হাসপাতালের মর্গে রাখা দেহ থেকে যুবকের চোখ কি ইঁদুরে খুবলে নিয়েছে? না কি মৃত্যুর পর অস্ত্রোপচার করে তা কেটে নেওয়া হয়েছে? জানতে মঙ্গলবারই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো বারাসত মেডিক্যাল কলেজে বুধবার দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। তার পর দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে। মুখ্যমন্ত্রী ওই পরিবারকে সরকারি চাকরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। বুধবারই বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছে সেই চাকরির নিয়োগপত্র।
ওষুধের দোকানে কাজ করতেন বছর পাঁয়ত্রিশের প্রীতম ঘোষ। রাস্তা পারাপারের সময় গাড়ি চাপা পড়ে মারা যান তিনি। বারাসত মেডিক্যাল কলেজের মর্গে যুবকের দেহ রাখা ছিল। অভিযোগ, মর্গ থেকে তাঁর চোখ চুরি করে নেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগে প্রথমে হাসপাতালের সামনে দীর্ঘ ক্ষণ বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের সদস্যেরা। পরে রাস্তা অবরোধ করা হয়। মঙ্গলবার ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) প্রতিবাদে বনগাঁয় একটি জনসভা ছিল মমতার। সেখান থেকে কলকাতায় ফেরার পথে মৃতের পরিবারের এই বিক্ষোভে তাঁর কনভয় আটকে পড়ে। রাস্তায় অন্তত ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। বিক্ষুব্ধ পরিবারের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েই মমতা বলেছিলেন, ‘‘পরিবার যখন বলছে, নিশ্চয়ই সত্যতা রয়েছে। যদি ঘটনা ঘটে, তবে তদন্ত হবে। পদক্ষেপ করা হবে দোষীর বিরুদ্ধে। দেহের ভিডিয়ো তুলে রাখবে, যাতে তদন্তের সুবিধা হয়। সিসিটিভি ফুটেজও দেখা হবে। অপরাধ যাঁরা করেছে, তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন:
এর পরেই পরিবারের এক জনকে চাকরির আশ্বাস দেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশমতো বুধবার ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বারাসত মেডিক্যাল কলেজের তিন সদস্যের বিশেষজ্ঞদল যুবকের দেহের ময়নাতদন্ত করে। দলে ছিলেন এক জন চক্ষু বিশেষজ্ঞ, এক জন শল্য চিকিৎসক এবং এক জন সহকারী মেডিক্যাল সুপার (এএমএস)। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। তার পর দেহ তুলে দেওয়া হয়েছে পরিবারের হাতে।
বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্য পুলিশের এডিজি (দক্ষিণবঙ্গ) সুপ্রতিম সরকার যুবকের বাড়িতে গিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী তিনি মৃতের মা কৃষ্ণা ঘোষের হাতে ভূমি সংস্কার দফতরে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন।