Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Hasnabad

খাবারের দাবি নিয়ে পথে মানুষ

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসনাবাদ ব্লকের মাখালগাছা পঞ্চায়েতটি তৃণমূল পরিচালিত। ওই পঞ্চায়েতের মুড়োগাছা গ্রামে দাসপাড়া অত্যন্ত দরিদ্র এলাকা।

দাবি: খাবার চান এঁরা। ছবি: নির্মল বসু

দাবি: খাবার চান এঁরা। ছবি: নির্মল বসু

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

খাবারের দাবিতে হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে, টায়ার জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন হাসনাবাদ ব্লকের মুড়োগাছা গ্রামের মানুষ। বুধবার সকালে এই পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। জনতাকে শান্ত করতে জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ গিয়ে চালের ব্যবস্থা করেন।

পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসনাবাদ ব্লকের মাখালগাছা পঞ্চায়েতটি তৃণমূল পরিচালিত। ওই পঞ্চায়েতের মুড়োগাছা গ্রামে দাসপাড়া অত্যন্ত দরিদ্র এলাকা। বেশির ভাগ মানুষ পরিচারিকা, ভ্যান চালানো, ঢাক-ঢোল বাজানো এবং জুতো সেলাইয়ের কাজ করে কোনও রকমে জীবনযাপন করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিনামূল্যে চাল, আটা দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেও লকডাউনের পরে থেকে আজ পর্যন্ত তাঁরা সেই ত্রাণ পাননি। এমনকী, দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের কাছে আবেদন করা সত্ত্বেও তাঁরা রেশন কার্ড পাননি বলে অভিযোগ। ঘরে যতটুকু খাবার ছিল সব শেষ। কার্যত না খেয়েই দিন কাটছে তাঁদের। তাই পথ অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান ওই গ্রামের মানুষ।

এ বিষয়ে হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মুড়োগাছা গ্রামের দাসপাড়ায় ৬৯ জনের রেশন কার্ড এবং কুপন নেই জানতে পেরে ৫ কুইন্টাল চাল পাঠানো হয়েছে।’’

এ দিন সকাল ৮টা নাগাদ টাকি-ভেবিয়া চৌমাথা যাওয়ার রাস্তার উপরে খাবারের দাবিতে পোস্টার হাতে টায়ার জ্বালিয়ে মুড়োগাছা গ্রামের শিশু-মহিলারা বিক্ষোভ শুরু করেন। রাস্তা আটকাতে গাছের বাঁশ এবং গুঁড়ি ফেলা হয়। বেলা ১১টা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। পরে পুলিশ এবং হাসনাবাদের ভবানীপুরের বাসিন্দা তথা জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজি ঘটনাস্থলে যান।

এলাকার বাসিন্দা তরুণ দাস বলেন, ‘‘লকডাউন চলছে। কাজকর্ম সব বন্ধ। কোনও রকম সরকারি সাহায্য মিলছে না। এ ভাবে না খেতে পেয়ে মরতে হবে। তাই আমরা পথ অবরোধ করতে বাধ্য হয়েছি।’’ একই বক্তব্য শঙ্কর দাস, চন্দ্রা দাস, কাকলি দাস ও শ্যামলী দাসের। ফিরোজ বলেন, ‘‘লকডাউনের সময়ে এই সমস্ত মানুষের খাবার পাওয়ার কথা। কিন্তু তাঁরা পাননি। আমরা তাঁদের বুঝিয়ে এবং প্রাথমিক ভাবে ৮ কুইন্টাল চাল এবং শিশুদের জন্য দুধের ব্যবস্থা করে দিয়ে ঘরে পাঠিয়েছি। পরেও এখানকার মানুষের পাশে থাকব।’’

লকডাউন পরিস্থিতিতে দিনমজুরি খেতমজুরি করা মানুষের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রুজিরোজগার বন্ধ হওয়ায় ভাঁড়ারে খাদ্য সামগ্রীর টান পড়তে শুরু করেছে। অভিযোগ, পুরসভার তরফে কোনও ত্রাণের ব্যবস্থা করা হয়নি। ঘটনাটি অশোকনগর-কল্যাণগড় পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের। বৃহস্পতিবার ওই ওয়ার্ডের আদর্শপল্লি এলাকার মহিলারা জোটবদ্ধ হয়ে কাউন্সিলরের বাড়িতে গিয়ে ত্রাণের দাবিতে ক্ষোভ জানান। এরপরে মহিলারা যান পুরসভায়। সেখানে তাঁদের একটি প্রতিনিধি দল পুরপ্রধান প্রবোধ সরকারের কাছে ত্রাণের দাবি জানান।

পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস বলেন, ‘‘২২ নম্বর ওয়ার্ড সহ পুরসভার কোথাও এখনও পুরসভার তরফে খাদ্যসামগ্রী বিলি করা হয়নি। পুর কর্তৃপক্ষের কাছে খাবার দেওয়ার দাবি করেছি।’’ পুরপ্রধানের অবশ্য দাবি, মানুষ রেশন থেকে খাদ্যসামগ্রী পাচ্ছেন। আদর্শপল্লি এলাকার লোকজনকে বলা হয়েছে, কারা অসুবিধার মধ্যে রয়েছেন, সেই নামের তালিকা তৈরি করতে। পুরসভা থেকে ত্রাণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Hasnabad Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE