Advertisement
E-Paper

ভাটার সময় হওয়ায় রক্ষা পেল নদীবাঁধ

কিন্তু কীভাবে রক্ষা পেল নদীবাঁধগুলি? স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এবার ঝড়ের সময় নদীতে ভাটা চলছিল। এটাই নদীবাঁধের ক্ষতি না হওয়ার অন্যতম কারণ।

প্রসেনজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০২:২৩
জোয়ারের জল না আসায় বেঁচে গেল গোসাবা।

জোয়ারের জল না আসায় বেঁচে গেল গোসাবা।

বুলবুলের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা। ভেঙে পড়েছে প্রচুর গাছপালা, ঘরবাড়ি। বিপুল ক্ষতি হয়েছে চাষের। কিন্তু বছর দশেক আগে আয়লার সময় নদীবাঁধ ভেঙে যেভাবে ভেসে গিয়েছিল গ্রামের পর গ্রাম, তেমনটা এ বার দেখা যায়নি। কিন্তু বেঁচে গিয়েছে সুন্দরবনের নদীবাঁধগুলি। স্থানীয়রা বলছেন নদীবাঁধ না ভাঙায়, আয়লার মতো অতটা ভয়াবহ হয়ে ওঠেনি বুলবুল। ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো গিয়েছে অনেকটাই।

কিন্তু কীভাবে রক্ষা পেল নদীবাঁধগুলি? স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এবার ঝড়ের সময় নদীতে ভাটা চলছিল। এটাই নদীবাঁধের ক্ষতি না হওয়ার অন্যতম কারণ। ভাটা থাকায় সেভাবে জলোচ্ছ্বাস দেখা যায়নি মাতলা, বিদ্যাধরী-সহ অন্য নদীগুলিতে। আর জলোচ্ছ্বাস না থাকায় নদীবাঁধের উপর ঝড়ের প্রভাব সেভাবে পড়েনি। তবে দু’একটি জায়গায় সামান্য ধস নেমেছে। এলাকাবাসীদের দাবি, জোয়ারের সময় এই ঝড় হত, তাহলে নদীবাঁধগুলিকে বাঁচানো যেতো না। ভয়াবহতা হয়তো হার মানাতো আয়লাকেও।

গোসাবার বিধায়ক জয়ন্ত নস্কর বলেন, “ঝড়ের তাণ্ডবে গোসাবা ব্লকে দু’হাজারের বেশি বাড়ি পুরোপুরি ভেঙে পড়ছে। আংশিক ক্ষতি হয়েছে সাত হাজারের বেশি বাড়ির। হাজার হাজার বড় গাছ উপরে পড়েছে। যদি জোয়ারের সময় এই ঝড় হতো, সুন্দরবনের এই দ্বীপগুলিকে রক্ষা করা যেতো না।’’

ঝড়খালির বাসিন্দা বিধান বায়েন গোসাবার কৈলাস বিশ্বাস, কুমিরমারি গ্রামের রঞ্জন মণ্ডলরা বলেন, “আয়লা দিনের বেলায় হয়েছিল। তাতেই প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল। আর বুলবুল এল রাতে। সেই সময় যদি নদীতে জোয়ার থাকতো তাহলে নদীর বাঁধ ভাঙতোই। আর বাঁধ ভাঙলে এবার ক্ষতির পরিমাণ আয়লাকেও ছাপিয়ে যেত।’’ গোসাবার বিডিও সৌরভ মিত্রও বলেন, “সুন্দরবনের নদীবাঁধের অবস্থাও বেশ কিছু জায়গায় খারাপ। অমাবস্যা ও পূর্ণিমার ভরা কোটালেই অনেক সময় বাঁধে ধস নামে। এই ঘূর্ণিঝড় যদি জোয়ারের সময় আসতো তাহলে হয়তো অনেক বেশি ক্ষতি হতো।’’ আয়লার পর সুন্দরবনের নদীবাঁধ মেরামতের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে ৫০৩২ কোটি টাকা পেয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার। কিন্তু তার কিছুদিনের মধ্যেই রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তন হয়। বামেদের অভিযোগ, সেই টাকার বেশিরভাগটাই কাজ না হওয়ায় ফেরত চলে গিয়েছে। প্রাক্তন সেচমন্ত্রী সুভাষ নস্কর বলেন, “সুন্দরবনবাসীরা সৌভাগ্যবান, তাই এবারও বড়সড় বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়ে গেলাম। আসলে আয়লার পর সেভাবে নদীবাঁধ মেরামতই হয়নি। বেশিরভাগ জায়গাতেই তৈরি হয়নি কংক্রিটের বাঁধ। কেন্দ্রের কাছ থেকে যে টাকা আমরা এনেছিলাম, তার বেশিরভাগটাই ফেরত চলে গিয়েছে কাজ না হওয়ায়। এর জন্য না ভবিষ্যতে আমাদের মূল্য চোকাতে হয়।”

Gosaba Bulbul Cyclone Bulbul
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy