পানিহাটি পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের আজাদ হিন্দ নগরে শনিবার রাতে দু’হাতের শিরা কাটা অবস্থায় এক গৃহবধূর দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ বাড়ি থেকে ওই বধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম প্রিয়াঙ্কা নাথ সরকার (২৭)। ঘটনার পর থেকে তাঁর স্বামী এবং সন্তানের খোঁজ মিলছে না। এই ঘটনায় মৃতার পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ করা হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে ঘোলা থানার পুলিশ। দেহটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
আজাদ হিন্দ নগরে কয়েক বছর ধরে স্বামী সুকান্ত নাথ ও সাত বছরের সন্তানের সঙ্গে বসবাস করছিলেন প্রিয়াঙ্কা। পুলিশ সূত্রের খবর, শনিবার প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে তাঁর পরিবারের এক সদস্য রাতে আজাদ হিন্দ নগরের বাড়িতে যান। কিন্তু ডাকাডাকি করেও সাড়া মেলেনি। দরজা বাইরে থেকে তালাবন্ধ ছিল। প্রতিবেশীদের সাহায্যে দরজা ভেঙে ঢুকে দেখা যায়, বিছানার নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়।
প্রিয়াঙ্কার পরিবার সূত্রের দাবি, যে অবস্থায় প্রিয়াঙ্কাকে ঘরে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে, তাতে এটি খুনের ঘটনা বলেই তাঁদের অনুমান। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ন’বছর আগে সুকান্তের সঙ্গে প্রিয়াঙ্কার বন্ধুত্ব এবং পরে তাঁদের বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পরে অশান্তি লেগেই থাকত। এমনকি, প্রিয়াঙ্কাকে সন্দেহ করতেন তাঁর স্বামী এবং তাঁকে মারধরও করা হত বলে অভিযোগ। সম্প্রতি প্রিয়াঙ্কা একটি কাজে যোগ দিয়েছিলেন, যা নিয়ে রাতে অশান্তি হয়। তবে এই তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
প্রিয়াঙ্কার পরিবারের একাংশের অভিযোগ, অশান্তির কারণে এক বার প্রিয়াঙ্কা তাঁর মা-বাবার কাছে চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু, তাঁকে বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। পরিজনদের অনুমান এবং সন্দেহ, প্রিয়াঙ্কার এমন পরিণতি এবং তাঁর সন্তানকে না পাওয়ার ঘটনার নেপথ্যে সুকান্তের ভূমিকা থাকতে পারে। পরিবারের তরফে খুনের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না তদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। তবে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, শ্বাসরোধ, দুই হাতে আঘাত এবং তার জন্য বিপুল রক্তক্ষরণের জেরে মৃত্যু হতে পারে। মৃতার স্বামী এবং সন্তানের খোঁজ শুরু করেছে ঘোলা থানার পুলিশ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)