গুলিবিদ্ধ আব্দুল হাসান মোল্লা
তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থামাতে দলের রাজ্য সভাপতি সম্প্রতি বাসন্তীর যুযুধান দুই গোষ্ঠীর নেতাদের ডেকে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন। জানিয়েছিলেন, তিন মাস দেখা হবে। তারপরে ‘প্রয়োজনীয়’ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন যে হয়নি, তার প্রমাণ মিলল সোমবার রাতে। গুলি করে খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতাকে। যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে দফায় দফায় পথ অবরোধ হয়। অভিযুক্তের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, বাসন্তীর শিমুলতলার যুব তৃণমূল নেতা আব্দুল হাসান মোল্লাকে জখম অবস্থায় ক্যানিং হাসপাতাল থেকে এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাঁর কাঁধে একটি গুলি লেগেছে। অন্য একটি গুলি গলা ছুঁয়ে বেরিয়ে গিয়েছে। বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাজা গাজিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।’’
রাজা তৃণমূলের বাসন্তী ব্লক সভাপতি মন্টু গাজির ছেলে। যদিও মন্টুর দাবি, ‘‘শিমুলতলা এলাকা এখন যুব তৃণমূলের দখলে। সেখানে আমার ছেলে কী করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাকে গুলি করবে? সবটাই চক্রান্ত।’’
যদিও দলের ব্লক যুব সভাপতি আমান লস্করের অভিযোগ, ‘‘এলাকা দখল করতে ওরা (তৃণমূলের বিরোধী গোষ্ঠী) যুব কর্মীদের উপরে আক্রমণ করছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, আব্দুল হাসান মোল্লা দোকানে ওষুধ সরবরাহ করেন। রাজাদের একটি নার্সিংহোম আছে। অভিযোগ, সোমবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ খাওয়ার পরে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গল্প করছিলেন হাসান। নার্সিংহোমে স্যালাইন লাগবে বলে রাজা ও তাঁর এক মামা ইকবাল আহমেদ ওরফে সেন্টু হাসানকে ডাকেন বলে অভিযোগ। বাইরে বের হতেই হাসানকে লক্ষ্য করে দু’টি গুলি করা হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল থেকে সরবেড়িয়া, শিমুলতলা, সোনাখালি, বাসন্তী, শিবগঞ্জ এলাকায় দফায় দফায় বাসন্তী হাইওয়ে, ক্যানিং-বাসন্তী রাস্তা অবরোধ করা হয়। দুপুরে যুব তৃণমূল কর্মীরা আর এক অভিযুক্ত ইকবাল আহমেদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দমকলের একটি ইঞ্জিন গিয়ে আগুন নেভায়। জেলা তৃণমূলের যুব সভাপতি সওকত মোল্লা ঘটনাস্থলে যান। তিনি সকলকে বুঝিয়ে অবরোধ তুলে দেন। কিন্তু তিনি চলে যেতেই ফের নানা জায়গায় দফায় অবরোধ হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়।
এর আগে বাসন্তীতে দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে একাধিক হানাহানির ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশের পরেও কেন কোন্দল থামছে না?
দলেরই একটি সূত্র জানাচ্ছে, এলাকা দখলের লড়াইয়ে ইন্ধন জোগাচ্ছে মেছোভেড়ির কাঁচা টাকার উপরে নিয়ন্ত্রণের লোভ। পাশাপাশি খাস জমির দখল নিয়ে বিক্রি, তোলাবাজির মতো ঘটনাও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বার বার সংঘর্ষের পরিবেশ তৈরি করছে।
দলের জেলা সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘গুলিতে একজন জখম হয়েছে বলে শুনেছি। দলগত ভাবে বিষয়টি দেখা হচ্ছে। পুলিশকে বলব যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy