ‘‘আমাদের প্রায় ১৭ বিঘে জমি গিয়েছে। বার বার অস্থায়ী কাজের জন্য জমি দিচ্ছি, পরের বছর তা ভেঙে জল ঢুকছে। স্থায়ী কাজ না হলে আর জমি দিতে পারব না।’’ নদীবাঁধের অবস্থা খারাপ মদনগঞ্জের উত্তর এবং পূর্ব দিকেও। শিবরামপুর পঞ্চায়েতের দক্ষিণ দুর্গাপুরে, পাতিবুনিয়ার দক্ষিণে।

কাকদ্বীপের নারায়ণপুরের ঈশ্বরীপুর এলাকা থেকে গত কোটালেও স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ দূরত্বে সরাতে হয়েছিল। এখানে বাঁধের অবস্থা খারাপ প্রায় ৭০০ কিলোমিটার জুড়ে। প্রশাসনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এখানেও একই দাবি। স্থায়ী বাঁধ না হলে জায়গা দিতে চাইছেন না সাধারণ মানুষ। বুধাখালি এলাকাতেও বাঁধের অবস্থা ভাল নয়। প্রায় চার বছর ধরে কাকদ্বীপ রিফিউজি কলোনিতে একটি স্লুইস গেটের জন্য প্রায় চারটি গ্রাম কোটালের সময়ে জলমগ্ন হচ্ছে জোয়ারের জলে। এ জন্য সুন্দরবন উন্নয়ন দফতর থেকে ২৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দও হয়েছিল গত বছর। কিন্তু কাজ শুরু হয়নি। পাথরপ্রতিমার রামগঙ্গার ভারাতলার কাছে ৫০০ মিটার বাঁধের অবস্থা খুবই খারাপ বলে জানা গেল স্থানীয় সূত্রে। ব্রজবল্লভপুরে জিআইটি স্লুইসগেটের কাছে ৩০০ মিটার বাঁধ খারাপ। লক্ষ্ণীজনার্দন‌পুরে শিবুয়া জেটি থেকে অরবিন্দ শাসমলের বাড়ি পর্যন্ত ৫০০ মিটার বাঁধের ক্ষেত্রে জোয়ার হলেই আশঙ্কায় থাকেন মানুষ।

কিন্তু এ সব জায়গায় আসন্ন কোটালের আগে কাজ করে ওঠা প্রায় অসম্ভব বলে জানাচ্ছে সেচ দফতরের একটি সূত্র। বনশ্যামনগর পঞ্চায়েতে তেঁতুল তলা থেকে মুসলিম পাড়া পর্যন্ত প্রায় ৪০০ মিটার বাঁধ একেবারেই খারাপ থাকায় এখানে কাজ শুরু হয়েছে। সেচ দফতরের কর্তারা অবশ্য দাবি করেছেন, কাজ চলছে, চিন্তার কিছু নেই।

Kakdwip Flow tide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy