Advertisement
E-Paper

পড়ুয়াদের চিঠি পেয়ে চলে আসেন ‘প্রণবজেঠু’

সেই চিঠির ঢেউ নাড়িয়ে দেয় প্রবীণ রাজনীতিকের মন। দিল্লি থেকে সোজা বসিরহাটের সংগ্রামপুর অঞ্চলের শিবহাটি হাইস্কুলে হাজির হন প্রণববাবু।

নির্মল বসু

শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:২১
প্রণব মুখোপাধ্যায়।

প্রণব মুখোপাধ্যায়।

দেশের রাজনীতিতে তত দিনে প্রথম সারিতে তাঁর আসন পাকা হয়ে গিয়েছে। যোজনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান তিনি। এ হেন মানুষটি জানতে পারেন, তাঁকে কাকু, জেঠু বলে সম্বোধন করে প্রচুর চিঠি এসেছে বসিরহাটের গ্রাম থেকে। ছোট ছেলেমেয়ের দল পোস্টকার্ডে চিঠি লিখে আবেদন করেছে, এলাকায় একটা সেতুর ব্যবস্থা যদি করতে পারেন ‘প্রণব জেঠু’। না হলে পড়াশোনাই বন্ধ হওয়ার জোগাড়।

সেই চিঠির ঢেউ নাড়িয়ে দেয় প্রবীণ রাজনীতিকের মন। দিল্লি থেকে সোজা বসিরহাটের সংগ্রামপুর অঞ্চলের শিবহাটি হাইস্কুলে হাজির হন প্রণববাবু। ঘোষণা করেন, বসিরহাটে ইছামতী সেতুর জন্য ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করার কথা। ওজনদার নেতার এমন পদক্ষেপে দ্রুত তৈরি হয় সেই সেতু।

পুরনো সে দিনের কথা ভোলেননি তৎকালীন সেতু কমিটির সহ সভাপতি তথা শিবহাটি হাইস্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক বিভূতিভূষণ সরকার। সেতুর দাবিতে রীতিমতো কমিটি গড়ে সে সময়ে আন্দোলনে নেমেছিলেন বসিরহাটের মানুষ।

বিভূতিভূষণ বলেন, ‘‘আন্দোলনের অঙ্গ হিসাবেই বসিরহাটের তৎকালীন সাংসদ ছিলেন মনোরঞ্জন শূরের সহযোগিতায় শিবহাটি হাইস্কুলের ছেলেমেয়েরা প্রণববাবুকে পোস্টকার্ডে চিঠি লেখে। সে কথা প্রকাশিত হয় সংবাদপত্রে। উনি স্কুলে আসেন। এমনটা যে হতে পারে, আমরা ভাবতেও পারিনি।’’ স্কুলের এক ছাত্রী অনুরূপা দাস অনুষ্ঠানের মাঝে উঠে দাঁড়িয়ে জানিয়েছিল, বসার জায়গায় অভাবে একেক দিন ক্লাস না করেই ফিরে যেতে হয় ছেলেমেয়েদের। তৎক্ষণাৎ ক্লাসঘর তৈরির জন্য আরও ৫ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেছিলেন প্রণব।

স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র উজ্জ্বল সর্দার, মোহন চক্রবর্তীদের কথায়, ‘‘সে দিন স্কুলের অনুষ্ঠানে এসে প্রণববাবুর ঘোষণা শুনে মানুষ আনন্দে ফেটে পড়েছিলেন। আজও সেতুর উপর দিয়ে হেঁটে পার হওয়ার সময়ে মনে পড়ে সে দিনের কথা।’’

মঙ্গলবার সকালে বৃষ্টি মাথায় করেই বসিরহাট কাছাড়িপাড়ায় কংগ্রেসের কার্যালয়ে, শিবহাটি, বাদুড়িয়া, হাড়োয়া-সহ মহকুমার বিভিন্ন প্রান্তে প্রণববাবুকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। বসিরহাট টাউন কংগ্রেসের মহকুমা সভাপতি হিরন্ময় দাস বলেন, ‘‘১৯৭২ সালে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কংগ্রেসের উদ্যোগে কৃষক সন্মেলনে প্রথমবার বসিরহাটে পা রেখেছিলেন প্রণব মুখোপাধ্যায়। শুধু ইছামতীর উপরে সেতুই নয়, তাঁর চেষ্টাতেই ঘোজাডাঙা সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য শুরু হয়েছিল। বহু মানুষের তাতে কর্মসংস্থান হয়।’’ তিনি জানান, বিদেশমন্ত্রী থাকাকালীন নদীর নোনাজল থেকে পানীয় জল তৈরি করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছনোর উদ্যোগ করেছিলেন প্রণব।সর্বভারতীয় রাজনীতির উজ্জ্বল বাঙালি নক্ষত্রের প্রতি এখনও কৃতজ্ঞ বসিরহাটের বহু মানুষ।

Basirhat Pranab Mukherjee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy