ছবি রয়টার্স।
পৃথিবীর বেশ কিছু দেশে ইতিমধ্যেই করোনার টিকা দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। ভারতে এই টিকাকরণ প্রক্রিয়া কবে থেকে শুরু হবে, তা এখনও নিশ্চিত ভাবে জানা না গেলেও এর জন্য করোনা-যোদ্ধা পুলিশকর্মীদের নামের তালিকা তৈরির কাজ শুরু করল লালবাজার।
কলকাতা পুলিশ সূত্রের খবর, সম্প্রতি পুলিশকর্মীদের নামের তালিকা এবং তাঁদের সম্পর্কে বিশদ বিবরণ চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাহিনীতে যত পুলিশকর্মী রয়েছেন, তাঁদের নাম-ঠিকানা, জন্মের তারিখ-সহ তিনি কোন থানায় কর্মরত— সব কিছুই জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রত্যেক করোন-যোদ্ধা পুলিশকর্মীকে তাঁর সচিত্র পরিচয়পত্রও ওই তালিকার সঙ্গে পাঠানোর কথা বলেছে কেন্দ্র। ভবিষ্যতে ভারতের বাজারে করোনার টিকা এলে নামের তালিকা ধরে ধরে যাতে পুলিশকর্মীদের ওই টিকা দেওয়া যায়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা বলে জানাচ্ছেন এক পুলিশ অফিসার। কোনও পুলিশকর্মী সম্পর্কে সব রকম প্রয়োজনীয় তথ্য ওই তালিকায় থাকার ফলে দ্রুত ওই টিকাকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে বলেও জানাচ্ছেন তিনি। বাহিনীর আধিকারিকদের একাংশ আবার মনে করছেন, রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে পুলিশকর্মীদের ওই করোনার টিকা দেওয়ার কাজ শেষ হলে বাহিনীর সদস্যেরা বিশেষ উপকৃত হবেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি সপ্তাহে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে ওই বিবরণ লেখার জন্য একটি নির্দিষ্ট ফর্ম নবান্নে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তা লালবাজারের হাত ঘুরে পৌঁছে যায় প্রতিটি ইউনিট, অর্থাৎ থানা, ট্র্যাফিক গার্ড থেকে ব্যাটালিয়ন, ইবি এবং এসবিতে। আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যকে ওই ফর্ম পূরণ করে লালবাজারে ফেরত পাঠাতে বলা হয়েছে। বুধবার থেকেই ইউনিটগুলি সেখানে কর্মরত বাহিনীর সদস্যদের কাছে ওই ফর্ম পাঠিয়ে দিয়েছে।
পুলিশ আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, লালবাজারের পাঠানো ওই ফর্মের সঙ্গে ২০০ পাতার একটি নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে, যাতে টিকা নেওয়ার আগে কী করতে হবে বা কী ভাবে টিকা নিতে হবে— সে সম্পর্কে বিশদে লেখা রয়েছে। এ ছাড়া টিকা নেওয়ার পরে করোনা-যোদ্ধাদের কী কী সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত, সে কথাও লেখা রয়েছে ওই নির্দেশিকায়।
লালবাজার সূত্রের খবর, করোনাভাইরাসকে রুখতে গত মার্চ মাস থেকেই সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করে চলেছেন পুলিশকর্মীরা। লকডাউনের সময়ে বাজার বন্ধ করা থেকে শুরু করে করোনা রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া— সব কাজই করেছেন তাঁরা। আর তা করতে গিয়েই সংক্রমিত হয়েছেন বাহিনীর বহু সদস্য। বুধবার পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ বাহিনীতে মোট সংক্রমিতের সংখ্যা ৩৩৮২ জন, আর করোনায় মৃতের সংখ্যা ২০। করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বাহিনীর ২৮ জন সদস্য।
নিচুতলার পুলিশকর্মীদের একাংশের মতে, রাজনৈতিক মিছিল থেকে শুরু করে উৎসব— সবেতেই রাস্তায় নেমে কাজ করতে হচ্ছে তাঁদের। ফলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে। তাই সব ব্যবস্থা নেওয়া হলেও সংক্রমণের হাত থেকে তাঁরা নিস্তার পাচ্ছেন না। এক পুলিশকর্মীর কথায়, ‘‘সংক্রমণ থেকে মুক্তি পাওয়ার পরেও শরীরে বিভিন্ন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। তাই দ্রুত ওই টিকা পেলে বাহিনীর নিচুতলার সদস্যেরা সুরক্ষিত থাকবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy