উত্তর ২৪ পরগনার বারাসত মেডিক্যাল কলেজের সামনে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন দুর্ঘটনায় নিহত এক যুবকের আত্মীয় পরিজনেরা। তাঁদের অভিযোগ, মর্গে ওই যুবকের চোখ চুরি করা হয়েছে। বনগাঁ থেকে কলকাতা ফেরার পথে সেই বিক্ষোভের জেরে প্রায় ১৫ মিনিট আটকে পড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। মৃতের পরিবারকে চাকরি এবং ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ নিয়ে তদন্তের নির্দেশও দেন। তার পরেই যশোহর রোড থেকে অবরোধ সরিয়ে নেয় মৃতের পরিবার। বারাসত মেডিক্যাল কলেজের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, শীঘ্রই এই নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর বিরুদ্ধে বনগাঁয় মঙ্গলবার জনসভা করেন মমতা। তার পরে মিছিল করেন চাঁদপাড়ায়। সড়ক পথে কলকাতা ফেরার সময় বারাসতে বিক্ষোভের মুখে আটকে যায় তাঁর কনভয়। বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন প্রীতম ঘোষ নামে এক যুবকের পরিবার এবং স্বজনেরা। তাঁদের সূত্রেই জানা গিয়েছে, ৩৫ বছরের ওই যুবক ওষুধের দোকানে কাজ করতেন। তিনি রাস্তা পারাপারের সময়ে গাড়ি চাপা পড়ে মারা যান। পরিবারের অভিযোগ, বারাসত মেডিক্যাল কলেজের মর্গে যখন দেহ রাখা ছিল, তখন তাঁর চোখ চুরি করে নেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে প্রথমে হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায় পরিবার। তার পরে তাঁরা রাস্তা অবরোধ করে। তাতেই আটকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সরাসরি বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানায় মৃতের পরিবার। সব শুনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাড়ির লোক যখন বলছেন, তখন নিশ্চয়ই সত্যতা রয়েছে। নিশ্চয়ই ঘটেছে, দেখে নাও (পুলিশ, প্রশাসনকে)। ঘটনা যদি ঘটে, তা হলে তদন্ত হবে। দোষীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’ তিনি নির্দেশ দেন, ‘‘দেহের ভিডিয়ো তুলে রাখবে, যাতে কেসের তদন্তের সুবিধা হয়। সিসিটিভি ফুটেজও দেখা হবে। অপরাধ যাঁরা করেছে, তাঁদের শাস্তি দেওয়া হবে।’’ তার পরেই তিনি মৃতের পরিবারকে চাকরি এবং ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘এই দুর্ঘটনা মর্মান্তিক। চাকরির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি, যাতে মৃতের পরিবারের চলে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর কোটায় চাকরি দিচ্ছি। ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।’’ পুলিশ, প্রশাসনের কর্তাদের মৃতের বাড়ির ঠিকানা লিখে নিতেও বলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
বারাসত মেডিক্যাল কলেজের সুপার তথা সহ-অধ্যক্ষ অভিজিৎ সাহা বলেন, ‘‘মৃতের বাড়ির লোক আসেন। লিখিত অভিযোগ জমা পড়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে তদন্ত কমিটি গড়ব।’’ অভিযোগ, পরিবার দেহ রাখতে নারাজ। এই নিয়ে অভিজিৎ জানান, তদন্ত করতে দেহের প্রয়োজন হবে। দেহ না রাখলে তদন্তে সমস্যা হবে।