Advertisement
E-Paper

অর্জুনের হাতে থাকা ক্লাব দখলমুক্ত করল তৃণমূল

ভাটপাড়ার আতপুরের জাগৃতি নাট্য সংস্থা জেলার অন্যতম পুরনো নাট্যচর্চার ক্লাব। সেই সংস্থার সম্পাদক তরুণ পাল জানান, ১৯৭৮ সালে সংস্থা একটি ক্লাবঘর তৈরি করে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪২
দখলমুক্ত: হাত বদল হচ্ছে চাবি। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

দখলমুক্ত: হাত বদল হচ্ছে চাবি। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

বছর তিনেক আগে উত্তর ২৪ পরগনার অন্যতম পুরনো একটি নাট্যচর্চার ক্লাব বেদখল হয়ে গিয়েছিল। অভিযোগের তির ছিল, ভাটপাড়ার বাহুবলী তৃণমূল বিধায়ক অর্জুন সিংহের বিরুদ্ধে। অর্জুন এখন বিজেপিতে। বুধবার সেই ক্লাব দখলমুক্ত করে ক্লাবের কর্তাদের হাতে চাবি তুলে দিলেন তৃণমূলের নেতারাই।

ভাটপাড়ার আতপুরের জাগৃতি নাট্য সংস্থা জেলার অন্যতম পুরনো নাট্যচর্চার ক্লাব। সেই সংস্থার সম্পাদক তরুণ পাল জানান, ১৯৭৮ সালে সংস্থা একটি ক্লাবঘর তৈরি করে। সেখানেই চলত নাট্যচর্চা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরে ক্লাবঘরটি দোতলা হয়। তরুণবাবু বলেন, ‘‘আমি বামপন্থায় বিশ্বাসী। কিন্তু ক্লাবে রাজনীতির কোনও জায়গা নেই। এখানে সব রাজনৈতিক দলের সমর্থকই রয়েছেন। এ নিয়ে কখনও কোনও সমস্যা হয়নি।’’ সমস্যা হল ২০১৬ সালে। ক্লাবের সদস্যদের অভিযোগ, ‘‘ওই বছর মে মাসে বিধানসভা ভোটের সময়ে অর্জুন সিংহ ও তাঁর সঙ্গীরা এসে আমাদের ক্লাব ছেড়ে দিতে বলেন। ওই সময় অর্জুন বলেছিলেন, ওসব নাটক-ফাটক বুঝি না। ভোট এবং দলের প্রয়োজনে ঘরটা দরকার।’’ প্রথমে রাজি হননি ক্লাবের সদস্যেরা। অভিযোগ, কয়েকদিন পরে এক দুপুরে তালা ভেঙে ঘরে ঢুকে ক্লাবের দখল নেয় অর্জুনের দলবল।

সদস্যরা জানিয়েছেন, এর পর থেকে একাধিকবার অর্জুনের কাছে দরবার করেও ক্লাবের চাবি ফেরত পাননি তাঁরা। তরুণবাবু বলেন, ‘‘আমরা যতবারই অর্জুন সিংহের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি, ততবারই উনি এটা-ওটা বলে কাটিয়ে দিয়েছেন। শেষে উনি বলেছিলেন, তাঁর দলের ২০০ জনকে ক্লাবের সদস্য করতে হবে। আমরা তাতে রাজি হইনি। ফলে চাবিও আর ফেরত পাইনি।’’ ক্লাবের সদস্যদের অভিযোগ, নিজের ২০০ ছেলেকে সদস্য করে ওই ক্লাবটি স্থায়ীভাবে দখলের পরিকল্পনা করেছিলেন অর্জুন।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

এই ঘটনার পরে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছিলেন সংস্থার কর্তারা। ক্লাবের সদস্যদের দাবি, বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয় তৃণমূলের এক সাংসদকে। কিন্তু ক্লাবঘরটি আর ফেরত পাননি সদস্যরা।

গত সপ্তাহে বিজেপিতে যোগ দিয়ে অর্জুন তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে ইতি টেনেছেন। তার পরেই নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে দেখা করেন সংস্থার সদস্যেরা। তাঁরই উদ্যোগেই এ দিন পুরনো তালা ভেঙে নতুন চাবি হস্তান্তর করা হয়। সংস্থার কর্তাদের হাতে চাবি তুলে দেন ব্যারাকপুরের তৃণমূল প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী। অর্জুন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘দলের নীতি মানতেন না তিনি। শুধু ক্লাব দখল নয়, এখানকার সংস্কৃতিই বেদখল হয়েছিল। এটা মুখ্যমন্ত্রীর নীতি নয়।’’ তবে ক্লাবে দখল নিয়ে এ দিন দুপুরেও গোলমাল হয়। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সত্যেন রায় বলেন, ‘‘দুপুরে আমরা যখন ক্লাব দখলমুক্ত করতে আসছিলাম, তখন অর্জুনের ভাইপো সৌরভ দলবল আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর চড়াও হয়।’’ জগদ্দল থানার পুলিশ জানিয়েছে, তারা এই অভিযোগের তদন্ত করছে।

এ ব্যাপারে অর্জুন বলেন, ‘‘কে কী অভিযোগ করছে জানি না। আমি যতদূর জানি, ওই ক্লাব তৃণমূল দখল করেছিল। আর অভিযোগ আমার সব আত্মীয়ের বিরুদ্ধেই করছে। এটাই ওদের রাজনৈতিক লড়াই!’’

Lok Sabha Election 2019 TMC BJP Club Arjun Singh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy